বীজ রোপণ
- উত্তরাঞ্চল: মধ্য কার্তিক থেকে (নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ)।
- দক্ষিণাঞ্চল: অগ্রহায়ণের প্রথম সপ্তাহ থেকে দ্বিতীয় সপ্তাহ (নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে শেষ সপ্তাহ)।
- বীজের হার: প্রতি একরে প্রায় ৬০০ কেজি।
- রোপণের দূরত্ব:
- আস্ত আলুর জন্য: 60×25 সেমি।
- কাটা আলুর জন্য: 45×15 সেমি।
সার ব্যবস্থাপনা
সারের নাম পরিমাণ (গ্রাম/শতক) ইউরিয়া ১০০০ টিএসপি ৫৩০ এমওপি ৯৫০ জিপসাম ৪৫০ জিংক সালফেট ৩৫ ম্যাগনেসিয়াম সালফেট (অম্লীয় বেলে মাটির জন্য) ৩৫০ বোরণ (বেলে মাটির জন্য) ৩৫ গোবর ৪০ কেজি
- আস্ত আলুর জন্য: 60×25 সেমি।
- কাটা আলুর জন্য: 45×15 সেমি।
সারের নাম | পরিমাণ (গ্রাম/শতক) |
---|---|
ইউরিয়া | ১০০০ |
টিএসপি | ৫৩০ |
এমওপি | ৯৫০ |
জিপসাম | ৪৫০ |
জিংক সালফেট | ৩৫ |
ম্যাগনেসিয়াম সালফেট (অম্লীয় বেলে মাটির জন্য) | ৩৫০ |
বোরণ (বেলে মাটির জন্য) | ৩৫ |
গোবর | ৪০ কেজি |
সার প্রয়োগের পদ্ধতি:
১. প্রথম ধাপ:
রোপণের সময় জমিতে গোবর, অর্ধেক ইউরিয়া, টিএসপি, এমওপি, জিপসাম এবং জিংক সালফেট ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে।
২. দ্বিতীয় ধাপ:
বাকি ইউরিয়া রোপণের ৩০-৩৫ দিন পর, অর্থাৎ দ্বিতীয়বার মাটি তোলার সময় প্রয়োগ করতে হবে।
৩. বিশেষ ক্ষেত্রে:
- অম্লীয় বেলে মাটির জন্য ৩৫০ গ্রাম/শতক ম্যাগনেসিয়াম সালফেট প্রয়োগ করতে হবে।
- বেলে মাটির জন্য বোরণ প্রতি শতকে ৩৫ গ্রাম প্রয়োগ করলে ভাল ফলন পাওয়া যায়।
সেচ ও আগাছা ব্যবস্থাপনা
- প্রথম সেচ: বীজ আলু বপনের ২০-২৫ দিনের মধ্যে (স্টোলন বের হওয়ার সময়)।
- দ্বিতীয় সেচ: বীজ আলু বপনের ৪০-৪৫ দিনের মধ্যে (শুটি বের হওয়া পর্যন্ত)।
- তৃতীয় সেচ: বীজ আলু বপনের ৬০-৬৫ দিনের মধ্যে (শুটির বৃদ্ধি)।
উত্তরাঞ্চলে বাড়তি যত্ন:
- বেশি ফলনের জন্য ৮-১০ দিন পর গোড়ায় মাটি দেওয়া প্রয়োজন।
পোকামাকড় ব্যবস্থাপনা
১. কাটুই পোকা (Cutworm)
পোকা চেনার উপায়:
- ৪০-৫০ মিমি লম্বা শক্তিশালী কীট।
- কালচে বাদামী পিঠ এবং ধূসর সবুজ রঙের নরম ও তৈলাক্ত শরীর।
ক্ষতির নমুনা:
- চারা গাছ কেটে ফেলে এবং আলুতে ছিদ্র করে ক্ষতি করে।
- দিনের বেলায় মাটির নিচে লুকিয়ে থাকে।
ব্যবস্থাপনা:
- উপদ্রব কম থাকলে মাটি উল্টে কীট সংগ্রহ করে ধ্বংস করুন।
- সেচের সময় প্রতি শতকে ২০ মি.লি কেরোসিন তেল মিশিয়ে দিলে কীট মেরে ফেলা যায়।
- কীটনাশক প্রয়োগ করতে হলে প্রতি লিটার পানিতে ৫ মি.লি ক্লোরোপাইরিফস (ডারসবান) মিশিয়ে প্রয়োগ করুন।
২. জাব পোকা (Aphid)
ভূমিকা:
- ভাইরাস ছড়িয়ে বীজের মান নষ্ট করে।
ব্যবস্থাপনা: - ডাইম্যাক্রন বা বেনিক্রন ১০০ এস সি ডব্লিউ ১০ মি.লি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রয়োগ।
৩. আলুর সুতলী পোকা (Tuber moth)
ক্ষতির নমুনা:
- কীট আলুর মধ্যে সুড়ঙ্গ করে ক্ষতি করে।
ব্যবস্থাপনা: - আলু সংরক্ষণের সময় শুকনো বালি বা ছাই দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে।
রোগ ব্যবস্থাপনা
১. আলুর মড়ক/নাবী ধ্বসা (Late blight)
ক্ষতির নমুনা:
- পাতা ও ডগা কালো হয়ে যায় এবং পোড়া গন্ধ পাওয়া যায়।
ব্যবস্থাপনা: - রিডোমিল বা ডাইথেন এম-৪৫ ব্যবহার।
২. পাতার দাগ রোগ (Early blight)
ক্ষতির নমুনা:
- পাতায় বাদামি দাগ পড়ে এবং পাতা ঝরে যায়।
ব্যবস্থাপনা: - রোভরাল বা ডাইথেন এম-৪৫ স্প্রে করুন।
৩. ঢলে পড়া রোগ (Brown rot)
ক্ষতির নমুনা:
- গাছ ঢলে পড়ে এবং আলু দ্রুত পচে যায়।
ব্যবস্থাপনা: - রোগমুক্ত বীজ ব্যবহার এবং সেচ কমানো।
৪. কালো পা রোগ (Black scurf)
ক্ষতির নমুনা:
- টিউবারের গায়ে কালো গুটি দেখা যায়।
ব্যবস্থাপনা: - বীজ শোধন এবং গভীর রোপণ এড়িয়ে চলুন।
সাধারণ পরামর্শ:
- সুষম সার প্রয়োগ করুন।
- ফসল পর্যায় এবং রোগ প্রতিরোধী বীজ ব্যবহার নিশ্চিত করুন।
- জমিতে নিয়মিত সেচ দিন।