জানা গেছে, ওই কণের নাম জোভান্না। তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার পর নাম পরিবর্তন করে খাদিজা হয়েছেন। সম্প্রতি ইতালি প্রবাসী ওই বাংলাদেশের সিলেটের যুবকের সঙ্গে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে।
বাংলাদেশে যেখানে হঠাৎ করে একটি বিয়ের আয়োজন করা যায় কিন্তু ইতালীয়ানরা বিয়ের দিন ঠিক করে অনেক আগে থেকেই। তারপর শুরু হয় বিয়ের আয়োজন। যেমন- নব দম্পতিরা তাদের পছন্দমত একটি ঘর দেখেন, বিয়ের অনুষ্ঠানে কি কি খাবার পরিবেশন করা হবে তা নির্ধারণ করা, হানিমুনের পরিকল্পনা, বিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য একটি হল ভাড়া করা ইত্যাদি।
বাংলাদেশে বিয়েতে ঢালাওভাবে আত্মীয়-স্বজনদের দাওয়াত করা হলেও ইতালিতে তা সম্পূর্ণ ভিন্ন। এখানে দু-পরিবারের একান্ত আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধব ছাড়া অপরিচিত কাউকে দাওয়াত করা হয় না। যাদের দাওয়াত দেয়া হয়, তারা আবার কয়েক মাস আগে থেকে বিয়েতে উপস্থিত থাকতে হয়। যারা যারা উপস্থিত থাকবেন তাদের নাম এবং তাদের পরিবারের সদস্য অনুযায়ী খাবারের টেবিল সাজানো হয়। তাই এখানকার বিয়েতে আমন্ত্রিত অতিথিদের সংখ্যা খুব একটা হয় না।
বিয়েকে স্বরণীয় করে রাখার জন্য বর কনে বেরিয়ে পরে বিয়ের ছবি ভিডিও করার জন্য সুন্দর, মনোরম কোন স্থানের উদ্দেশ্যে। তারপর সন্ধ্যায় বিয়ের অনুষ্ঠানের হলে আসেন। তাদের হলে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে করতালির মাধ্যমে উপস্থিত অতিথিরা স্বাগতম জানান। তারপর শুরু হয় খাওয়া দাওয়ার পর্ব। ইতালিতে বিয়ের খাবার পরিবেশনা আমাদের দেশের প্রচলিত বিয়ের খাবার পরিবেশনা থেকে সম্পূর্র্ণ আলাদা। এখানে অতিথিদের প্রথমে ব্যুফে পরিবেশন করা হয়- তারপর মেইন ডিস, তারপর সেকেন্ড ডিস। তারপর বর-কনের সঙ্গে অতিথিরা নাচেন। এরপর বর-কনে বিয়ের কেক কাটেন। তারপর আবার সবার জন্য মিষ্টি, কেক, ফলমূলের ব্যুফে পরিবেশনের মাধ্যমে বিয়ের দিনের অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে। তবে বিয়ের শুরু থেকেই সবার জন্য শ্যাম্পেন ও অন্যান্য পানীয়ের ব্যবস্থা থাকে।
তবে এ বিয়ে হয়েছে অনেকটা আলাদাভাবে। সকালে এক মসজিদের ঈমাম তাদের বিয়ে পড়ান। তারপর বর-কনে পৌরসভায় গিয়ে তাদের বিয়ে সম্পূর্ণ করেন। বিয়েতে হালাল খাবার-দাবার পরিবেশন করা হয়। সেখানে মেক্সিকান, আরাবিয়ান, সিসিলিয়ান হরেক রকম খাবারে সঙ্গে ছিল সমুচা, কাবাব, বিরিয়ানী, পিয়াজুসহ নানান রকম বাংলাদেশি খাবারের আইটেম ছিল।
বিয়ে বাড়ি থেকে শুরু করে বাসর ঘর সাজানো পর্যন্ত সব কিছুতেই ছিল দেশীয় স্পর্শ। এগুলো সব কনের পক্ষের আত্মীয়রা ইন্টারনেটে দেখে দেখে সাজিয়েছিল।
প্রসঙ্গত, ইতালিতে ১৭ লাখ মুসলমানের বসবাস। ইতালীল সরকারী সংস্থার হিসাবে দেশটিতে প্রায় বিশ হাজার সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অন্যান্য ধর্ম থেকে ইসলাম গ্রহণ করেছেন। ইতালির এই চিত্র প্রমান করে ইউরোপে ক্রমবর্ধমান ধর্ম হিসাবে ইসলামের প্রসার ঘটছে।