Site icon Mati News

ডেঙ্গু নিয়ে সব তথ্য পড়ুন একসঙ্গে | ডেঙ্গু হলে কী করবেন

মারাত্মক রূপ নিয়েছে ডেঙ্গু। সামনের দিনগুলোতে হয় পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকেই যাবে। আপাতত সিটি করপোরেশনের দিকে তাকিয়ে থেকে লাভ নেই। ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারি আমরাই। ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে নানা জনের নানা জিজ্ঞাসা। এ নিয়ে প্রশ্নেরও যেন শেষ নেই। তাই ডেঙ্গু নিয়ে সব তথ্য ও ডেঙ্গু জ্বরের বিস্তারিত নিয়েই এ লেখা।

বিভিন্ন ডাক্তারদের পরামর্শ অনুযায়ী ডেঙ্গু নিয়ে সব তথ্য ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া তথ্যগুলো পয়েন্ট আকারে ধাপে ধাপে দেওয়া হলো।

ডেঙ্গুর লক্ষণ ও পরীক্ষা : ডাক্তার দেখানো কেন দরকার

এখনকার ডেঙ্গুর অনেক সাধারণ লক্ষণই দেখা যায় না। তাই কারও জ্বর হলে প্রথম দিন, মানে জ্বর আসার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ডেঙ্গু NS-1 টেস্ট করানো দরকার। সেই সঙ্গে প্লাটিলেট কাউন্ট ও রক্তের বাকিসব ঠিকঠাক আছে কিনা সেটা জানতে CBC টেস্ট করিয়ে নিতে হবে। জ্বর যদি সকালে আসে তবে রাতেই এনএস-১ পরীক্ষা করান। দেরি করলে এ পরীক্ষায় আসল ফল আসবে না। তখন আবার ৪-৫ দিন IGM পরীক্ষা করাতে হবে।

তবে সাধারণ জ্বর না হয়ে যদি জ্বরের সঙ্গে অন্য কোনো সমস্যা, যেমন বমি, পাতলা পায়খানা, বুকে ব্যথা, এসব থাকে তবে ডাক্তার দেখিয়ে নিতে হবে। কারণ জ্বর তো আরও অনেক কারণেই হতে পারে। নিজে থেকে শুধু ডেঙ্গু টেস্ট করিয়ে যদি নেগেটিভ ফল পেয়ে নিশ্চিন্তে বসে থাকেন তাতে তো অন্য বিপদ বেড়ে যেতে পারে।

জ্বরের পর ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে তিনি এখন ডেঙ্গু টেস্ট দেবেন এটা ঠিক। তবে তিনি রোগীর রক্তচাপ, জিভ, চোখ এসবও দেখবেন। অন্য লক্ষণ দেখে যদি মনে করেন আড়ালে অন্য রোগ, যেমন জন্ডিস, সংক্রমণ বা জটিলতা থাকতে পারে, তখন টাইফয়েড বা অন্য টেস্টও দিতে পারেন। তাই নিজে থেকে পরীক্ষা করিয়ে ডেঙ্গু নেগেটিভ ফল পেয়ে খুশি মনে বসে থাকলে হবে না।

ডেঙ্গু নিয়ে সব তথ্য : ডেঙ্গু পরীক্ষার ফল পাওয়ার আগে-পরে

ডেঙ্গু নিয়ে সব তথ্য : ডেঙ্গু রোগীকে যা খাওয়াবেন

ডেঙ্গু নিয়ে সব তথ্য : যা খাওয়াবেন না

ডেঙ্গু নিয়ে ভুল ধারণা

ডায়াবেটিস ও ডেঙ্গু

ডেঙ্গু নিয়ে কিছু প্রশ্ন ও উত্তর— Dengue Frequently Asked Questions and Answers in Bangla

শিশুর ডেঙ্গু ভালো হতে কতদিন লাগে?

সাধারণ ডেঙ্গু হলে সেটার লক্ষণ ২-৫ দিন থাকে। আর পুরোপুরি সারতে বড়জোর ১০ দিন লাগতে পারে। জ্বর কমে যাওয়ার পর কিছুদিন কড়া নজরে রাখতে হয়। এ সময় রোগীর সিবিসি পরীক্ষা করে প্লাটিলেট কমছে কিনা, হিমোগ্লোবিন ঠিক আছে কিনা এসব দেখতে হয়। তবে ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গু ফিভারে প্লাটিলেট আপনাতেই বেড়ে যায় ও ১০ দিনের মধ্যে শিশু পুরো সুস্থ হবে। তখন দেখবেন শিশুর স্বাভাবিক খিদে ফিরে এসেছে ও মুখে খেতে পারছে।

ডেঙ্গু নিয়ে সব তথ্য

ডেঙ্গু হলে দিনে কতবার প্লাটিলেট টেস্ট করাতে হবে?

