পঞ্চদশ শতকে পর্তুগিজরা বাংলায় লঙ্কা মরিচ নিয়ে আসে। বাঙ্গালী একে ভালোবেসে ফেলে এবং এটি বাঙ্গালী রান্নার প্রধান উপকরণে রুপান্তরিত হয়ে যায়।
আজকে আমরা লঙ্কা মরিচ ছাড়া রান্নার কথা চিন্তা করতে পারি না। কিন্তু পঞ্চদশ শতকের আগে কি বাঙ্গালী ঝাল খেত না?
অবশ্যই খেতো। এবং রান্না ঝাল করার উপকরণ তখন ছিলো পিঁপুল মরিচ।
ভারতর পশ্চিম উপকূলের মালাবার থেকে গোলমরিচ এদেশে আনা প্রায় অসম্ভব ছিলো বিধায় বাংলার রান্নায় গোলমরিচ এর বদলে স্থানীয় সহজলভ্য পিঁপুল মরিচই ঝাল দেওয়ার প্রধান উপকরন হিসেবে ব্যবহৃত হোত।
এই পিঁপুল মরিচ এখন একটি প্রায় ভুলে যাওয়া উপকরণ এবং এখন আর এদেশে পিঁপুল মরিচের চাষ হয় না। পিঁপুল লতা এখন বনে জঙ্গলে অনাদরে অবহেলায় মানুষের চোখের আড়ালেই বেড়ে ওঠে।
উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলায় এর পাতা মাছের চচ্চড়িতে সুগন্ধি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তাছাড়া বাংলাদেশের বেশীরভাগ অঞ্চলের মানুষ পিঁপুল লতা চেনেই না, রান্নায় ব্যবহার করা তো দূরের কথা।
পিঁপুল মরিচকে ইংরেজিতে Long Pepper বলা হয় এবং পশ্চিমা রান্নায় এটি বিশেষায়িত খাবারে ব্যবহৃত হয় বিধায় এটির বেশ কদর আছে। এটি ভারত থেকে নিয়ে যাওয়া হয় বিধায় বেশ দামী মশলা হিসেবেই বিক্রিত হয়।
পশ্চিম ভারতে এটিকে পিঁপালি বলা হয়। পশ্চিম ভারতীয় রান্নায় এর বেশ প্রচলন আছে এবং এটি লঙ্কা মরিচের চেয়ে উচ্চমূল্যে বিকোয়।
আমাদের দেশে এটি এখন কোন কোন পশারির দোকানে বিক্রি হয় এবং তা অবশ্যই ভারত থেকে আমদানিকৃত।
আমাদের রান্নায় এর ব্যবহার নেই বললেই চলে। তবে ঢাকাইয়া নেহারী তৈরীতে এটি অত্যাবশকীয় উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।