Site icon Mati News

ইতিবাচক যে ভাবনাগুলো বদলে দিতে পারে আপনার জীবন

আমাদের জীবনে প্রতিদিন কিছু না কিছু ঘটে। আর সেই ঘটিত ব্যাপারে আমাদের মনের চিন্তা-ভাবনার নানারকম প্রতিক্রিয়া ঘটে। ইতিবাচক চিন্তা হচ্ছে এমন একটি মানসিক ধারণা যার জন্য আমরা প্রতিটি কাজে ভালো এবং সন্তোষজনক ফলাফল আশা করি।‌‌ অন্যভাবে বলতে গেলে, নিজের কঠিন বা প্রতিকূল অবস্থার জন্য আশাহরিত না হয়ে ঠান্ডা মাথায় সেই সমস্যার সমাধান করে নিজের অনুকূলে নিয়ে আসার চেষ্টা করা। লিখেছেন ইসরাত জাহান স্বর্ণা

নেতিবাচক মনোভাব আপনার চিন্তা-ভাবনায় জট পাকালে কোনওদিন ও আপনার জীবনের সমস্যাগুলোর সমাধান হবে না। যেমন- কোনো জিনিসের ক্ষতির জন্য অন্যকে দোষারোপ করা,অন্যের বদনাম করা, মিথ্যে কথা বলে কোনো কথা দমিয়ে রাখা ইত্যাদি ‌। এসব বদ-অভ্যাস আপনার চিন্তা-ভাবনাকে নেতিবাচক করে তোলে।

এতে আপনার আশেপাশের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।পরে তা সমাধান করা কোনোভাবেই সম্ভব হবে না। মনে রাখবেন, জীবনকে সুস্থ,সুন্দর গড়ে তুলতে ইতিবাচক চিন্তা-ভাবনার কোনো বিকল্প নেই।*

 

সময় নিন

যদি নিজের সাথে অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে সেই পরিস্থিতিতে কখনো ঘাবড়ে যাবেন না। নিজেকে সময় দিন,আর পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করুন। তাহলে আপনা-আপনি সেই ঝামেলার সমাধান আপনার কাছে এসে ধরা দিবে।

 

ইতিবাচক মনোভাবসম্পন্ন মানুষের সাথে মেলামেশা করুন

আমাদের আশেপাশে অনেক প্রকারের বা ধরনের মানুষ থাকে। যারা আপনাকে ভালো কাজে উপদেশ ও গঠনমূলক কাজে উৎসাহ দিতে পারে তাদের সাথে চলাফেরা করুন। নেতিবাচক চিন্তার মানুষদের সঙ্গ পরিহার করুন।

 

আত্মবিশ্বাসী হন

নিজের প্রতি যদি বিশ্বাস রাখুন যে আপনি এই কঠিন কাজ করতে পারবেন,তাহলেই অবশ্যই আপনার কাছে সেই কাজ সহজ হয়ে যাবে। যদি অন্যের বলা হতাশিত ফলাফলের কথা শুনে সেটি এড়িয়ে যান তবে এতে আপনার ওই ক্ষতি। কারন, যে আপনাকে না পারার উৎসাহ দিয়েছে,সে অবশ্যই সেটা করার চিন্তা-ভাবনা বা করার চেষ্টা করে নি।তাই বলে আপনি পারবেন না এমন কোনো কথা নেই।

তাই নিজের প্রতি সবসময় বিশ্বাস রাখবেন।তবে কখনো ওভারকনফিডেন্স রাখবেন না নিজের প্রতি। এতে আপনার নেতিবাচক অহংকার চিন্তার সৃষ্টি হবে।

 

অন্যকে সাহায্য করুন

অন্যকে নিজের সাধ্যমতো সাহায্য করুন।এতে আপনার নিজের আত্মতৃপ্তি হবে আর আপনার মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব দৃঢ় হবে।

 

