জমে উঠছে ডিসি বইমেলা

ডিসি বইমেলা

ওয়াশিংটন ডিসি বইমেলা আমেরিকার ভার্জিনিয়ার আর্লিংটনের পেন্টাগন সিটি শেরাটন হোটেলের গ্র্যান্ড বলরুমে শুরু হয়েছে। ২২ জুন আমরা বাঙালি ফাউন্ডেশন আয়োজিত দুই দিনব্যাপী এই মেলা ইতিমধ্যে জমেও উঠেছে।

উদ্বোধনী দিনে সকালে ছিল অতিথিদের সঙ্গে আলাপচারিতা, মঙ্গল শোভাযাত্রা ‘কায়মনে বাঙালি হ’। দুপুর ১২টার দিকে হোটেল লবিতে অনুষ্ঠিত হয় চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। পরে বইমেলার সূচনা, অতিথিদের বক্তৃতা, প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ, বাংলাদেশ দূতাবাসের শুভেচ্ছা বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা বাণী, এই প্রজন্মের কথা, প্রজন্ম পরিবেশনা নিয়ে জমজমাট ছিল মেলা প্রাঙ্গণ।

প্রথম দিনে আসিফ এন্তাজ রবির বই পালিয়ে যাবার পর; শাহাব আহমেদের বই তিথোলসের তানপুরা; মোস্তফা তানিমের বই ভুল স্বর্গসহ বেনজির সিকদার, ইকবাল বাহার চৌধুরী, সন্তোষ বড়ুয়া, সামিনা আমিন, আমিনুল ইসলাম প্রমুখ লেখকের বই নিয়ে আলোচনা করা হয়।

অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে অতিথিদের সঙ্গে পৃষ্ঠপোষকদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। পরে শিল্পী নাহিদ নাজিয়ার গানের ভিন্নধর্মী পরিবেশনা সবাইকে মুগ্ধ করেছে। পরে লেখক সেলিনা হোসেনের সঙ্গে আলোচনার অনুষ্ঠান ‘কিছুক্ষণ’ আয়োজন করা হয়। চায়ে-টায়ে আড্ডায় ছিলেন সংবাদ পাঠক রোকেয়া হায়দার ও লেখক-গবেষক হাসান মাহমুদ।

কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক, সংবাদ পাঠক আনিস আহমেদ, সরকার কবির উদ্দিন, ইকবাল বাহার চৌধুরী, লেখক সাইদুর রব, কবি সৈয়দ আল ফারুক, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, প্রকাশক মনিরুল হক, মেজবাউদ্দিন আহমেদ, লুতফুর রহমান, শিশু-সাহিত্যিক হুমায়ুন কবির ঢালী, পপি চৌধুরী, প্রকাশক জুয়েল রেদোয়ানুর, সাংবাদিক অ্যান্থনি পিউস গোমেজ প্রমুখ সারা দিন ব্যস্ত ছিলেন কথায় ও সংলাপে। ওয়াশিংটন মেট্রো এলাকা ছাড়াও নিউইয়র্ক, নিউজার্সিসহ আশপাশের রাজ্য থেকে অনেকেই এসেছেন ডিসি বই মেলায়।

নিউইয়র্ক থেকে যোগ দিয়েছেন লেখিকা পলি শাহীনা। তিনি বলেন, নিউইয়র্কের বাইরে বইমেলাকে কেন্দ্র করে স্বদেশিদের উচ্ছ্বাস দেখে তিনি মুগ্ধ।

ওয়াশিংটন ডিসি বইমেলায় প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার স্টল। ছবি: প্রথম আলোমেলায় কবি সুবীর কাশ্মীর পেরেরা তাঁর কবিতার বই বিক্রি নিয়ে যেমন ব্যস্ত ছিলেন, তেমন দেখভাল করছিলেন অন্যান্য কবি সাহিত্যিকদের। পেরেরা বলেন, মাত্র দুই বছরেই ডিসি বইমেলা সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পেরেছে আয়োজকদের আন্তরিক প্রয়াসের কারণেই।

কবি সৈয়দ আল ফারুক বলেন, গত বছরও তিনি ডিসি বইমেলায় যোগ দিয়েছেন। মেলা সমৃদ্ধ হচ্ছে।

বই প্রদর্শনী রাত ১০টায় শেষ হয়ে গেলেও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলতে থাকে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত। এ সময় ‘পঞ্চকবির গান’ নামে একটি পরিবেশনা চলতে থাকে। গান পরিবেশন করেন কুমকুম, দিনার, সুমি, ফয়সল ও রাজদীপ।

বইমেলায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রকাশক অংশ নিয়েছেন। প্রকাশনীগুলোর মধ্যে রয়েছে—অঙ্কুর প্রকাশনী, অনন্যা, আহমেদ পাবলিশিং, পুথিনিলয়, সর্বজন কথা, নালন্দা, অন্বয় প্রকাশ, প্রীতম প্রকাশ, ঘুংঘুর ইত্যাদি। নিউইয়র্ক থেকে ছড়াটে, প্রথম আলো উত্তর আমেরিকাও তাদের লেখকদের বই নিয়ে একটি স্টল দিয়েছে ডিসি বই মেলায়।

শেরাটনের সুরম্য গ্র্যান্ড বলরুমে আয়োজিত এই বইমেলা ২৩ জুন রোববার আরও জমে উঠবে বলে আশা করছেন আয়োজকেরা। ২২ জুনের মতোই থাকবে বইয়ের স্টল, চিত্র প্রদর্শনী ও খাবারের স্টল। সারা দিন মেলা চলবে। শেষ হবে ২৩ জুন রাত ১০টায়।

আয়োজক সংগঠন আমরা বাঙালি ফাউন্ডেশনের সহসভাপতি দস্তগীর জাহাঙ্গীর বইমেলার ব্যবস্থাপনা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি সংগঠনের পক্ষ থেকে আগত অতিথিদের কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।