রোজায় নারীদের বিশেষ মাসআলা : লবণ চাখলে রোজা ভাঙবে?

রোজা নারী-পুরুষ উভয়ের ওপরই সমানভাবে ফরজ। হাদিসে এসেছে, ‘যদি কোনো নারী ঠিকমতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে, রমজান মাসে রোজা রাখে, পর্দার সঙ্গে নিজ ইজ্জত হেফাজতে রাখে, স্বামীর আনুগত্য থাকে, তাহলে সেই নারীর জন্য আল্লাহতায়ালা জান্নাতের আটটি দরজাই খোলা রাখবেন, ওই নারী যে দরজা দিয়ে খুশি, সেই দরজা দিয়েই জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবেন’ (তিরমিজি)। রমজানে নারীদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। ইবাদতের বসন্তকালে নারীদের নিবেদিত মনোভাবের কারণেই সম্ভব হয় রোজাকে যথাযথ উদযাপন করা। নিজের ইবাদত-বন্দেগির পাশাপাশি ঘরের ব্যবস্থাপনা, রান্না-বান্না, সন্তানের যত্ন, কর্মস্থলে ব্যবস্থা-সব মিলিয়ে নারীর জন্য যথেষ্ট পরিশ্রমের মাস রমজান। তবে নারীদের বিষয়টি পুরুষদের মতো নয়। কিছু বিষয় বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হয়, যা জেনে রাখা খুবই জরুরি। অন্তঃসত্ত্বা নারীর রোজা : অন্তঃসত্ত্বা নারীকে যদি কোনো মুসলমান পরহেজগার অভিজ্ঞ ডাক্তার বলেন, রোজা রাখলে তার নিজের বা গর্ভের বাচ্চার প্রাণনাশের বা মারাত্মক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, তাহলে সেই নারী রোজা নাও রাখতে পারেন। পরে শুধু কাজা করে নিলেই হবে। (হেদায়া : ১/২২২)

স্তন্যদানকারিণীর রোজা : স্তন্যদানকারিণীর রোজার বিষয়টিও অনেকটাই অন্তঃসত্ত্বার রোজার মতো। অর্থাৎ স্তন্যদানকারিণী নিজে রোজা রাখলে যদি দুগ্ধপোষ্য শিশুর প্রাণনাশ বা অন্য কোনো মারাত্মক ক্ষতি হওয়ার প্রবল আশঙ্কা থাকে, তাহলে তিনি রোজা নাও রাখতে পারেন। তবে পরে কাজা করে নিতে হবে।

ওষুধ খেয়ে ঋতুস্রাব বন্ধ করে রোজা : নারীদের পিরিয়ড হওয়াটা একটা স্বাভাবিক ব্যাপার। আল্লাহতায়ালা তাদের এভাবেই সৃষ্টি করেছেন। এতে তাদের কোনো দোষত্রুটি নেই। পিরিয়ড অবস্থায় নামাজ মাফ। আর রোজা পিরিয়ড অবস্থায় রাখা নিষেধ। তবে এ রোজা না রাখাতে তাদের কোনো গুনাহ নেই। তবে পরে তা কাজা করতে হয়। এ জন্য রমজান মাসে পিরিয়ড হলে তা নিয়ে মনঃক্ষুণ্ন হওয়ার কোনো যুক্তি নেই। তবে কেউ যদি শুরু হওয়ার আগেই ওষুধ বড়ি খেয়ে পিরিয়ড বন্ধ রেখে রোজা রাখেন, তবে সে রোজা সহিহ হয়ে যাবে। ফলে তা আর পরে কাজা করতে হবে না। (ফাতওয়া শামি : ১/৫০৮; ফাতহুল কাদির : ১/১৪৫) লিপস্টিক বা লিপজেল : রোজা অবস্থায় নারীরা লিপস্টিক বা লিপজেল ব্যবহার করতে পারবে। তবে সতর্ক থাকতে হবে, যেন মুখে চলে না যায়। যদি মুখে চলে যায়, তবে রোজা মাকরুহ হবে। গলায় স্বাদ অনুভব হলে রোজা ভেঙে যাবে। (কিতাবুল ফাতাওয়া : ৩/৩৯৮)

তরকারির লবণ চাখা : নারীরা রান্না করার সময় তরকারির লবণ পরীক্ষা করার জন্য জিহ্বার মাধ্যমে তরকারির স্বাদ নিলে রোজার কোনো ক্ষতি হবে না। (আল ফিকুল মুয়াসসার, বেহেশতি জেওর)

লিখেছেন ফাহমিদা ফাতিমা