Site icon Mati News

ইসলামে আলগা চুল লাগানো জায়েজ? বিচ্ছেদের পর সন্তান কার কাছে থাকবে?

ইসলামিক মাসালা

প্রশ্ন: টাক মাথায় কি কৃত্রিম ও আলগা চুল লাগানো জায়েজ?

উত্তর: স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে টাক মাথায় কৃত্রিম ও আলগা চুল লাগানো জায়েজ নেই। কেননা, হাদিস শরিফে এসেছে-‘আসমা বিনতে আবু বকর (রা.) থেকে বর্ণিত, যে কৃত্রিম চুল লাগিয়ে দিতে বলে এবং যে লাগায়; দুজনের উপরে আল্লাহর রাসুল (সা.) লানত ও অভিসম্পাত করেছেন।’ (নাসায়ী শরিফ, হাদিস: ৯৩৭৪)

টাক মাথায় চুল লাগানো আল্লাহর সৃষ্টিতে অপ্রয়োজনে হস্তক্ষেপের শামিল, যা ইসলামে নিষিদ্ধ। তবে ইসলামি আইনজ্ঞরা বলেন, বিশেষ প্রয়োজনে টাক মাথায় চুল লাগানো যেতে পারে। যেমন: চুল পড়ে যাওয়ার কারণে কোন যুবতীর বিয়ে হচ্ছে না ইত্যাদি।

তথ্যসূত্র: রদ্দুল মুহতার ৬/৩৭৩, উমদাতুল কারী ২২/৬৪

 

প্রশ্ন: কোন মসজিদে একই ওয়াক্তের নামাজের একাধিক জামাত করা যাবে?

উত্তর: কোন মসজিদে একই ওয়াক্তে কিংবা একই সময়ে সামনে-পেছনে একাধিক জামাত করা যাবে না। আব্দুর রহমান বিন মুজবার থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি সালেম ইবনে আব্দুল্লাহর সঙ্গে এমন সময় জুমার মসজিদে প্রবেশ করলাম যখন তাদের (মুসল্লি) জামাত শেষ, তারা বললেন, তোমরা কি জামাত করবে না? সালেম বললেন, কোন মসজিদে এক নামাজের দুই জামাত নেই। (ই‘লাউস সুনান ৪/ ২৮০)

তবে কেউ যদি পুনরায় জামাত করে ফেলে তাহলে তার নামাজ আদায় হয়ে যাবে কিন্তু তার এ কাজটি মাকরুহ এবং অপছন্দীয় হবে বরং মসজিদে জামাত হয়ে গেলে তার জন্য বাড়িতে এসে বা মূল মসজিদের বাইরে জামাত করার অনুমতি আছে। আবু বাকরাহ (রা.) থেকে বর্ণিত যে রাসুল (সা.) মদিনার উপকণ্ঠ থেকে ফিরে নামাজ পড়তে চাইলেন অথচ লোকেরা (সাহাবীগণ) সবেমাত্র জামাত শেষ করেছে, তখন তিনি ঘরে ফিরে গেলেন এবং বাড়ির লোকদের একত্র করে জামাতে নামাজ পড়ালেন। (তাবরানী ৪৬০১)

শরীয়তে পুনরায় জামাত না করার প্রতি উদ্বুদ্ধ করার কারণ হলো, যেন মসজিদের প্রধান জামাতের গুরুত্ব হ্রাস না পায়। তবে মসজিদটি যদি বাজার, পাবলিক প্লেস, রেল স্টেশন, বাসস্ট্যান্ড, এয়ারপোর্ট, লঞ্চঘাট ইত্যাদি জায়গায় হয় তাহলে সেখানে একাধিকবার জামাত করা যাবে।

তথ্যসূত্র: দারুল উলুম দেওবন্দের উর্দু ওয়েবসাইট অবলম্বনে

প্রশ্ন: স্বামী-স্ত্রীর বিচ্ছেদে সন্তান কোথায় থাকবে, শরিয়তের নির্দেশনা কি?

উত্তর: স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটলে পুত্র সন্তানের সাত বছর ও কন্যা সন্তানের নয় বছর বয়স পর্যন্ত মা-ই তাদের লালন-পালনের বেশি অধিকার রাখে। এ সময়ে মায়ের অনুমতি ও সম্মতি ছাড়া পিতা বা পিতার পক্ষের কারো জন্য সন্তানকে মা থেকে একেবারে নিয়ে আসা জায়েজ নেই। সম্মতি থাকলে ভিন্নকথা।

তবে এ সময়ের ভেতর সন্তানদের মাহরাম (বিবাহ হারাম এমন কেউ, যাদের সঙ্গে দেখা করা বা দেখা দেওয়া জায়েজ ও বৈধ) নয় এমন কারো সঙ্গে যদি তাদের মায়ের ফের বিবাহ হয় তাহলে সেক্ষেত্রে মায়ের জন্য সন্তানদেরকে নিজের কাছে রাখার অধিকার থাকবে না। সেক্ষেত্রে নানী, দাদী, আপন বোন এবং বৈপিত্রেয় বোন, পর্যায়ক্রমে উক্ত সন্তান লালন-পালনের হকদার হবে।

 

–বেলায়েত হুসাইন

তথ্যসূত্র: কিতাবুল আছল ১০/৩৪৮, আলবাহরুর রায়েক ৪/১৬৯, ফাতাওয় হিন্দিয়া ১/৫৪১, ফাতহুল কাদির ৪/১৮৮, তাবয়িনুল হাকাইক ৩/২৯৫, আলইখতিয়ার ৩/৩০২।

Exit mobile version