মোখলেসুর রহমান মাহিম: শীতের সকাল মানেই কুয়াশার চাদরে ঢাকা এক অপার্থিব সৌন্দর্য। প্রকৃতি যখন ধূসর আর শিশির ভেজা হয়, তখন কুয়াশার মধ্যে প্রকৃতি এক ধরনের মায়াময় আবরণ তৈরি করে। এই শীতল সৌন্দর্যকে উপভোগ করতে ময়মনসিংহের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি বছর কুয়াশা উৎসব আয়োজিত হয়। এটি শুধু আবহাওয়া উপভোগের উৎসব নয়, বরং সংস্কৃতি, কাব্য আর উষ্ণ বন্ধনের এক অপূর্ব মেলবন্ধন।

“শিশিরের মতো নির্মল হও প্রাণ, কুয়াশায় ভিজে মুক্ত অনির্বাণ।” এই থিম কে সামনে রেখে ত্রিশালের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে দুই দিন ব্যাপী বিখ্যাত “কুয়াশা উৎসব- ১৪৩১”। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতি বছর শীতকালীন কুয়াশা উৎসবের আয়োজন করে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীদের মধ্যে বিশেষ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।
এই উৎসবের মাধ্যমে গ্রামবাংলার শীতকালীন ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে উদযাপন করা হয়। কুয়াশা উৎসবের মূল উদ্দেশ্য হলো কুয়াশাকে আশার প্রতীক হিসেবে তুলে ধরা। জাককানইবির অবস্থান ত্রিশালে হওয়ায় এখানে ঘন কুয়াশা পড়ে। এই কুয়াশাকে কেন্দ্র করে উৎসবের আয়োজন করা হয়, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে আনন্দ ও ঐক্যের সেতুবন্ধন তৈরি করে। কুয়াশা উৎসবের বিভিন্ন কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে- আদিবাসী নৃত্য, নজরুল উৎসর্গে নৃত্য, গান ও কবিতা, লোকগান, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, চিত্রকলা ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী, পিঠা পার্বণ উৎসব ইত্যাদি। এছাড়াও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ব্যান্ড সংগীত পরিবেশন করা হয়, যা উৎসবকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে। কুয়াশা উৎসব শিক্ষার্থীদের মধ্যে সাংস্কৃতিক চেতনা ও ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধা জাগ্রত করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উৎসবের প্রস্তুতি ও আয়োজনের মাধ্যমে নিজেদের সৃজনশীলতা ও সাংস্কৃতিক দক্ষতা প্রদর্শন করে। ভবিষ্যতে এই উৎসব আরও সমৃদ্ধ ও ব্যাপক পরিসরে আয়োজনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক পরিচিতি বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা যায়।
কুয়াশা উৎসব প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সঙ্গে মানুষের আনন্দ ভাগাভাগির একটি দারুণ উদযাপন। শীতের কুয়াশাচ্ছন্ন পরিবেশে এ উৎসব আমাদের মনে নতুন শক্তি ও প্রাণের সঞ্চার ঘটায়।