Site icon Mati News

শিশুকে ফর্মুলা মিল্ক খাওয়াচ্ছেন? জেনে নিন কিছু সতর্কতা

ফর্মুলা মিল্ক ও ব্রেস্ট মিল্ক, এই দুইটার মধ্যে নিঃসন্দেহে ব্রেস্ট মিল্ক এগিয়ে থাকবে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে কিছু সমস্যার কারণে অনেক মা’ই শিশুকে পর্যাপ্ত পরিমাণ বুকের দুধ খাওয়াতে পারেন না। আবার অনেকে একদমই বুকের দুধ খাওয়াতে পারেন না। তখনই কেবল ফর্মুলা মিল্কের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। কিন্তু অনেকেরই মনে প্রশ্ন থাকে, শিশুকে ফর্মুলা মিল্ক খাওয়ানোর পরিমাণ কেমন হবে, কতবার খাওয়াতে হবে, বয়সের সাথে সাথে বাড়ানো যাবে কি না!

শিশুকে প্রতিদিনের ফর্মুলা মিল্ক দেয়ার পরিমাণ
ফর্মুলা মিল্কের পরিমাণ শিশুর বয়স ও ওজনের উপর নির্ভর করে। নিচের তালিকায় শিশুর বয়স অনুযায়ী ফর্মুলা মিল্কের পরিমাণ দেয়া হলো।

শিশুর বয়স ফর্মুলা মিল্কের পরিমাণ (একদিনের) দিনে কতবার করে খাওয়াতে হবে
১ মাস ৩৫৫ মিলি.-৯৪৬ মিলি. ৬ বার-৮ বার
২ মাস ৭৪০ মিলি.-৯৪৬ মিলি. ৫ বার-৬ বার
৩-৫ মাস ৮৮৭ মিলি.-৯৪৫ মিলি. ৫ বার-৬ বার
৪-৬ মাস ৮২৮ মিলি.-৯৪৬ মিলি. ৪ বার-৬ বার
৭ মাস ৮৮৭ মিলি.-৯৪৬ মিলি. ৩ বার-৫ বার
৮ মাস ৮৮৭ মিলি.-৯৪৬ মিলি. ৩ বার-৫ বার
৯ মাস ৮৮৭ মিলি.-৯৪৬ মিলি. ৩ বার-৫ বার
১০-১২ মাস ৭৭০ মিলি.-৮৮৭ মিলি. ৩ বার-৪ বার
নোট-২ মাস বয়সী শিশুকে প্রতিবারে ৭৫-১০৫ মিলি করে ৬-৮ বারে খাওয়াতে হবে। ২-৬ মাস বয়সীদের ১০৫-২৪০ মিলি করে প্রতিবারে। ৬ মাসের বেশি বয়সীদের ২১০-২৪০ মিলি প্রতিবারে।
নোট-শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের গবেষণা মতে, ১ বছরের কম বয়সী কোন শিশু যদি দিনে ৯৪৬ মিলির বেশি ফর্মুলা মিল্ক খায় তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত। কারণ ১ বছরের কম বয়সী বাচ্চার ৯৪৬ মিলির বেশি ফর্মুলার চাহিদা স্বাভাবিক নয়।

শিশুর ওজন অনুযায়ী ফর্মুলা মিল্কের পরিমাণ
শিশুদের ওজনের উপর নির্ভর করেও তাকে ফর্মুলা মিল্ক দেয়া যেতে পারে। আমেরিকান একাডেমি অপ পেডিয়াট্রিক্স এর গবেষণাপত্র অনুযায়ী শিশুর প্রতি কেজি ওজনের জন্য তাকে ১৫০ থেকে ২০০ মিলি করে ফর্মুলা মিল্ক দিতে হবে। অর্থ্যাৎ শিশুর ওজন তিন কেজি হলে তাকে প্রতিদিন ৪৫০ মিলি থেকে ৬০০ মিলি ফর্মুলা মিল্ক দিতে হবে।

কত সময় পর পর ফর্মুলা মিল্ক খাওয়াতে হবে?
সাধারণত শিশুর ক্ষুধা লাগলে তারা কান্নার মাধ্যমে তা জানাতে চেষ্টা করে। শিশু ক্ষুধার্ত থাকার ফলে কাঁদলে তাকে বুকের দুধ অথবা ফর্মুলা মিল্ক খাওয়াতে হবে। বুকের দুধ একটু তাড়াতাড়ি হজম হয় বলে প্রতি এক ঘন্টা পর পর শিশুর ক্ষুধা লাগতে পারে। কিন্তু ফর্মুলা মিল্ক হজম হতে একটু সময় নেয় বিধায় ফর্মুলা খাওয়ানোর মাঝে অন্তত চার ঘন্টা বিরতি রাখতে হবে।

শিশু ঠিকমতো দুধ পাচ্ছে কি না? কীভাবে বুঝবেন?
শিশু পর্যাপ্ত পরিমাণ দুধ পাচ্ছে কি না! কিংবা প্রয়োজনের চেয়ে বেশি পাচ্ছে কি না! কিছু লক্ষণের মাধ্যমে এইসব আমরা বুঝে নিতে পারি। চলুন লক্ষণগুলো জেনে নিই।

পর্যাপ্ত পরিমাণ দুধ না পাওয়ার লক্ষণসমূহ
• সুস্থ থাকার পরও শিশু ঠিকভাবে ঘুমাবে না।
• স্বাভাবিকের চেয়ে কম প্রস্রাব করবে।
• কমলা রংয়ের মল ত্যাগ করবে।
• স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি কাঁদবে।
• দুধ খাওয়ানোর পরও সন্তুষ্ট হবে না।

প্রয়োজনের চেয়ে বেশি দুধ পাওয়ার লক্ষণ
শিশুকে যেমন পর্যাপ্ত পরিমাণ দুধ খাওয়াতে হবে তেমনি প্রয়োজনের বেশি দুধ খাওয়ানো যাবে না। দুধ খাওয়া অবস্থায় শিশুর বমি হওয়া, পেটে গ্যাস হওয়া বা পেট ব্যথা হওয়া এইসব লক্ষণ দেখা গেলে বুঝতে হবে শিশু প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত ফর্মুলা পাচ্ছে। এবং এটা বুঝতে পারার সাথে সাথে ফর্মুলার পরিমাণ কিছুটা কমিয়ে দিতে হবে।

শিশু খেতে না চাইলে তাকে কোনভাবেই জোর করে খাওয়ানো যাবে না। শিশু নিজে থেকে যতটুকু খেতে চায় ঠিক ততটুকুই তাকে খাওয়াতে হবে। যদি আপনার সন্তানের শারীরিক উন্নতি বয়সের সাথে সাথে পর্যাপ্ত না হয় তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। কিন্তু শিশুকে জোর করে বেশি বেশি খাওয়ানো যাবে না।

তথ্যসূত্র-healthychildrenwakehealth

Exit mobile version