Site icon Mati News

কণকণে শীতে শ্যুটিং নিয়ে যা বললেন তারকারা

শীতেও সমানতালে শ্যুটিং চালিয়ে যেতে হয় তারকাদের। এ নিয়ে কারো আছে বিস্তর অভিযোগ, কারো কাছে ব্যাপারই না।

আবুল হায়াত

ঢাকায় তো তেমন শীত লাগে না। ঢাকার বাইরে শীতটা যেমন আগে পড়ে, তেমনি তীব্রতাও বেশি। আমার পরিচালনায় ‘তিন পাগলে হলো মেলা’ ধারাবাহিক নাটকের শুটিংয়ে একটা দৃশ্যের জন্য আগুন, শতাব্দী ওয়াদুদ, সাজু খাদেমকে পানিতে নামতে হবে। ওরা কিছুতেই নামবে না। আমাকে মুখের ওপর ‘না’ও করতে পারে না। তোয়ালেসহ যাবতীয় সামগ্রী দেওয়া হলো। তবু ওদের ভয় কাটে না। পানির কাছে যায়, আবার ফিরে আসে। যেন পুলসিরাত পার হতে হবে! শেষমেশ দৃশ্যটা বাদই দিতে হয়েছে। আসলে শীতকে সব বয়সের মানুষই কম-বেশি সমীহ করে। ঢাকার বাইরে শীতের অনেক দিনেই দেরি করে সূর্য ওঠে, আবার সূর্য অস্তও যায় আগে। এ কারণে দিনের দৃশ্যগুলোর হিসাব মেলানো কষ্টকর। কয়েক বছর আগে একবার আনিসুর রহমান মিলনকে নিয়ে শুটিং করছিলাম পুবাইলে। প্রথম দৃশ্যে পুকরে ডুব দিতে হবে। মিলন পানিতে নামবেই না। পরে ওর বদলে ইউনিটের এক ছেলে পানিতে ডুব দেয়। আর ভেজা শরীর নিয়ে মিলন সিঁড়ি বেয়ে ওঠে।

 

মনে হচ্ছিল বরফ ঢালা হচ্ছে গায়ে

অপু বিশ্বাস

‘প্রেমিক পুরুষ’ ছবির শুটিংয়ে আমরা কক্সবাজার গেলাম। তখন ডিসেম্বরের শেষ। কনকনে শীত, তার ওপর শৈত্যপ্রবাহ চলছিল। আমরা সেখানে পৌঁছেছি বিকেলের দিকে। পরিচালক বললেন ‘আপনার তো বৃষ্টিতে ভেজার দৃশ্য আছে। আমি কিছু মনে করলাম না। বললাম, ঠিক আছে ব্যবস্থা করেন শুটিংয়ের। শৈত্যপ্রবাহের কারণে মনে হচ্ছিল বরফ ছুঁয়ে ছুঁয়ে বাতাস গায়ে এসে বিঁধছে। পরিচালক বললেন, ‘কোনো সমস্যা নেই দিদি। আমরা গরম পানির ব্যবস্থা করব। ’ শুটিং শুরু হলো। পরিচালক অ্যাকশন বলার পর পানি এসে আমার গায়ে পড়ল। মনে হচ্ছিল বরফ ঢালা হচ্ছে গায়ে। পানি হয়তো গরমই ছিল, কিন্তু শৈত্যপ্রবাহে কতক্ষণ আর গরম থাকে! আর শুটিং তো শুটিংই।

 

শীতের সময় মনে হয় গরম ভালো

চঞ্চল চৌধুরী

মাস কাল বিবেচনা করে শুটিং হয় না। দেখা যায়, গরমের সময় স্যুট-টাই পরে শুটিং করতে হচ্ছে, আবার শীতের সময় খালি গায়ে নামতে হচ্ছে পানিতে। তবে গরমের চাইতে শীতের শুটিং কম কষ্টদায়ক। ‘হাড় কিপটে’ নাটকের শুটিংয়ের পুরো সময়ই আমার পোশাক ছিল একটা স্যান্ডো গেঞ্জি আর লুঙ্গি। শীতের সময় এই শুটিং করতে ভালোই কষ্ট হয়েছে।

 

এখন কোনো ঠাণ্ডাই ঠাণ্ডা নয়

বিদ্যা সিনহা মিম

ঢাকার বাইরে কমই শুটিং করেছি। ঢাকায় শীত তেমন পড়ে না। তবে শীতের মজাটা বুঝেছি সুইজারল্যান্ড গিয়ে। ‘ইয়েতি অভিযান’ ছবির শুটিংয়ে সেখানে বেশ কিছুদিন থাকতে হয়েছে। সে কী ঠাণ্ডা! এমন ঠাণ্ডার মুখোমুখি আগে কখনো হইনি। হাত-পায়ে কাঁপুনি ধরে যেত। বরফের ওপর দাঁড়িয়ে শুটিং করতে হয়েছে। আমরা ওখানে তাঁবু টানিয়ে থাকতাম। মাঝে-মধ্যেই সেখানে বরফ ঝড় হতো। তাপমাত্রা সব সময়ই থাকত শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে। ওই ঠাণ্ডায় শুটিং সেরে আসার পর নিজের কাছেই অবিশ্বাস্য মনে হতো। এখন আমার কাছে কোনো ঠাণ্ডাই ঠাণ্ডা নয়।

জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলাম

মৌসুমী হামিদ

‘না মানুষ’ ছবির শুটিং করতে গিয়ে একবার বিপদে পড়েছিলাম। আড়াই ঘণ্টা একটানা পানিতে থাকতে হয়েছিল। পানি থেকে ওঠার পর জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলাম। জ্ঞান ফেরার পর দেখি পরিচালক অনিমেষ আইচসহ সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছেন। তখন ভীষণ লজ্জা পেয়েছিলাম। পানি থেকে উঠতে পারছিলাম না, কারণ পরনে ভেজা কাপড় আর পুকুরের চারপাশে মানুষের ভিড়। সরতে বললেও সরে না। ভাবলাম, একেবারে শুটিং শেষ করে উঠি। সেদিনের কথা মনে এলেই মনে হয় শুটিংয়ে শীতটা খুবই বিড়ম্বনার। তবু আমি বলব, শুটিং করার জন্য গরমের চেয়ে শীতটা অনেক আরামদায়ক।

সূত্র: কালের কণ্ঠ

Exit mobile version