সিলেটে ঘুরতে যাওয়ার জায়গা : দারুণ সুন্দর পাঁচটি স্থান

বাংলাদেশের ভ্রমণ করার মতো একটি জনপ্রিয় জায়গা হলো সিলেট। সিলেটে ঘুরতে যাওয়ার জায়গা বাছাই করতে গেলে যেন শেষই হবে না। সৌন্দর্যের রাজা বলা হয় সিলেটকে। সিলেট চা বাগানের জন্যেও জনপ্রিয়।

বাংলাদেশের টি-ইন্ডাসট্রিগুলো অধিকাংশ চা  এই সিলেটেই চাষ হয়। তাছাড়া সিলেটে রয়েছে নানা উপজাতির লোক। প্রতিবছর সিলেটের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দর্শন ও উপভোগ করার জন্য মানুষের সমাগম ঘটে। নয়নাভিরাম সৌন্দর্যে ভরপুর সিলেট জেলার আনাচে কানাচে রয়েছে ঘুরতে যাওয়ার অনেক সুন্দর স্থান।

তো আপনারা যারা এখনো সিলেট ঘুরতে যাওয়া হয় নি এবং সিলেটে ঘুরতে যাওয়ার জায়গা সম্পর্কে জানেন না তাদের জন্য পেশ করছি এমন ৫টি স্থান যা জনপ্রিয়তার শীর্ষে আছে।

জাফলং

সিলেটে ঘুরতে যাওয়ার জায়গা শুনলেই আসে জাফলংয়ের নাম। প্রকৃতির কন্যা বলা হয় জাফলং-কে। সিলেটের ভ্রমণে যাবেন;অথচ জাফলং যাবেন না তা কি হয়! খাসিয়া জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত জাফলং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি। পিয়াইন নদীর তীরে স্তরে স্তরে বিছানো পাথরের স্তূপকে করেছে আকর্ষণীয়। সীমান্তের ওপারে ইন্ডিয়ান পাহাড়ি-টিলা,ডাউকি পাহাড় থেকে অবিরাম ভাবে প্রবাহিত হয় জলপ্রপাত, ঝুলন্ত বাকি ব্রীজ, পাহাড়ের গহীন অরণ্য ও শুনশান নিরবতার কারণে এলাকাটি পর্যটকদের দারুনভাবে আকৃষ্ট করে। তাছাড়া, হাজার ফুট উপর থেকে আসা ঝর্ণাধারা যে কারোরই নয়নে আকৃষ্টমান। জাফলং-এ শীত ও বর্ষা মৌসুমে সৌন্দর্যের রুপ ভিন্ন।

বিছানাকান্দি

সিলেটে ঘুরতে যাওয়ার জায়গা গুলোর মধ্যে বিছানাকান্দি অন্যতম। সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার রুস্তমপুর ইউনিয়নে অবস্থিত।জলপাথরের বিছানার অপরুপ সৌন্দর্যের একটি পাথর কোয়ারী। পর্যটকদের কাছে বিছানাকান্দির সবচেয়ে মূল আকর্ষণ হলো পাথরের উপর বয়ে চলা স্বচ্ছ জলধারা এবং পাহাড়ে পাহাড়ে শুভ্র খন্ড মেঘের উড়াউড়ি। প্রথম দর্শনেই আপনার কাছে মনে হবে এ যেন এক স্বচ্ছ পাথরের বিছানা।আর সেই স্বচ্ছ পানিতে পা ভিজিয়ে দিতেই যে মানসিক প্রশান্তি পাবেন,সেই প্রশান্তিই আপনাকে বিছানাকান্দি নিয়ে যাবে বারবার।

পান্থুমাই ঝর্ণা

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত মেঘালয় পাহাড়ে কোল ঘেঁষা একটি অপরুপ গ্ৰামের নাম পান্থুমাই। মেঘালয় পাহাড় আর পিয়াইন নদীর পাড়ে অবস্থিত এই গ্ৰামেই আছে আরেক অপরুপ নিদর্শন পান্থুমাই ঝর্ণা। স্থানীয় মানুষের কাছে এটি পান্থুমাই ঝর্ণা হিসেবে পরিচিত। আবার কেউ একে ফাটাছড়ির ঝর্ণা, কেউবা ডাকেন বড়হিল ঝর্ণা। আবার কারো কাছে এর নাম মায়াবতী।

রাতারগুল

রাতারগুল বাংলাদেশের একমাত্র সোয়াম্প ফরেস্ট যা সিলেট জেলা শহর থেকে প্রায় ২৬ কি.মি দূরে গোয়াইনঘাট উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নে অবস্থিত।৩০,৩২৫ একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত এলাকার ৫০৪ একর জায়গা রয়েছে বন এবং বাকি জায়গা ছোট-বড় জলাশয়ে পরিপূর্ণ। সিলেটে ঘুরতে যাওয়ার জায়গা টি বর্ষায় পুরো অন্যরকম মনে হয়। এই রাতারগুল জলাবন বছরে প্রায় ৪-৫ মাস পানির নিচে তলিয়ে থাকে। অনেক পর্যটক এই রাতারগুল জলাবনকে বাংলাদেশের আমাজন বলে। আর এই রাতারগুল জলাবন পৃথিবীর কয়েকটি জলাবনের মধ্যে অন্যতম।

রাতারগুল বর্ষাকালে ভ্রমণ করার জন্য পর্যটকদের কাছে উত্তম স্থান। আর এই বনে ঘোরার জন্য প্রয়োজন ডিঙ্গি নৌকা। তবে বর্ষায় এবং কোমর পানির মৌসুমে ঘোরার মধ্যে যে পার্থক্য তা এই দুই সময়ে না আসলে বোঝা মুসকিল।

ডিঙ্গিতে চড়ে চোখে পড়বে নানা সৌন্দর্য। আবার কখনো কখনো হঠাৎ করে দেখা মিলতে পারে গাছে পেঁচিয়ে থাকা সাপের। আবার কপাল ভালো থাকলে দেখা মিলতে পারে একদল বানরের সাথে। বুলবুলি, টিয়া, পানকৌড়ির মতো নানান প্রজাতির পাখি আপনার সঙ্গী হয়ে থাকবেই।

 

হযরত শাহজালালের মাজার

সিলেটে ঘুরতে যাওয়ার জায়গা গুলোর মধ্যে হযরত শাহজালালের মাজার অন্যতম। সিলেট সদরেই অবস্থিত। এটি সিলেট শহরের ঠিক মধ্যস্থলে এবং জিরো পয়েন্টের এক কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে। স্থানীয়ভাবে এলাকাটিকে দরগা এলাকা এবং প্রবেশ পথটিকে দরগা গেইট বলে। হযরত শাহজালালের মূল হলো দরগা শরীফ।এটি একটি পবিত্র স্থান। অতএব, ভ্রমণের ক্ষেত্রে দরগার পবিত্রতার দিকে লক্ষ্য রাখবেন।

আরো পড়ুন:  কাশফুল দেখতে যে পাঁচ জেলায় ঘুরতে যেতে পারেন

সিলেটে ঘুরতে যাওয়ার জায়গা নিয়ে লিখেছেন ইসরাত জাহান স্বর্ণা

রাতারগুলসিলেটসিলেটে ঘুরতে যাওয়ার জায়গা