Site icon Mati News

চীনজুড়ে স্মার্ট পরিবহন গড়ছে ফাইভ জি নেটওয়ার্ক

চীনের বড় বড় শহর, কাউন্টি এমনকি প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোও এখন ফাইভ-জি নেটওয়ার্কের আওতায়। দেশটিতে আছে সাড়ে ৩৭ লাখেরও বেশি ফাইভ-জি বেজ স্টেশন। আর শক্তিশালী এ নেটওয়ার্কের সুফল ভোগ করছে দেশটির পরিবহন ব্যবস্থা। বিশেষ করে স্বল্প উচ্চতার আকাশ অর্থনীতিতে স্মার্ট যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক।

চীনের স্বল্প উচ্চতার আকাশে এখন দেদার উড়ছে ভার্টিকেল টেক অফ অ্যান্ড ল্যান্ডিং ড্রোন তথা ভিটিওএল। গতমাসেই এমন একটি ড্রোনকে দেখা গেছে ২০ কেজি ওজনের সামুদ্রিক খাবারের একটি ঝুড়ি নিয়ে চেচিয়াংয়ের চৌশান সিটি থেকে উড়ে গেছে শাংহাইতে।

সমুদ্রের ওপর একশ কিলোমিটারের এ যাত্রায় বিশেষ এ ডেলিভারি ড্রোনকে নির্ভর করতে হয়েছে ফাইভ-জি প্রযুক্তির ওপর।

চায়না মোবাইলের চৌশান শাখার প্রকৌশলী লিউ ইফান জানালেন, ‘ড্রোন রুটে সম্পূর্ণ সিগন্যাল পাওয়ার জন্য কিছু জনবসতিহীন দ্বীপ এবং উপকূলীয় বায়ুকলের প্ল্যাটফর্মে থাকা বাতিঘরগুলোওেত ফাইভ-জি বেজ স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে৷ সিনেস্থেসিয়া নামের প্রযুক্তির মাধ্যমে, ড্রোনের ফ্লাইটের উচ্চতা, গতি এবং অন্যান্য তথ্য তাৎক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা যাচ্ছে। এতে নিশ্চিত করা যাচ্ছে ড্রোনের নিরাপদ ফ্লাইট।’

এতে পরিষ্কার যে ফাইভ-জি প্রযুক্তি দিয়ে যেকোনো দ্বীপে সহজে রসদ পাঠানো থেকে শুরু করে সমুদ্রে জরুরি উদ্ধারকাজও চালানো যাবে।

আবার ভূমিতেও আছে এ ড্রোনের কাজ। সম্প্রতি পূর্ব চীনের চিয়াংসি প্রদেশে চালু হয় স্বয়ংক্রিয় ড্রোন-ভিত্তিক হাইওয়ে পরিদর্শন সিস্টেম।

চিয়াংসির লুশান পর্বতের পাদদেশে স্মার্ট হাইওয়ে ইমার্জেন্সি কমান্ড সেন্টারের কর্মীরা সেখানকার বিভিন্ন অংশের ট্র্যাফিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে ব্যবহার করছেন ক্রুজ ড্রোন।

এখন এ এলাকার পাহাড়ি রাস্তাগুলো বিভিন্ন ফাইভ-জি স্মার্ট যন্ত্রপাতিতে সজ্জিত যা অ্যালার্ম ও রিমাইন্ডার পাঠাতে পারে। কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া কিংবা তুষারে ঢাকা সড়কের তীক্ষ্ণ বাঁকে চলাচল করা যানবাহনগুলোকে সতর্ক সংকেত পাঠাতে পারে এগুলো।

দক্ষিণ-পশ্চিম চীনের ছোংছিং পৌরসভায়, বিশ্বের প্রথম ভূগর্ভস্থ টানেল ফাইভ-জি প্লাস বাইতু স্যাটেলাইট নেভিগেশন সিস্টেমও চালু হয়েছে।

ছোংছিংয়ের পাহাড়ি শহর জটিল ওভারপাস, টানেল এবং ভূগর্ভস্থ রিং রোডের জন্য সুপরিচিত। আগে এখানে অপর্যাপ্ত সিগন্যালের কারণে নেভিগেশনের সংযোগ প্রায়ই বিচ্ছিন্ন হতো।

চায়না মোবাইল কমিউনিকেশনস গ্রুপ ছোংছিং লি. এর পরিবহন শিল্পের পরিচালক চিয়া সি জানালেন, ‘এখন আমরা দেখতে পাই যে আমাদের গাড়ি নির্দিষ্ট লেনে চলছে। প্রচলিত নেভিগেশন অ্যাপে দেখতাম, গাড়িটি একবার বাম এবং একবার ডান লেনে যাচ্ছে। কিন্তু এখন নির্ভুল নেভিগেশন অ্যাপে পরিষ্কার দেখা যায়, আমাদের গাড়িটি নেভিগেশন অনুসরণ করে ডান লেনেই চলছে।’

বেশ ক’বছর ধরে চীন ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক অবকাঠামোয় নেতৃত্ব দিচ্ছে। ২০১৯ সালের ৬ জুন ফাইভ-জি এর বাণিজ্যিক লাইসেন্স ইস্যু করার পর থেকে ডিজিটাল ও বাস্তব প্রয়োগে অসাধারণ ফলাফলও পাওয়া যাচ্ছে। এপ্রিলের শেষ নাগাদ, চীনের প্রতি ১০ হাজার মানুষের জন্য তৈরি হয়েছে ২৬টি করে ফাইভ জি বেস স্টেশন।

Exit mobile version