বাজরিগার পাখির ডিমের তৈরি খাবার বা এগফুড

সিদ্ধ মুরগি, কোয়েল বা হাঁসের ডিমের সাথে শাখ, সবজি, ফল, পোকা বা পাখির অন্য খাদ্যর সাথে মিশ্রণ করে যেই খাবার তৈরি হয়, তাকেই ডিমের তৈরি খাবার বা এগফুড বলা হয়।


বাজরিগার ডিমের তৈরি খাবার বা এগফুড কখন দিতে হয়?

যদি সম্ভব হয় সবসময়। পাখিকে সপ্তাহে অন্তত ৩ দিন দিলে পাখির শরীরের কোন পুষ্টির অভাব থাকবে না। সকালে দিয়ে, দুপুরে সরিয়ে ফেলবেন।


ডিমের তৈরি খাবার বা এগফুড না দিলে হয় না?

ডিমের তৈরি খাবার বা এগফুড দেয়া বাধ্যতামূলক না। তবে না দিলে কোন পুষ্টির অভাব হলে পাখির আচরণ বা আকারে পার্থক্য দেখা দিতে পারে। পাখি নিজের পায়খানা বেশী করে খেতে পারে। যদি ব্রীডিং করে, তাহলে বাচ্চাদের স্বাস্থ্য ভালো হলেও বাবা-মায়ের স্বাস্থ্য খারাপ হতে পারে। বাচ্চাদের বড় হতে সময় বেশী লাগতে পারে, বাচ্চাদের খাবারের চাহিদা আরো বেশী থাকতে পারে।


যেদিন ডিমের তৈরি খাবার বা এগফুড দিব, সেদিন বীজ দেয়া যাবে?

বীজ সবসময়ে দিয়ে রাখবেন। শুধু এগফুড যথেষ্ট না। পাখি তো খাচায় না পোষণ করলে এগফুড পাবে না। তাহলে এটা কেন দিতে হবে? বীজ খেলেও তো হবে।যেই পাখিরা এগফূড খায় না,তারা তাদের নিজের ডিম খেতে পারে, বা বাচ্চার রক্ত খেতে পারে পুষ্টির অভাবে।


শুনেছি ডিমের তৈরি খাবার বা এগফুড খেলে পাখির বাচ্চা মরে যাবে, তাহলে কেন দিতে বলছেন?

ডিমের তৈরি খাবার বা এগফুড খেলে পাখির বাচ্চা মরে যায় না। এটা মিথ্যা কথা। আমরা আমাদের পাখিদের এগফুড খাইয়ে বড় করেছি। যারা এই কথা বলে, তাদের জন্য সবসময়ে এগফুড খাওয়ালে তাদের লাভ কম হবে, যেহেতু ডিমের তৈরি খাবার বা এগফুড বানাতে খরচ একটু বেশী হয়। যদি আপনি ব্যাবসার চিন্তা করে থাকেন, তাহলে অন্য কথা। তবে পাখির ভালো হোক, এটাই আমাদের ইচ্ছা।


ডিমের তৈরি খাবার বা এগফুড দিলে কি পাখি বেশী ডিম-বাচ্চা দিবে?

খাদ্যের সাথে পাখির ডিম দেয়ার সংখ্যার কোন লিংক নেই। একেক সময়ে একেক সংখ্যার ডিম দিতে পারে – সেটা মেয়ে পাখির ovulation cycle এর উপর নির্ভর করে। কোন খাবার পাখির ডিমের সংখ্যা বাড়াতে পারবে না ফারটিলিটির ওষুধ ছাড়া – এবং এসব ওষুধ থেকে দূরে থাকাই ভালো।


ব্রীডিং এর আগে ডিমের তৈরি খাবার বা এগফুড দিতে হবে, না পরে?