কৃতজ্ঞ থাকুন

আপনার কাছে যা আছে তাই নিয়ে সন্তোষ থাকুন। অনেকের কাছে যা আছে তা হয়তো আপনার কাছে নাও থাকতে পারে।তবে এতে কোনো ক্ষতি নেই। কারন কোনো না কোনো দিক দিয়ে ঠিক একটা কিছুর পূর্ণতা থাকে,যা অনেকের থাকে না। কৃতজ্ঞতা বোধ আপনার মনকে আরো দৃঢ় করবে। Joseph Campbell বলেন-এমন এক স্থান খুঁজে বের করুন যা আপনাকে সুখের অনুভূতি দিবে এবং সুখের অনুভূতিগুলো কষ্টকে দূরে সরিয়ে রাখবে।

 

ইতিবাচক উক্তি পড়ুন

প্রতিদিন অবসরে ইতিবাচক উক্তি পড়ুন এতে আপনার ইতিবাচক মনোভাবের প্রতি ধারনা হবে, মনের ভেতর যে ভয় তাড়া করে সেই ভয়ভীতি দূর হবে। এতেও আপনার ইতিবাচক মনোভাবের কিছুটা উন্নতি হবে।

 

সুন্দর প্রত্যাশা নিয়ে দিন শুরু করুন

প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে বলুন- প্রভু!ধন্যবাদ, একটি নতুন দিন শুরু করার জন্য। দিনের সমাপ্তিটাও ঘটবে তেমনভাবে। কাউকে অভিনন্দন জানান হৃদয়ের আন্তরিকতার সাথে। নিজের সততা নিজের কাছে বজায় রাখুন। কোনোকিছুর প্রতি দায়িত্ব নিতে ভয় পাবেন না,না হলে নতুন কিছু শিখতে পারবেন না।  যেকোনো কাজ নিজ উদ্যমে করুন।

 

সংসারের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব

যদি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সততা বা ভালো সম্পর্ক না থাকে তাহলে তাতে উভয়ের মতের বিরুদ্ধ বা অশান্তি লেগেই থাকে। একজন আরেকজনের প্রতি মিথ্যে বললে এতে ভবিষ্যতে নিজেদের  প্রতি সন্দেহ বাড়ে।এতে একে অপরের প্রতি ভালোবাসার প্রীতি আলোটা নিভে যায়। উত্তেজিত না হয়ে, একজন আরেকজনের সমস্যার কথা আলোচনা করে সেই সমস্যার সমাধান অনায়াসে বের করা যায়। এতে করে উভয়ের প্রতি আস্থা আর বিশ্বাস বাড়বে। ভালোবাসা দৃঢ় হবে। উভয়ের প্রতি কখনো খারাপ আচরণ করবেন না। তেমনি শ্বশুর-শাশুড়ি,ননদ তাদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখবেন। এভাবেই একটা সুন্দর সংসার গড়ে উঠবে।

 

নিজেকে ক্ষমা করতে শিখুন

আমরা অনেক সময় নিজেদের ভুলের জন্য দোষারোপ করি নিজেকে এতে করে কিন্তু নেতিবাচক চিন্তার সৃষ্টি হয়।দোষ না দিয়ে , নিজের করা ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে প্রত্যয় নিন যাতে ভবিষ্যতে এমন ভুল না হয়। আর মানুষ মাত্রই ভুল করে। কোনো কাজ একেবারেই নিখুঁতভাবে সুন্দর হয় না। নিজেকে ক্ষমা করার মধ্য দিয়েও ইতিবাচক মনোভাবের প্রভাব দৃষ্টিমান।

 

ইতিবাচক চিন্তার মানে এই নয় যে, দোষগুলো এড়িয়ে যাবো। পরেরবার এক ভুল তাতে না হয় তার প্রতি সচেতন থাকুন। আর ব্যর্থতাকে সুযোগ হিসেবে নিন। অনেকের কাছে মনে হবে, এইবার এটা হয় নাই তাই সব শেষ। তাহলে আপনি ভুল। আবার প্রথম থেকে শুরু করুন। অবশ্যই সাফল্য আসবে।

নেতিবাচক মনোভাব ও দৃষ্টিভঙ্গি বদলান,তবেই জীবন সুন্দর ও প্রীতিময়ী হবে। ইতিবাচক চিন্তা ভাবনাই আপনার জীবনের সাফল্যের চাবিকাঠি।

Exit mobile version