Site icon Mati News

মুসলিম নারী এমপির সমালোচনায় ৯/১১-র ভিডিও , তোপে ট্রাম্প

মুসলিম নারী এমপির সমালোচনায় ৯/১১-র ভিডিও , তোপে ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সংসদ কংগ্রেস-এর হাউজ অফ রিপ্রেজেন্টেটিভ-এর মুসলিম ডেমোক্র্যাটিক নারী সদস্য ইলহান ওমরের বক্তব্য জড়িয়ে ২০০১ সালের ৯/১১’র টুইন টাওয়ার হামলার একটি ভিডিও টুইট করে তার সমালোচনা করতে গিয়ে তোপের মুখে পড়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

শনিবার তাকে তিরস্কার করেছেন কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি। টুইটারে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘৯/১১ হামলার স্মৃতি জেগে আছে এক পবিত্রতার পটভূমিতে। ওই ঘটনা নিয়ে কোনো রকম কথা বলতে গেলে তা সম্মানের সঙ্গেই বলা চাই। রাজনৈতিক আক্রমণের জন্য ৯/১১ ছবি ব্যবহার করা প্রেসিডেন্টের উচিত নয়।’

শুক্রবার ট্রাম্প বিতর্কিত ওই ভিডিওটি টুইট করেন। এতে তিনি ৯/১১ হামলার একটি ভিডিও’র সঙ্গে মিনেসোটার প্রতিনিধি ইলহান ওমরের গতমাসে দেওয়া একটি বক্তব্য জুড়ে দেন। এ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে ওমর টুইন টাওয়ার হামলাকে খাটো করেছেন বলে ট্রাম্প তার সমালোচনা করেন।

গত ২৩ মার্চ কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশন্স (কাইর) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ইলহান ওমর যুক্তরাষ্ট্রের ইসলাম ভীতি ও নিউ জিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে হামলার নিন্দা জানিয়ে ওই বক্তব্য রেখেছিলেন।

তিনি বলেছিলেন, ‘দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে আমরা দীর্ঘদিন অস্বস্তির সঙ্গে বসবাস করছি এবং খোলাখুলিভাবে বলছি, আমি এতে ক্লান্ত। এ দেশের প্রত্যেকটি মুসলমানেরই এতে বিরক্ত হওয়াই উচিৎ। ৯/১১ এর পর ‘কাইর’ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কারণ, তারা বুঝতে পেরেছিল কিছু লোক কিছু একটা করেছে এবং আমরা প্রত্যেকে আমাদের নাগরিক স্বাধীনতা হারাতে শুরু করেছি।’

ওমরের এই ‘কিছু লোক কিছু একটা করেছে’-মন্তব্যেই আপত্তি জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার দলের রিপাবলিকানরা। ওমর এ ধরনের কথা বলে ৯/১১ এর পরিস্থিতিকে খাটো করেছেন বলেই তাদের অভিযোগ।

শুক্রবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প টুইটারে যে ভিডিও পোস্ট করেন তাতে টুইন টাওয়ার বিধ্বস্তের ছবি আছে। এর সঙ্গে হিজাব পরা ইলহান ওমরের ছবি জুড়ে দিয়ে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘আমরা কখনো ভুলব না।’ এর মধ্য দিয়ে পরোক্ষভাবে ওমরসহ মুসলিমদেরকেই কটাক্ষ করেছেন ট্রাম্প।

আরো পড়ুন : ‘ আন্তর্বাস খাকি ‘ নিয়ে তোলপার ভারতে

প্রেসিডেন্টের টুইটে দেওয়া ওমরের বক্তব্য ঘিরে তার সমালোচনায় সরব হয়েছে রিপাবলিকানদের পাশাপাশি ফক্স নিউজের মতো রক্ষণশীল গণমাধ্যমগুলোও। ওমরকে ‘আমেরিকা-বিদ্বেষী’ বলে মন্তব্য করেছেন রিপাবলিকান ন্যাশনাল কমিটির চেয়ারম্যান রোনা ম্যাকডেনিয়েল।

তবে ওমরের পাশে দাঁড়িয়েছেন ডেমোক্র্যাটরা। তার বক্তব্যকে পরিস্থিতির সঙ্গে সঙ্গতিহীনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেছেন তারা। ওদিকে, ট্রাম্পের সমালোচকরাও বলছেন, তিনি মুসলিম বিদ্বেষ এবং মুসলিমদের বিরুদ্ধে সহিংসতা উস্কে দিতে ওমরের বক্তব্যকে ভিন্নভাবে ব্যবহার করেছেন।

আলোচনা-সমালোচনা জবাব দিতে ছাড়েননি ইলহান ওমরও। শনিবার এক টুইটে ওমর বলেছেন, তাকে চুপ করানো যাবে না। তিনি বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি- সে যতটা দুর্নীতিগ্রস্ত, ক্ষতিকর কিংবা নির্মমই হোক না কেন আমেরিকার প্রতি আমার অবিচল ভালোবাসায় হুমকি হতে পারবে না। সব মার্কিনীর জন্য সুখের সন্ধানে নির্ভীকভাবে সমান সুবিধার জন্য লড়ে যেতেই আমি এখানে আছি।’

সোমালি বংশোদ্ভূত ইলহান ওমর গত নভেম্বরে মিনেসোটা থেকে প্রতিনিধি পরিষদে নির্বাচিত হন। এর মধ্য দিয়ে প্রথম দুই মুসলিম নারীর একজন হিসাবে মার্কিন কংগ্রেসের সদস্য হয়ে এবং হিজাব পরে শপথ নিয়ে ইতিহাস গড়েন তিনি। মুসলিম নারী মুসলিম নারী মুসলিম নারী

 

Exit mobile version