যান্ত্রিক, কাল্পনিক কিংবা কৃত্রিম কার্যসম্পাদনকে বলা হয় রোবট। এটি একটি ইলেক্ট্রো-যান্ত্রিক ব্যবস্থার নাম, যার কাজকর্ম, অবয়ব ও চলাফেরা দেখে মনে হয়, এটি স্বেচ্ছায় কাজ করছে।
এখন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের যুগ। তাই এদের কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাও আছে। প্রযুক্তিনির্ভর বর্তমান বিশ্বে রোবট বিভিন্ন কাজে মূলত মানুষের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। তাই বিশ্বের শ্রমবাজারে অশিক্ষিত-অল্পশিক্ষিত লোকদের চাহিদা দিন দিন কমে যাচ্ছে। আগে যেখানে একটি প্রতিষ্ঠান চালাতে হাজারো জনবলের দরকার হতো, এখন সেখানে কয়েকটি অটোমেটিক মেশিন ও রোবটই অল্প খরচে হাজারো মানুষের সমান আউটপুট দিতে পারে।
রোবটের সঙ্গে বিয়ে!
সোফিয়া নামের রোবট বাংলাদেশে আসার পর অনেক তরুণই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দুষ্টুমির ছলে সোফিয়াকে বিয়ে করার আশা ব্যক্ত করেছে। এতে অনেকের মনে এই প্রশ্ন জাগতেই পারে যে রোবটকে বিয়ে করা কি বৈধ? এ ক্ষেত্রে আমরা দেখি, সুরা নাহালের ৭২ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘আর আল্লাহ তোমাদের জন্য তোমাদের থেকে জোড়া সৃষ্টি করেছেন।’ সুরা নিসার ৩ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ আরো বলেন, ‘অতঃপর তোমরা বিয়ে করো নারীদের মধ্যে যাকে তোমাদের ভালো লাগে…।’ এ আলোকে জানা যায়, কোরআনে যে নারীকে বিয়ে করার কথা বলা হয়েছে, তাকে অবশ্যই মানুষ হতে হবে। সুতরাং অন্য কোনো জাতির সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়া বৈধ নয়। (ফাতাওয়ায়ে শামি : ৩/৫, বাদাইউস সানায়ে : ৭/৩৬)
রোবটের মাধ্যমে জৈবিক চাহিদা পূরণ
বর্তমান দুনিয়ায় জৈবিক চাহিদা পূরণের জন্য কিছু সেক্স রোবট বা সেক্স ডল বানানো হয়। এ ধরনের উদ্ভাবন বিশ্বকে দ্রুত ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। ইসলাম ধর্ম মতে, এ ধরনের কাজ করার সুযোগ নেই। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘(সফল মুমিন তারা) যারা তাদের নিজেদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। তবে তাদের স্ত্রী ও তাদের মালিকানাধীন দাসী ছাড়া, নিশ্চয়ই এতে তারা নিন্দিত হবে না। অতঃপর যারা এদের ছাড়া অন্যদের কামনা করে, তারাই সীমা লঙ্ঘনকারী।’ (সুরা মুমিনুন, আয়াত : ১ ও ৫-৭)
তাফসিরে মাআরেফুল কোরআনে এ আয়াতের ব্যাখ্যায় লেখা হয়েছে, নিজের বিবাহিতা স্ত্রী কিংবা শরিয়তসম্মত দাসী (যা বর্তমানে রহিত হয়ে গেছে) ছাড়া আর কোনো পদ্ধতিতে জৈবিক চাহিদা পূরণ করার সুযোগ নেই। এ দুটি পদ্ধতি ছাড়া পৃথিবীতে জৈবিক চাহিদা পূরণের যত পন্থা আছে, সবই নিষিদ্ধ। (তাফসিরে মাআরেফুল কোরআন উর্দু : ৬/২৯৭) তাই রোবটের সঙ্গে জৈবিক সম্পর্ক স্থাপন করা বৈধ নয়।