রাজধানীর ধানমন্ডির ১০/এ রাস্তার ৫০ নম্বর বাড়িটা খুঁজে পেতে খুব বেশি বেগ পেতে হলো না। শুক্রবার বলেই সম্ভবত রাস্তায় লোকজন কম। তবে বাড়িটার সামনে দাঁড়িয়েই চমকে যেতে হলো। সাজানো গোছানো বাড়িটার সামনে দোকানপাট। সবই অস্থায়ী। এ কারণে সেগুলো দোকানপাট না বলে স্টল বলাই ভালো।
প্রতি শুক্রবার এই স্টলগুলো সাজিয়ে বসে থাকেন বিক্রেতারা। তবে যাঁরা এতক্ষণ ভাবছেন, খুব সাধারণ মানের বিক্রেতা তাঁরা, তাহলে ভুল হবে। কারণ, এই উদ্যোগের মূল রহস্যই হলো এক ছাদের নিচে নিরাপদ ও অরগানিক সব পণ্যের সমাহার ঘটিয়েছেন। পুরা ধানমন্ডিবাসীর জন্য এ উদ্যোগটা নিয়েছে এমআইবি স্পিরিট (মেইড বাংলাদেশ ১৯৭১) নামের একটি প্রতিষ্ঠান। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তাজা পণ্য নিয়ে শুক্রবার ওই বাড়িতে বসে এ আয়োজন। শুক্রবার বলেই আয়োজনটার নাম দেওয়া হয়েছে ‘উইক এন্ড স্পিরিট’।
মিলবে পরিবেশবান্ধব উপাদানে তৈরি ব্যাগ১৯ অক্টোবর শুক্রবার সকালে গিয়ে পরিচিত হওয়া গেল এমনই কিছু প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে। পণ্যের তালিকায় সবজি, দেশি মুরগি, ডিম, কলা যেমন আছে, তেমনি মধু, এমনকি ক্র্যাফট–জাতীয় পণ্যও রয়েছে। উদ্যোক্তাদের ভাষায়, এই পণ্যগুলো ‘তাজা’ এবং ‘ইউনিক’।
এমআইবির ডিজাইনার ও কমিউনিকেশন কর্মকর্তা ফয়সাল ইসলাম জানালেন, প্রতি শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলে এই উইক এন্ড স্পিরিট। শুরুর চেয়ে দিন দিন ক্রেতাসমাগম বাড়ছে বলে জানান তিনি। কথা হলো উদ্যোক্তা দিলারা আক্তারের সঙ্গে। তিনি চার রকমের মধু নিয়ে এসেছেন এখানে। তাঁর প্রতিষ্ঠানের নাম ‘হাইভ হানি’। বললেন, ‘অনেক দিন ধরে শুধু অনলাইনে আমরা মধু বিক্রি করছিলাম। এবার একটা প্ল্যাটফর্ম পেলাম। যেখানে প্রতি সপ্তাহে নিয়মিতভাবে বিক্রির পাশাপাশি নতুন নতুন ক্রেতা তৈরি হচ্ছে।’
প্রাকৃতিকভাবে আহরণ করা মধুহাইভ হানির পাশেই বসেছিল বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের স্টল। তারা মুক্তাগাছা থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় সবজি, দেশি ফল, মুরগিসহ বেশ কিছু পণ্য নিয়ে হাজির হয়েছে। সব কটি অরগানিক উপায়ে তৈরি বলে জানালেন এমআইবির মিডিয়া কো–অর্ডিনেটর শাহেদ লতিফ। বললেন, ‘আমরা এক ছাদের নিচে সব ধরনের নিরাপদ পণ্যের নিশ্চয়তা দিতে চাইছি। কারণ, ভেজালের এই সময় নিরাপদ পণ্যর পাওয়ার নির্দিষ্ট কোনো প্রতিষ্ঠান নেই। বিশেষ করে ধানমন্ডি এলাকায় তো নেইই। এ কারণেই উদ্যোগ নেওয়া।’
এখানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পাশাপাশি বই, পোশাক, ভেষজ পণ্য, নানা ধরনের ব্যাগ, কনফেকশনারি পণ্যসহ অনেক ধরনের স্টল রয়েছে। ফয়সাল ইসলাম জানালেন, ‘যে কেউ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে উদ্যোক্তা হিসেবে এখানে বসতে পারেন। তবে সে ক্ষেত্রে তাঁর পণ্য যেমন হতে হবে ইউনিক, তেমনি তাঁর উদ্যোক্তা হওয়ার গল্পটাও হতে হবে বাস্তবসম্মত। তাহলেই ক্রেতা ও বিক্রেতার এই স্পিরিটের সঙ্গে যুক্ত হবেন তিনি।’কেনাকাটার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন সবাইকে।