Site icon Mati News

রাসেলস ভাইপার কামড় দিলে কী করবেন | রাসেল ভাইপার থেকে বাঁচার উপায়

বাংলাদেশে এখন এক তীব্র, ভয় আতংকের নাম রাসেলস ভাইপার বা চন্দ্রবোড়া সাপ। এই সাপের দংশনে সবচেয়ে বেশি মারা যাচ্ছে কৃষকরা। ধান কাটতে গিয়ে রাসেলস ভাইপারের আক্রমণের শিকার হচ্ছেন। আগে হাতে গোনা কয়েকটি জেলায় এই সাপের উপস্থিতি দেখা গেছে। এখন তা ২৮ টি জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। দিনদিন রাসেলস ভাইপারের সংখ্যা বৃদ্বি পাচ্ছে। যা খুবই আতংকের বিষয়। কিন’ স্বস্তির বিষয় হলো,বাংলাদেশে রাসেলস ভাইপারের সঠিক চিকিৎসা আছে। এ জন্য যত দ্রত সম্ভব রোগীকে চিকিৎসাকেন্দ্রে নিতে হবে। সর্প ধংশনের শিকার হলেই নিশ্চিত মৃত্যু হবে। ব্যাপারটা মোটেই এমন নয়। লিখেছেন: মুহাম্মদ শফিকুর রহমান

রাসেল ভাইপার সাপে কামড় দিলে যা করবেন

সাপের কামড়ের শিকার হলে আতংকিত হওয়া যাবে না। সর্পদংশনের প্রাথমিক চিকিৎসার বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডাক্তার আয়ান সিমপসং বলেছেন – Do it RIGHT । এ রাইট মানে চারটি কাজের সমন্বয়।

R- Reassure

I- Imobilise.

GH- Go to Hospital

T- Tell the Doctor

সাপের কামড় তথা সর্পদংশনের পর রোগীকে সাহস দিতে হবে। শান্ত রাখতে হবে। সর্পদংশিত অঙ্গের নড়াচড়া বন্ধ রাখতে হবে, যাতে বিষ শরীরে দ্রত ছড়িয়ে না পড়ে। অধিকাংশ সাপ হাতে বা পায়ে দংশন করে, দংশিত অঙ্গ নড়াচড়া না করার ফলে শরীরে বিষ ছড়াতে সময় লাগে।

পায়ে ছোবল দিলে লাঠি বেঁধে পা সোজা করে স্টেচারে শুইয়ে দ্রুত চিকিৎসা কেন্দ্রে নিতে হবে। চিকিৎসককে বলতে হবে। উল্লেখ্য যে কোন ধরনের বাঁধনে সাপের বিষ আটকাতে পারে না। এতে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে হাত-পা চিরতরে পঙ্গু হয়ে যেতে পারে। বিশেষ করে চন্দ্রবোড়া ও সবুজবোড়া সাপে কামড় দিলে সেক্ষেত্রে টাইট করে বাঁধন মারাত্নক ক্ষতি হতে পারে।

রাসেল ভাইপার কামড়ের চিকিৎসা

এর অন্যতম চিকিৎসাটি হলো আক্রান্ত ব্যক্তিকে দ্রুত অ্যান্টি ভেনম ইনজেকশন  দেওয়া। তার আগে সাপে কাটা স্থানটি সাবান-পানি দিয়ে জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে। কামড়ের স্থানটি পরিষ্কার ও শুকনো ড্রেসিং দিয়ে বেঁধে দিতে হবে। তাই কাউকে সাপে কাটলে কোথায় নিয়ে যাবেন, কোথায় ইনজেকশন পাওযা যাবে এবং কোথায় গেলে দ্রুত কাজ হবে সেসব তথ্য আগে থেকে জেনে রাখুন। চিকিৎসায় দেরি করা যাবে না। কারণ এ ধরনের সাপে কাটলে সেটার প্রভাব ১৪ দিন পরও থাকে। কিডনি, রেসপিরেটরি ও কার্ডিয়াক ফেইলুর (হার্ট অ্যাটাক) এর অন্যতম জটিলতা। আবার অনেক সময় বেঁচে গেলেও দেখা যায় পিটুইটারি গ্ল্যান্ডের মারাত্মক ক্ষতি করে দিয়ে যায় রাসেল ভাইপারের বিষ।

রাসেল ভাইপার থেকে বাঁচতে করণীয়

জমিতে কাজের সময় অবশ্যই গামবুট পরতে হবে। সম্ভব হলে হাতে গ্লাভস থাকা উত্তম। দেখা গেছে সাপ হাত এবং পায়ে কামড় দেয় বেশি।

রাতের বেলা লাইট নিয়ে চলাফেরা করতে হবে। রাতে জমিতে কাজ না করাই ভালো।

জমির ধান, ভুট্রাসহ নানা ফসল কাটার জন্য যান্ত্রিক মেশিন ব্যবহার করতে পারলে ভালো হয়। জমি এবং জমির ঝোপঝাড় দিয়ে হাঁটার সময় সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।

রাসেলস ভাইপার হিস হিস জাতীয় শব্দ করে। যা কানে শোনা যায়। এ কারণে হিস হিস শব্দ শুনলে সাবধান হতে হবে।

কাজ করার সময় মাটিতে শব্দ করা যেতে পারে। যাতে সামান্য হলেও কম্পন সৃষ্টি হয়। রাসেলস ভাইপার কম্পন টের পায়।

রাসেল ভাইপার নিয়ে ভুল ধারণা

রাসেল ভাইপার দ্রুত দংশন করতে পারে। কিন্ত’ এরা তেড়ে এসে কামড়ায় না। এরা অলস প্র্রকৃতির সাপ। কুন্ডুলি পাকিয়ে বসে থাকে। এই সাপের বিষে বিভিন্ন ধরনের বিষ থাকে না। রাসেল ভাইপারের দংশনের সঠিক চিকিৎসা বাংলাদেশে নেই এমনটা মনে করার কারণ নেই। আমাদের দেশে রাসেল ভাইপার কামড়ের চিকিৎসা আছে।

লেখক: মুহাম্মদ শফিকুর রহমান

এসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার, সেলস অপারেশনস

ফেয়ার ডিষ্টিবিউশন লিমিটেড, ঢাকা।

Exit mobile version