ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে যুক্তরাজ্য-এর বেরিয়ে যাওয়ার (ব্রেক্সিট) প্রক্রিয়া নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপের প্রস্তাবে আবারো একমত হতে ব্যর্থ হয়েছেন ব্রিটিশ আইনপ্রণেতারা। জোট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার চুক্তির বিকল্প হিসেবে সোমবার যে চারটি প্রস্তাব দেশটির প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে উত্থাপন করেছেন, তার কোনোটিই সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থন পায়নি। এর ফলে ব্রেক্সিট নিয়ে আরও অনিশ্চয়তায় পড়ল যুক্তরাজ্য। সংবাদসূত্র : বিবিসি, রয়টার্স
স্থানীয় সময় সোমবার রাতে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে ‘কাস্টমস ইউনিয়ন’ এবং ‘নরওয়ে পদ্ধতির ব্যবস্থাপনা’য় যুক্তরাজ্যকে একক বাজার ব্যবস্থায় রাখাসহ চার বিকল্প প্রস্তাবের ওপর ভোট হয়। কিন্তু এতে একটি প্রস্তাবও পাস হয়নি। হাউস অব কমন্সের নীতিনির্ধারণী এমপিদের চার ঘণ্টা বিতর্কের পর সবগুলো প্রস্তাব অল্প ভোটের ব্যবধানে বাতিল হয়ে যায়। এখন ব্রেক্সিটের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এর আগে হাউস অব কমন্সের সদস্যরা গত সপ্তাহে তৃতীয়বারের মতো ব্রেক্সিট চুক্তি প্রত্যাখ্যান করেন। ব্রেক্সিট পাস হলে প্রধানমন্ত্রী মে পদত্যাগ করবেন, এমন প্রতিশ্রম্নতি দেয়া সত্ত্বেও অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি।
যুক্তরাজ্যকে ইইউয়ের সঙ্গে একটি ‘কাস্টমস ইউনিয়নে’ রেখে দেয়ার প্রস্তাব সংখ্যাগরিষ্ঠ আইনপ্রণেতার সমর্থন পাওয়ার কাছাকাছি গেলেও শেষ পর্যন্ত তিন ভোটে পরাজিত হয়। যেকোনো চুক্তি গণভোটের মাধ্যমে নিশ্চিত করার আরেকটি প্রস্তাব সবচেয়ে বেশি ভোট টানলেও ২৯২-২৮০ ভোটে পরাজিত হয়। থেরেসা মে’র সরকার দৃঢ়ভাবে এই দুটি প্রস্তাবেরই বিরোধিতা করে। যুক্তরাজ্যের ব্রেক্সিট বিষয়ক মন্ত্রী স্টিভেন বার্কলে বলেন, ১২ এপ্রিল কোনো চুক্তি ছাড়াই ব্রিটেন ইইউ ত্যাগ করবে, এখনো সেই পরিস্থিতিই বিদ্যমান। এখন প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র নেতৃত্বে মন্ত্রিসায় বৈঠক হবে। ব্রেক্সিটের জন্য পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে সে বিষয়ে তারা সিদ্ধান্ত নেবেন।
আগামী ১২ এপ্রিল ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে যুক্তরাজ্যের। তাই থেরেসাকে আগামী ১২ এপ্রিলের মধ্যে হয় ইইউ’র কাছ থেকে ব্রেক্সিটের জন্য সময় বাড়িয়ে নেয়ার চেষ্টা করতে হবে। না হলে চুক্তি ছাড়াই ইইউ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এদিকে, সুশৃঙ্খলভাবে ইইউ থেকে বের হওয়া নিশ্চিত করতে চলতি সপ্তাহে মে তার চুক্তি প্রস্তাব চতুর্থবারের মতো ভোটাভুটির জন্য পার্লামেন্ট উপস্থাপন করতে পারেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
ব্রেক্সিট গণভোটের রায় অনুযায়ী, ২০১৯ সালের ২৯ মার্চ রাত ১১টায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদ ছাড়ার কথা ছিল যুক্তরাজ্যের। ব্রেক্সিট পরবর্তীকালে ইইউ-এর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্কের শর্ত নির্দিষ্ট করে তৈরি হয় ‘ব্রেক্সিট চুক্তি’। কিন্তু ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা তিন দফায় তা হাউস অব কমন্সে পাস করাতে ব্যর্থ হন।