রোগীর অবস্থা বুঝে ডাক্তার দিনে একবার করেই সাধারণত প্লাটিলেট কাউন্ট দিয়ে থাকেন। প্লাটিলেট বেশি কমে এলে তখন চিকিৎসাপদ্ধতি বদলে যায়। রোগীকে তখন প্লাটিলেট বা রক্ত দিতে হয়। শরীরের বোন ম্যারো ঠিকঠাক কাজ করলে দিনে কয়েক লাখ করে প্লাটিলেট এমনিতেই তৈরি হয়। তাছাড়া রক্তের প্লাটিলেটের আয়ু হয় ১০ দিন।

ডেঙ্গুর জন্য কোনো অ্যান্টিবায়োটিক আছে?

ডেঙ্গু ভাইরাসজনিত রোগ। তাই এর কোনো অ্যান্টিবায়োটিক নেই।

ডেঙ্গু নিয়ে সব তথ্য

ডেঙ্গুর টিকা আছে?

ডেঙ্গুর একটি টিকা বের হয়েছিল। তবে ওটার শর্ত ছিল শিশুদের ওই টিকা দিতে হবে যাদের আগে একবার ডেঙ্গু হয়েছে। জটিলতার কারণে ওই টিকা পরে বন্ধ করে দেওয়া হয়। ভারতে এখন একটি টিকা তৃতীয় ধাপে আছে। যেহেতু ডেঙ্গুর টাইপ ৪ রকম। তাই সব ধরনের টিকা সহসাই আসছে না। কেউ টিকা দেওয়ার কথা বললে ধরে নেবেন সেটা প্রতারণা।

ডেঙ্গুর NS-1 টেস্ট মানে কী?

শরীরে ডেঙ্গু সংক্রমণ ঘটলে ভাইরাসটি এক ধরনের প্রোটিন রক্তে ছড়িয়ে দেয়। ওটা হলো নন স্ট্রাকচারাল প্রোটিন। আর ওটা শনাক্ত করার নামই এনএস-১ পরীক্ষা।

ডেঙ্গুর IGm টেস্ট কী?

এটা হলো পরবর্তী ধাপের অ্যান্টিবডি টেস্ট। এটা দুই রকম। আইজিজি ও আইজিএম। ইনফেকশন হলে আমাদের শরীর ওই ইনফেকশন অনুযায়ী কিছু অ্যান্টিবডি তৈরি করে। আইজিএম পজিটিভ ও আইজিজি নেগেটিভ হওয়ার মানে সম্প্রতি ডেঙ্গু হয়েছে, আগে হয়নি। আবার শুধু পজিটিভ আইজিজির মানে হলো অতীতে ডেঙ্গু হয়েছে।

ডেঙ্গু নিয়ে সব তথ্য

দ্বিতীয়বার ডেঙ্গু কি মারাত্মক?

বেশ কিছু ক্ষেত্রে দেখা গেছে দ্বিতীয়বার ডেঙ্গুতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এত বেশি অস্থির হয়ে যায় যে রোগীর অবস্থা মারাত্মক হতে পারে।

ডেঙ্গু রোগীর জন্য কী ধরনের সতর্কতা নিতে হবে?

ডেঙ্গু যদি হেমারেজিকের দিকে মোড় নেয়, তবে রোগীর প্রতি সর্বোচ্চ নজরদারি রাখতে হবে। কিছুতেই যেন শরীরে কোনো কাটাছেঁড়া না হয়। এমনকি দাঁত ব্রাশ করতেও মানা করা হয় যাতে মাড়ি রক্ত না পড়ে। আবার একান্ত দরকার ছাড়া ওঠাবসারও দরকার নেই। একদম বিশ্রামে থাকতে হবে।

ডেঙ্গু নিয়ে সব তথ্য

ডেঙ্গুর হোমিওপ্যাথিক ওষুধ আছে?

হোমিওপ্যাথিতে দেখবেন এমন কোনো রোগ নেই যেটার চিকিৎসা নেই বলে দাবি করা হয় না। যেহেতু ডেঙ্গু হলে প্যারাসিটামল ছাড়া বাকি সব ওষুধের একটা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঝুঁকি থাকে তাই অবস্থা কিছুটা সাধারণ হলে অন্য কোনো চিকিৎসাপদ্ধতিতে না যাওয়াই ভালো।

বাসায় ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা করা যাবে?

এর সরাসরি কোনো উত্তর নেই। নির্ভর করছে রোগীর অনেক বিষয়ের ওপর। রোগীর যদি অন্য জটিলতা (যাকে ইংরেজিতে বলে কোমরবিডিটি) থাকে তবে ভর্তি হতে হবে। আবার রোগীর যদি অনেক গুরুতর লক্ষণ না থাকে ও রোগী যদি মুখে সহজে খেতে পারে তবে বাসায় চিকিৎসা দেওয়া যাবে। সেক্ষেত্রে জরুরি অবস্থা দেখা দিলে কোন হাসপাতালে নেবেন, রক্তের ডোনার রেডি আছে কিনা এসব মাথায় রাখতে হবে। ইদানিং ডেঙ্গুর লক্ষণ কিছু গোলমেলে। তাই একটু সন্দেহজনক বা জটিলতার দিচ্ছে যাচ্ছে বলে মনে করলে হাসপাতালে ভর্তি করানোই উত্তম।

Exit mobile version