দিন কয়েকের মধ্যেই অ্যাক্টিং ওয়ার্কশপ করতে ইউরোপ যাচ্ছেন ত্রিধা চৌধুরী। জোরকদমে চলছে প্রস্তুতি। তার মধ্যেই মাত্র দু’দিনের জন্য কলকাতায় এসেছিলেন। উদ্দেশ্য ওয়েব সিরিজ ‘সেই যে হলুদ পাখি’র প্রোমোশন। আগামী ৩০ জুন থেকে স্ট্রিমিং শুরু হবে এই ওয়েব সিরিজের। ধোঁয়া ওঠা কাবাব সামনে নিয়ে শহুরে হোটেলে আড্ডা দিলেন অভিনেত্রী।
বাঙালি অভিনেত্রী। কলকাতার মেয়ে। অথচ বাংলা ছবিতে আপনাকে প্রায় দেখাই যায় না। কেন?
আমি বিশ্বাস করি, ভাল পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করলে কাজ শেখা যায়। তাই যা অফার আসছে, সবেতে হ্যাঁ করি না। শুধু স্ক্রিনে আমাকে দেখা গেল, কিন্তু কেউ মনে রাখল না, অডিয়েন্সের কাছে কোনও ইমপ্যাক্ট তৈরি করল না, তা হলে কী লাভ? স্লো অ্যান্ড স্টেডি ফর্মে এগোতে চাই।
‘সেই যে হলুদ পাখি’তে শেখার জায়গা ছিল?
অফকোর্স। এই ওয়েব সিরিজে আমার ক্যারেক্টার বৈদেহী একজন মিউজিশিয়ান। যে একটা ব্যান্ড চালায় যার নাম ইউথেনেশিয়া। এমন চরিত্রে আগে অভিনয় করিনি। গান গেয়েছে উজ্জ্বয়িনীদি। গান এখানে খুব ইমপর্ট্যান্ট। গানের মাধ্যমেই ব্যাক স্টোরিটা জানা যাচ্ছে। বৈদেহীর জীবন, ইনফ্যাক্ট গানের সঙ্গে সবার জীবনই কোনও না কোনও ভাবে জড়িত।
এই চরিত্রে অভিনয়ের জন্য কাউকে ফলো করেছেন?
রূপমদা। ওকে ফলো করেছি। হলিউড বা বলিউড থেকে ইন্সপিরেশন নিতে চাইনি। আসলে রূপমদা মিউজিকের প্রতি খুব প্যাশনেট। বৈদেহীও তাই। ব্যান্ড ভাবলেই যেমন তার ভোকালিস্টের কথা মনে হয়। যেমন ‘ফসিলস’ মানেই রূপমদা, তেমনই ইউথেনেশিয়া ভাবলেই বৈদেহী। সেই একই ইমপ্যাক্ট।
রূপম ইসলাম, তা হলে আপনার পছন্দের মিউজিশিয়ান?
ইয়েস, রূপমদার ইউনিক ভয়েস। আমার তো দারুণ লাগে।
এখানে তো শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ করলেন, কেমন অভিজ্ঞতা?
প্রথমে নার্ভাস ছিলাম। হি গেভ মি দ্য ফ্রিডম টু ওয়ার্ক উইথ হিম।
আপনি কলকাতা না মুম্বই, কোথায় থাকেন, তা নিয়ে কিন্তু অনেকের কনফিউশন রয়েছে।
হা হা…। দেড় বছর হল মুম্বইতে শিফট করেছি। তার আগে অফার এলে কলকাতা থেকেই মুম্বই গিয়ে কাজ করতাম। ন্যাশনাল অ্যাড করতে করতেই অনেকে চিনতে শুরু করেন। তখন অফার আসতে শুরু করে।
একাই শিফট করলেন?
মা থাকে আমার সঙ্গে। উইদাউট ফ্যামিলি আই কান্ট স্ট্যান্ড এনিহোয়্যার।
অনস্ক্রিন যে কোনও পোশাকেই তো আপনি স্বচ্ছন্দ?
