স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, গত বুধবার ছিল কানাইপুর গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি বাহিনীর দোসররা কানাইপুরে ২৮ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করে। এর মধ্যে সিকদারবাড়ির ১০ জন রয়েছেন।
শহীদ পরিবারের সন্তান সাংবাদিক প্রবীর শিকদার জানান, কানাইপুর গণহত্যা দিবস উপলক্ষে তাঁর গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিভিন্ন সমস্যার কারণে যাওয়া হয়নি। তিনি কানাইপুর এলে ভাই সুবীরের বাড়িতেই থাকেন। তিনি কানাইপুর এসেছেন এ খবরের ভিত্তিতে তাঁকে টার্গেট করে এ হামলা চালানো হয়েছে। কারণ, তিনি যে ঘরে থাকেন দোতলার সেই ঘরের জানালার কাচ ভাঙচুর করা হয়েছে। বিভিন্ন অনিয়ম-অসংগতি-অত্যাচারের বিরুদ্ধে লেখালেখির কারণে একটি মহল তাঁর ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে রয়েছে।
সুবীর তাঁর বাবার নামে স্থাপিত শহীদ দীনেশ সিকদার বিদ্যাপীঠের পরিচালক। তাঁর ছেলে সুপন সিকদার বলেন, বুধবার রাত পৌনে ১০টার দিকে মোটরসাইকেলে করে ১০–১২ জন হেলমেটধারী তরুণ এসে বাড়ির কলবেল বাজায়। তিনি হেলমেটধারী তরুণদের দেখতে পেয়ে দরজা খোলেননি। এ সময় ওই তরুণেরা বাড়ির নিচতলায় ভাড়াটের বাসার জানালার কাচ বাঁশ দিয়ে ভেঙে ফেলে। আক্রমণকারী এক তরুণ ঘরের গ্রিল বেয়ে ওপরে উঠে এসে জানালার কাচ ভেঙে ফেলে। ওই দুর্বৃত্ত তাঁকে (সুপনকে) আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে দরজা খুলে দিতে বলে। পরে এলাকাবাসী এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
কানাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফকির বেলায়েত হোসেন বলেন, খবর পেয়ে তিনি দ্রুত ঘটনাস্থলে আসেন। তবে তার আগেই হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম নাসিম জানান, অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। কে বা কারা হামলা চালিয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। গ্রামবাসী জড়ো হয়ে এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। এ ব্যাপারে সুবীর সিকদারকে থানায় লিখিত অভিযোগ জানানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
থানা-পুলিশ জানায়, প্রবীর সিকদার অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘উত্তরাধিকার একাত্তর নিউজ’, বাংলা দৈনিক দৈনিক বাংলা একাত্তর ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক ত্রৈমাসিক পত্রিকা উত্তরাধিকার ’৭১–এর সম্পাদনা করছেন। তিনি ঢাকায় থাকেন। ফরিদপুরে দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করার সময় ২০০১ সালের ২০ এপ্রিল ‘সেই রাজাকার’ সিরিজে প্রতিবেদন লেখার কারণে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন প্রবীর সিকদার। তাঁর ডান পা হাঁটুর নিচ থেকে বাদ দিতে হয়।