শেনচেনের কারখানাগুলোয় শোনা যায় সোল্ডারিং মেশিনের গুঞ্জন। যন্ত্রপাতি থেমে নেই, নিরবে চলছে বিপ্লব। মিলিমিটার আকারের কাঁচ আর মাইক্রন পরিমাণের সূক্ষ্মতায় বদলে যাচ্ছে প্রযুক্তি দুনিয়া।
সম্প্রতি শেনচেনের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান বাজারে এসেছে একটি নতুন প্যানোরামিক ক্যামেরা। চীনের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি এই ক্যামেরায় আছে ৩৬০ ডিগ্রি ছবি তোলার প্রযুক্তি। আছে উন্নত ইমেজ প্রসেসিং ও অ্যান্টি-শেক ফিচার। আঙুলের মতো ছোট এই ডিভাইস এক জায়গা থেকেই সব দিকের ছবি ধারণ করতে পারে, সহজে এডিট করার জন্য এতে আছে নানা ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট। এর সেলফি স্টিক তিন মিটার পর্যন্ত লম্বা, যা ড্রোনের মতো শট দিলেও তাতে স্টিক ধরা পড়ে না।
এই প্রযুক্তির পেছনে আছে চীনের অপটিক্যাল লেন্স ইন্ডাস্ট্রির গল্প—যা বিশ্বকে দেখাচ্ছে, চীনের প্রযুক্তি কতটা এগিয়েছে।
এক সময় কম খরচের ইলেকট্রনিক্স তৈরির জন্য পরিচিত শেনচেন এখন উদ্ভাবনের শহরে রূপ নিয়েছে। ‘সিটি অব ডিজাইন’ ও ‘সিটি অব মেকার্স’ নামে পরিচিত এই শহর গড়ে তুলেছে বিশ্বের সবচেয়ে সম্পূর্ণ অপটিক্যাল লেন্স ইকোসিস্টেমের একটি।
শেনচেনের স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো এখন শুধু মোবাইলের লেন্স নয়, তৈরি করছে গাড়ির উন্নত ক্যামেরা সিস্টেম, যা হালকা ওজনের এআর/ভিআর লেন্স, আর ইন্ডাস্ট্রিয়াল ভিশন মডিউল। এআই এডিটিং, ক্লাউড স্টোরেজসহ সম্পূর্ণ স্মার্ট ইমেজিং সল্যুশন এখন এ অঞ্চলের ফোকাস।
আগে ‘মেইড ইন চায়না’ মানে ছিল একরকমের পণ্যের বিশাল উৎপাদন। এখন চীনের স্মার্ট ম্যানুফ্যাকচারিং বদলে দিচ্ছে সেই ধারণা। আধুনিক কারখানায় দেখা যায় রোবটিক বাহু ব্যালে নৃত্যের মতো নিখুঁতভাবে ওয়েল্ড করছে, স্বয়ংক্রিয় গাড়ি নীরবে চলছে ডেটা নির্দেশনায়, এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইন্টারনেট প্ল্যাটফর্ম রিয়েল-টাইম ডেটা দিয়ে অপ্টিমাইজ করছে উৎপাদন ব্যবস্থা।
চীনের অর্থনৈতিক পরিকল্পনায় এখন নতুন গুণগত উৎপাদনশক্তি বড় ভূমিকা রাখছে। সম্পদের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে, জ্ঞান, প্রযুক্তি ও ডেটার ওপর ভর করে উচ্চ দক্ষতা ও গুণমান নিশ্চিত করছে এটি।
সূত্র: সিএমজি