ডিমের তৈরি খাবার বা এগফুড সবসময়ে দিতে হয়, তবে আপনি যদি কখনো না দিয়ে থাকেন আর ব্রীডিং করাতে চান, তাহলে অন্তত ব্রীড করানোর ১ মাস আগে থেকে প্রতিদিন খাওয়ানো শুরু করবেন।

ডিমের তৈরি খাবার বা এগফুডের Protein পাখির ডিমের কুসুমে পুষ্টি ভরে দিবে, যার ফলে বাচ্চারা  সঠিক ভাবে ডিমের ভিতরে বড় হবে। ডেভেলপমেন্ট ডিমের ভিতরে থেমে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যাবে। ডিমের calcium বাচ্চার হাড় শক্ত করবে, আর মেয়ের ডিমের খোসা শক্ত করবে। ছেলেদের spermএর quality অনেক ভালো হবে, যার ফলে ডিম জমার সম্ভাবনা বেশী থাকবে। এটা বাচ্চাদের পা বাঁকা হওয়ার সম্ভাবনাও কমিয়ে দিবে। শুধু তা নয়, যখন বাচ্চাদের খাবারের প্রয়োজন বেশী থাকে, তখন তাদের খাওয়াতে খাওয়াতে বাবা-মা দুর্বল হতে পারে। এগফূড তাদের দুর্বল হওয়া প্রতিরোধ করবে। তবে আপনি যদি সবসময়ে এগফূড দিয়ে থাকেন, তাহলে এই নির্দিষ্ট এক মাস এগফুড দেয়ার চিন্তা করতে হবে না। পাখির স্বাস্থ্য সবসময়ে ভালো থাকলে, বয়স ১০ মাসের বেশী হলে, আর তারা Breeding Condition  এ থাকলে ব্রীড করানো যাবে। এগফুড ভালো স্বাস্থ্যর গ্যার‍্যান্টি দিবে।


ডিমের তৈরি খাবার বা এগফুড কি এমনিতেও  প্রতিদিন দেয়া যাবে?

হ্যা, দেয়া যাবে। আপনি সপ্তাহে একদিন বানিয়ে প্রতিদিন অল্প করে দিতে পারেন। ফ্রিজে রেখে দিবেন বাকী অংশ। তবে পাঁচ দিনের পুরনো এগফুড না দেয়াই উত্তম।


ডিমের তৈরি খাবার বা এগফুড লবন দেয়া যাবে?

পাখি তার শরীরের প্রয়োজনীয় লবন শাখ, সবজি, ফল আর বীজ থেকে সংগ্রহ করে। আমরা যেই লবন খাই, তার মধ্য Sodium Chloride এর পরিমান বেশী থাকে। তাই এগফুডে লবন দেয়ার প্রয়োজন নেই, যেহেতু আপনি সাখ/সবজি দিচ্ছেন ডিমের সাথে।


ডিমের তৈরি খাবার বা এগফুড দিলে গ্রীট দেয়া যাবে? কোন ওষুধ দিতে হবে?

গ্রীট এমনেও দিতে হয় না বাজরীগারকে। ডিমের তৈরি খাবার বা এগফুড আর বীজ থেকে যেই পুষ্টি পাবে, তার  থেকে আর বেশী কিছুর প্রয়োজন হবে না। কোন ওষুধ ও দিতে হবে না।


আমার পাখি ডিমের তৈরি খাবার বা এগফুড খায় না। কি করা যায়?

সবার আগে শাখ-সবজি খাওয়ানোর অভ্যাস করুন। রাতে খাবার সরিয়ে, সকালে শাখ-সবজি দিবেন তাদের বীজের বাটিতে, অল্প কিছু বীজের সাথে। এটা খাওয়া শুরু করলে ডিম দিতে পারেন। পরে বীজ না দিয়ে শাঁখ দিয়েন ডিমের সাথে। ২-৩ সপ্তাহ ও লাগতে পারে এগফুড এর উপর ভরসা পেতে।


ডিমের তৈরি খাবার বা এগফুডে কোন ধরনের খাবার দেয়া যায়?

বেসিক ডিমের তৈরি খাবার বা এগফুড এর জন্য আমি সাধারণত সিদ্ধ ডিম, মশুর ডাল, কাচা মরিচ, গাজর, মটরের ডাল, বরবটি ব্যবহার করি। আপনি ইচ্ছে করলে এর সাথে আরো পুষ্টিসম্মত উপদান যোগ করতে পারেন।