Site icon Mati News

‘আমি নিউক্লিয়ার ফিউশন তৈরি করেছি’

টেলর উইলসন। একজন তরুণ পরমাণু বিজ্ঞানী। মাত্র ১৪ বছর বয়সে নিজের বাড়ির গ্যারেজেই পারমাণবিক চুল্লি তৈরি করে সর্বকনিষ্ঠ নিউক্লিয়ার ডিজাইনারের স্বীকৃতি পান তিনি। এখন তার বয়স ২৮। কাজ করছেন ওষুধ, রসায়ন ও নিউক্লিয়ার নিরাপত্তা নিয়ে। পারমাণবিক ফিউশন বিক্রিয়া সম্পর্কে তার গবেষণা অসংখ্য আন্তর্জাতিক সম্মেলনে মনোনীতও হয়েছে। ২০১২ সালে তিনি কথা বলেছিলেন অনুপ্রেরণাদায়ী জনপ্রিয় শো টেড-টকে। বিশ্বব্যাপী বিজ্ঞানপিপাসু তরুণদের আইডল উইলসনের গবেষণা সম্পর্কে জেনে নিই তার বয়ানেই।

“আমি টেইলর উইলসন। আমার বয়স কিন্তু ১৭ বছর (২০১২)। অবিশ্বাস্য শোনাতে পারে। তবে আমি কিন্তু একজন পরমাণু বিজ্ঞানী। আমি বিশ্বাস করি, সূর্যের পর ভবিষ্যৎ পৃথিবীর শক্তির আধার হতে চলেছে পারমাণবিক নিউক্লিয়ার ফিউশন। আমার মতো তরুণদের হাত ধরেই সেই পরিবর্তনটা আসবে।

আপনারা ভাবতে পারেন আমি কী করে শক্তির এ ভবিষ্যৎ সম্পর্কে নিশ্চিত হলাম। ১৪ বছর বয়সে বাড়ির গ্যারেজে একটি পারমাণবিক চুল্লি বানিয়ে ফেলেছিলাম আমি। তারও দুই বছর আগে অর্থাৎ ১২ বছর বয়সে চুল্লির তৈরির বিষয়টি আমার মাথায় আসে। বসে না থেকে তখনই কাজটি শুরু করার সিদ্ধান্ত নিই।

প্রশ্ন তুলতেই পারেন এ প্রজেক্টের সাফল্য নিয়ে। আমার গবেষণাগারে ফিউশন বিক্রিয়ায় যে পরিমাণ শক্তির জোগান দিতে হয়েছে, তাতে আপাতত একটা সমস্যা। সেখানে যতটা শক্তির জোগান দেওয়া হয়, ততটা পাওয়া যাচ্ছে না। তবে এ ক্ষেত্রে অন্য কিছু বিস্ময়কর সাফল্য আমি পেয়েছি। আমার কাজটি সূর্যের অভ্যন্তরে ঘটে চলা প্রোটনের চেইন বিক্রিয়ার মতোই। আমার চুল্লিতে দুটি ডিউটেরিয়াম অণুর সংঘর্ষ ঘটানো হয়, যেটাকে বলা চলে অতিরিক্ত নিউট্রনযুক্ত হাইড্রোজেন অণু।

এ গবেষণার বিশেষ দিকটি হলো, লাখ লাখ ডলারে বড় যন্ত্রপাতি ছাড়াই পারমাণবিক চুল্লির পরীক্ষা-নিরীক্ষা মাত্র কয়েকশ ডলার খরচ করে গ্যারেজেই করে ফেলা সম্ভব। এ কারণেই গত বছর (২০১১) ইন্টেল আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান ও প্রকৌশল মেলায় পুরস্কৃত হয়েছি আমি। আমার গবেষণা মডেলটি বর্তমানে নেভাদা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে সংরক্ষণ করা হয়েছে।

খুব স্বল্প ব্যয়ে মেডিকেল আইসোটোপ উৎপাদনের যন্ত্র আবিষ্কার করেছি আমি। যন্ত্রটি অল্প পরিমাণে হলেও লাখ লাখ ডলারের গবেষণাগারের মতোই মেডিকেল আইসোটোপ উৎপাদন করতে পারে। মাত্র সাত বছরের প্রচেষ্টায় এমন একটি ফলপ্রসূ গবেষণা করতে পেরেছি যার কারণে কিনা আমি এখন স্বপ্ন দেখি, একটি ছোট্ট বক্সের ভেতরেই আমি বানিয়ে ফেলতে পারব আস্ত একটা নক্ষত্র। আমি প্রেসিডেন্টের (বারাক ওবামা) সঙ্গেও দেখা করেছি এবং এমন সব জিনিস বানিয়েছি, যা দুনিয়া বদলে দিতে পারে এবং আমি বিশ্বাস করি, অন্য তরুণরাও একই কাজ করে দেখাতে পারবে।”

Exit mobile version