যৌন হেনস্তার বিরুদ্ধে কঠোর ভূমিকায় আইসিসি

#মিটু ঝড়ের প্রভাব এবার ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলেও (আইসিসি) পড়েছে। যৌন হেনস্তা নিয়ে কঠোর ভূমিকা নিতে চলেছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। যৌন হয়রানি সংক্রান্ত বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে উদাহরণ সৃষ্টি করতে চায় তারা। এই লক্ষ্যে ‘সুরক্ষা নীতি এবং নির্দেশিকা’ নামক কঠোর কিছু নিয়ম ও আইন চালু করতে চলেছে আইসিসি।

গত ১৮ মাসে যৌন হেনস্তা কিংবা অশালীন আচরণ নিয়ে আইসিসির কাছে ৯টি অভিযোগ এসেছে। এসব অভিযোগের মধ্যে ঘরোয়া ক্রিকেট ক্লাবে একজন ফিজিওথেরাপিস্টের যৌন হেনস্তার শিকার হওয়া, কোচ কর্তৃক নারী ক্রিকেটারের যৌন হয়রানির শিকার হওয়া, নারী সাংবাদিকদের সঙ্গে অভব্য আচরণ এমনকি খেলোয়াড় কর্তৃক সমর্থকের হয়রানির শিকার হওয়ার মতো ঘটনাও রয়েছে।

এসব অভিযোগই আইসিসির বিভিন্ন ইভেন্টে ঘটেছে বলে বলা হয়েছে। এমতাবস্থায় আগামী ৯ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় নারীদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে সামনে রেখে যৌন হেনস্তা নিয়ে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছে আইসিসি।

আজ (বুধবার, ১৭ অক্টোবর) সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠেয় আইসিসির সভায় যৌন হেনস্থার অভিযোগ নিয়ে কি ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে জানা গেছে।

আইসিসির নারী কমিটি, প্রধান নির্বাহীদের কমিটি, ডেভেলপমেন্ট কমিটি এবং আইসিসি বোর্ডকে পাঠানো এক নোটে আইসিসির চিফ অপারেটিং অফিসার হ্যাগিনস এবং সংস্থার আইন উপদেষ্টা স্যালি ক্লার্ক লিখেছেন, ‘এই ধরনের (যৌন হেনস্তা) ঘটনা সহ্য করা সম্ভব নয়।’

‘আইসিসি’র আগামী আসর তথা আইসিসি নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এমন ঝুঁকি থেকে মুক্ত রাখার সুপারিশ জানাচ্ছি। আমরা আরও সুপারিশ করছি যে, খুব দ্রুতই এই বিষয়ে কিছু নিয়ম-নীতি, যদি সম্ভব হয় তাহলে আসন্ন এই আসরেই প্রয়োগ করা হোক।’

হ্যাগিনস ও ক্লার্ক যেসব বিষয়কে হেনস্থার অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেছেন সেগুলো হলো-শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের সঙ্গে ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ (যৌন, শারীরিক, মানসিক), ঝুঁকিপূর্ণ নয় কিন্তু অপব্যবহার, যৌন হেনস্তা, গালাগালি, ধর্ষণ, নির্যাতন, অবাঞ্ছিত শারীরিক সংযোগ, আপত্তিকর মন্তব্য, জোকস বা হাস্যকর শারীরিক ভাষা, পর্নোগ্রাফি, যৌন সম্পর্কিত বা অন্য কোনো আপত্তিকর উপাদান বা চিত্র প্রদর্শন করা।

আইসিসি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমকেও তাদের নীতির বিষয়ে সম্পৃক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যাতে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং ক্রিকেটের সকল পর্যায়ে পৌঁছে যায়।

ভারতে এই মুহূর্তে #মিটু ঝড়ে অনেক নামি-দামী ব্যক্তি ফেঁসে গেছেন। এদের মধ্যে আছেন বলিউডের তারকা, নামী প্রযোজক, পরিচালক থেকে রাজনীতিবিদ এমনকি মন্ত্রীও। সর্বশেষ তাতে যুক্ত হয়েছেন ক্রিকেটার থেকে শুরু করে ক্রিকেট বোর্ডের কর্মকর্তারাও।

সম্প্রতি এতে নাম এসেছে শ্রীলঙ্কান গ্রেট ও বর্তমান মন্ত্রী অর্জুনা রানাতুঙ্গা ও ফাস্ট বোলার লাসিথ মালিঙ্গার। এমনকি বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়ার (বিসিসিআই) প্রধান নির্বাহী রাহুল জহুরির বিরুদ্ধেও উঠেছে যৌন হেনস্তার অভিযোগ।