হুম, এখনও পর্যন্ত তো অসুবিধে হয়নি।
সুইম স্যুট পরা নিয়ে নাকি আপনাকে অনেক কথা শুনতে হয়েছে?
বিলিভ মি, লোকে জিজ্ঞেস করে, হাউ ডাজ ইট ফিল, তুমি সুইম স্যুট পরে শট দিলে? আরে সুইম স্যুট পরেই তো সুইমিং পুলে সুইম করি। শাড়ি পরে তো করি না। ফলে যা দেখি আমরা, তাই তো দেখাই। আরও একটা ব্যাপার, ইটস নট ইউ। ইটস ইওর ক্যারেক্টার। এটা কেন লোকে বোঝে না?
আর বোল্ড অবতার?
হয়তো মার্কেটিং গিমিকে বলতে পারেন, বোল্ড অবতার। কিন্তু আসলে দেখবেন, খুব সাধারণ এক মেয়ে সুইম স্যুট পরে সুইমিং করতে করতে এনজয় করছে। নাথিং বোল্ড, নাথিং অ্যাবাউট স্কিন শো। এখনও পর্যন্ত আমার ডিওপি বা ডিরেক্টর আমাকে ভালগার ওয়েতে দেখাননি।
অনস্ক্রিন ন্যুডিটি নিয়ে সমস্যা আছে?
আই হ্যাভ আ কনসার্ন উইট ন্যুডিটি। আমার মনে হয় ওটা আমি করতে পারব না। খোলা পিঠ দেখাতে পারব, কিন্তু পিঠের নীচের অংশ খোলা দেখাতে পারব না।
চরিত্র যদি সেটা ডিমান্ড করে?
না, ক্যারেক্টার ডিমান্ড করলেও না বলে দেব।
এই যে ইন্ডাস্ট্রিতে কাস্টিং কাউচ নিয়ে এত কথা শোনা যায়, আপনার অভিজ্ঞতা কী?
কাস্টিং কাউচ আছে। ইনফ্যাক্ট আই হ্যাভ বিন অ্যাপ্রোচড ইন মুম্বই।
অন রেকর্ড বলছেন?
ইয়েস, সত্যিটা তো সত্যিই। আমাদের অনেককেই এটা ফেস করতে হয়। এটা কর্পোরেট সেক্টরেও হয়। যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। তবে প্রত্যেকের ওপর নির্ভর করে, কারা কী ভাবে হ্যান্ডেল করবে। আমি এটার পার্ট হতে চাইনি। তাই সরাসরি না বলেছিলাম। তবে এর একটা অন্য দিকও রয়েছে।
কী রকম?
দেখুন, কেউ কাউকে ফোর্সফুলি কিছু করাতে পারে না। আর আমার সঙ্গে বিছানায় গেলে ছবিটা পাবে, এটা কিন্তু বলা হয় না। এখন কিন্তু এ ভাবে ইন্ডাস্ট্রিতে কাজও হয় না। এখন এত কাস্টিং কোম্পানি হয়ে গিয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়া এত স্ট্রং, যে কেউ চাইলে সবটা সামনে আনতে পারবে।
আর কী কী প্রজেক্ট আসছে আপনার?
একটা তেলুগু ছবি সাইন করেছি। কিন্তু মেজর যে প্রজেক্টটা আসছে, সেটা নিয়ে এখনই কিছু বলতে পারব না।
সেকি, কেন?
এটুকু বলতে পারি, বলিউড প্রজেক্ট। আসলে আমার কনট্র্যাক্ট অনুযায়ী ওদের থেকে অফিশিয়াল অ্যানাউন্সমেন্ট না হলে বলতে পারব না।
আর বাংলায়?
এ বছরটা একটু চাপ আছে। তার পর হয়তো বাংলায় কাজ করব।