খরচ কমিয়ে টাকা বাঁচানোর কিছু টিপস

খরচ কমানো বা সঞ্চয়ের কথা মাথায় আসলেই অনেকে ভাবেন, কষ্ট করে বুঝি চলতে হবে। অথচ একটু মাথা খাটালে কষ্ট তো নয়ই, বরং আরও আরামেই চলতে পারবেন। তেমন কিছু খরচ কমানোর টিপস দেওয়া হলো নিচে–

১। একটা ভালো দেখে ব্যাগ নিন। আর একটা ফ্লাস্ক ও হটপট কিনে ফেলুন। বাইরের রং চা খাবেন না। ফ্লাস্কে করে বাসায় বানানো চা নিয়ে ঘুরবেন। চায়ের খরচ চার ভাগের এক ভাগে নেমে আসবে। বাইরের দোকানে দুটো পুদিনা পাতা, এক চিমটি আদা আর আধা চা চামচ চিনি দেওয়া রং চা ১০টাকা দিয়ে খাওয়ার কোনো মানেই হয় না। মনে রাখবেন ১০ টাকায় এখন ৩০০ গ্রাম আলু পাওয়া যায়।

২। হটপটে গোল আলু সেদ্ধ নিয়ে ঘুরবেন। একটু লবণ ছিটিয়ে রাখবেন। বিকেলের নাস্তা বা রাস্তার পাউরুটির চেয়ে এটা অতি উত্তম খাবার। যখন তখন যে কেউ এটা বানাতে পারবে। এটি ভাতের বিকল্প তো বটেই, সেই সঙ্গে পুষ্টিকরও। আর নাস্তার খরচ নামিয়ে আনতে পারবে ৩ ভাগের এক ভাগে। তাই রাস্তার মোড়ে কলা-পাউরুটি (অস্বাস্থ্যকর) খাওয়ার আগে ভাবুন, ব্যাগে সেদ্ধ আলু থাকলে কত ভালোই না হতো।

৩। রাতের বেলায় ৫০ টাকা দরে পেয়ারা কিনে রাখুন। পর দিন সেটাও নাস্তার বিকল্প হিসেবে খেতে পারেন। আর মানুষের চলতে ফিরতে অত বেশি খাওয়ার দরকারও হয় না। যত বেশি ফলটল খাবেন, তত গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কম হবে। বেঁচে যাবে সেকলো, লোসেকটিল কেনার টাকাও।

৪। আপনি নিন্মমধ্যবিত্ত হয়ে থাকলে নিন্মবিত্তের মতো চলুন। কয়েকজন মিলে সমিতির মতো করে পাইকারি বাজার থেকে সরাসরি বাজার করুন। যে ফুলকপিটা ৪০ টাকা চাচ্ছে, সেটা পাইকারি বাজার থেকে ১৫-২০ টাকায় কিনতে পাবেন (ঢাকার)।

৫। আপাতত কোনো খাওয়ার দাওয়াতের অনুষ্ঠানে রিকশা বা সিএনজি ভাড়া দিয়ে যাবেন না। যতটুকু খাবেন, তার দ্বিগুণ ভাড়া দেওয়ার কোনো মানে হয় না। তবে আপনি চিপায় পড়া মধ্যবিত্ত হলে সেটা ভিন্ন কথা।

৬। টাকা জমানোর ক্ষেত্রে বিনিয়োগের চিন্তা মাথায় রাখুন। লাজ লজ্জা ঝাড়ুন। অফিস বা ডিউটির পর অবসর সময়ে একটা কিছু কিনে তা বিক্রি করেও কিছু বাড়তি আয় করতে পারেন। সাইকেল বা মোটরসাইকেল থাকলে পণ্য ডেলিভারির কাজ করুন।

৭। রাস্তায় ৩০ টাকার ভুট্টা ভাজা খাওয়ার আগে ভাবুন, ৩০ টাকায় এক কেজি আলু পাওয়া যায়। ৩০ টাকায় আধা কেজি ভালোমানের সবজি পাওয়া যায়। এভাবে তুলনা করতে শিখুন।

৮। অপ্রয়োজনে বন্ধুদের আড্ডা বা অবসরে চা-সিগারেট খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। আড্ডা মানে খেতে হবে এমন কথা নেই। কথায় কথায় রেস্টুরেন্টে যাওয়ার অভ্যাস বাদ দিন। ব্যাগে রাখা হটপটে বাসায় বানানো রুটি ভাজি পরোটা রাখার চেষ্টা করুন।

৯। বারান্দায় ছোট (৬ ইঞ্চি) একটি টবে চাষ করা পুই শাক দিয়ে মাসের ২ দিনের শাকের চাহিদা পূরণ সম্ভব। এভাবে দশ বারোটা টব ঠিক করুন। তাতে মিষ্টি কুমড়ার বীজ ও পুঁই শাকের বীজ বপণ করে রাখুন। নিয়মিত পানি দিন। কনস্ট্রাকশন সাইট থেকে উর্বর মাটি পলিথিনে ভরে আনুন। নার্সারিতে যাওয়ার দরকার হবে না। যেখানে খালি মাটি দেখবেন, মিষ্টি কুমড়ার শুকনো বীজ লাগিয়ে দেবেন। বাজারে গেলেই স্লাইস করে কাটা মিষ্টি কুমড়া পাবেন, দোকানিকে বললে তিনি সানন্দে আপনাকে বেশ কয়েকটা বীজ দিয়ে দেবে।

১০। ফল গাছ লাগাতে চাইলে আম, কাঁঠাল বা পেয়ারা-পেঁপে লাগান। লেবুর ফলন অনেক। লেবু খেয়ে পেট ভরবে না।

১১। মেহগনি গাছ ভুলেও লাগাবেন না। প্রয়োজনে মেহগনি কেটে বেশি করে ফল গাছ লাগান।

 

লেখাটি লিখেছেন: কাজী নুরুল আলম।

লেখাটি আপনার উপকারে এসে থাকলে লেখককে ৫ টাকা সম্মানি দিতে এই নম্বরে বিকাশ করুন : 01976-324725 

রেফারেন্স : KNA

lifestyle tipstips