এবার ঈদে কক্সবাজারে পর্যটকদের যে সতর্কতাগুলো মানতে হবে

আসন্ন ঈদুল আজহার ছুটিতে অনেকেই পরিবার এবং স্বজনদের নিয়ে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ছুটি কাটাতে যাবেন। সেখানে যেন কোনও ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে না হয়, সেজন্য বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছে টুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়ন।

রবিবার (৩ জুলাই) রাতে ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ঘুরতে আসার সচেতন করতে বেশ কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়। পোস্টে বলা হয়, কক্সবাজারে বাস থেকে নামার পর নিজেদের ইচ্ছামতো অটোতে উঠবেন, অবশ্যই গন্তব্যস্থল উল্লেখ করে ভাড়া ঠিক করে উঠবেন। অটোভাড়া সুনির্দিষ্ট ভাড়া নির্ধারণ করার উদ্যোগ নিয়েছে টুরিস্ট পুলিশ।

সম্ভব হলে আগেই হোটেল বুকিং দিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলা হয়, ‘বুকিং দেওয়ার আগে ভাড়া ঠিক করে নেবেন। যারা কক্সবাজার এসে হোটেল ঠিক করতে চান তারা অবশ্যই অটো চালকের কথায় কোনও হোটেলে যাবেন না। নিজেরা যাচাই করে, রুম দেখে ভাড়া ঠিক করে হোটেলে উঠবেন।’ হোটেলে ওঠার সময় অবশ্যই এনআইডি কার্ড বা জন্ম নিবন্ধন কার্ড সাথে আনবেন এবং হোটেলে কপি জমা দেবেন। আর বিচে নামার সময় মূল্যবান জিনিসপত্র হোটেলে রেখে আসাই উত্তম বলেই জানায় টুরিস্ট পুলিশ।

সম্প্রতি বিচে কিটকটে বসে অনেকেই ম্যাসাজ করান। এমন সার্ভিস নিতে মানা করছে টুরিস্ট পুলিশ। বলা হয়েছে, কিটকটে বসে কোনও ম্যাসাজ করাবেন না, ম্যাসাজ বয় দেখলে কিটকটের দায়িত্বে থাকা কর্মীকে সরিয়ে দিতে বলবেন অথবা ট্যুরিস্ট পুলিশকে জানাবেন। ম্যাসাজের আড়ালে মোবাইল-মানিব্যাগ নিয়ে যেতে পারে বলেও সাবধান করা হয়। ট্যুরিস্ট পুলিশ ম্যাসেজ বয়দের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

বিচ এলাকায় কোনও ভিক্ষুক, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষকে চাঁদাবাজি করতে দেখলে ট্যুরিস্ট পুলিশকে অবহিত করার কথা বলা হয়েছে পোস্টে। সেই সঙ্গে জানানো হয়, বিচ থেকে ভ্রাম্যমাণ হকার উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। শিগগিরই ভ্রাম্যমাণ হকার মুক্ত করা হবে। ভ্রাম্যমাণ হকারের কাছ থেকে কেনাকাটা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

আর বিচে ফটোগ্রাফার থেকে ছবি তোলার ক্ষেত্রে আগে থেকেই দরদাম ঠিক করে নিতে হবে উল্লেখ করে বলা হয়েছে, সম্ভব হলে তার লাইসেন্স আছে কিনা সেটা যাচাই করে নিবে এবং মোবাইল নাম্বার ও ফটোগ্রাফারের ছবি তুলে রাখবেন।

বিচবাইক, ওয়াটার বাইকে চড়ার ক্ষেত্রে তাদের রেট নির্ধারণ করে দেওয়া আছে উল্লেখ করে বলা হয়, ‘যাচাই করে দাম ঠিক করে এসব সার্ভিস ব্যবহার করবেন। পানিতে নামার ক্ষেত্রে যেখানে লাইফ গার্ড রয়েছে তার আশেপাশে নামার চেষ্টা করবেন।’ কোনও ধরনের হয়রানির আশঙ্কা দেখা দিলে ট্যুরিস্ট পুলিশের সহায়তা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।

গত ঈদে কক্সবাজারে হোটেলগুলোতে অতিরিক্ত দাম নেওয়ার অভিযোগ করা হয়। এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এবছর সে বিষয়ে বলা হয়েছে, হোটেলে খাবার গ্রহণের ক্ষেত্রে মূল্য তালিকা দেখে নিবেন। স্ট্রিট ফুড খাওয়ার ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।

কক্সবাজার বিচ এলাকা ও এর আশপাশ নিরাপদ উল্লেখ করে বলা হয়, ‘তবে সন্ধ্যার পর ঝাউবন ও অন্ধকারাচ্ছন্ন এলাকা এভয়েড করাই উত্তম।’

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের অতিরিক্ত উপ পুলিশ সুপার রেজাউল করিম বলেন, ২৪/৭ পর্যটকদের নিরাপত্তা ও সেবায় কাজ করে যাচ্ছে টুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা। সবার সহযোগিতায় একটি সুন্দর ও সুশৃঙ্খল বিচ উপহার দিতে কাজ করে চলেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়ন।

news