কে এই মিয়া খলিফা ?

মিয়া-খলিফা (জন্মঃ ফেব্রুয়ারি ১০, ১৯৯৩) (এছাড়াও মিয়া ক্যালিস্টা হিসেবে পরিচিত) একজন লেবানিজ মার্কিন সামাজিক মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, ওয়েবক্যাম মডেল এবং প্রাপ্তবয়স্ক মডেল, যিনি ২০১৪ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত পর্ণোগ্রাফিক অভিনেত্রী হিসেবে সংক্ষিপ্ত সফল কর্মজীবনের জন্য পরিচিত।

বৈরুতে জন্ম নিয়ে মিয়া-খলিফা ২০০০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্থানান্তরিত হন। অক্টোবর ২০১৪ সালে তিনি পর্নোগ্রাফিতে অভিনয় শুরু করেন এবং ডিসেম্বরে পর্ণোহাব ওয়েবসাইট তালিকায় ১ নম্বরে অবস্থান নেন। তার পেশা নির্বাচন মধ্য প্রাচ্যে বিতর্কের বিষয় হয়েছিল, বিশেষ করে একটি ভিডিও, যেখানে তিনি ইসলামিক হিজাব পরিহিত অবস্থায় যৌনকর্ম সঞ্চালন করেছিলেন। যদিও প্রায় তিন মাস পরই তিনি পর্ন শিল্প থেকে অবসর নেন

প্রাথমিক জীবন

মিয়া-খলিফা ফেব্রুয়ারি ১০, ১৯৯৩ সালে লেবাননের বৈরুতে জন্ম নেন এবং পরবর্তীতে দশ বছর বয়সে ২০০০ সালে পরিবারের সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্থানান্তরিত হন। তার পরিবার ছিল ক্যাথলিক এবং তিনি সেই ধর্মের অধীনে বেড়ে উঠলেও পরবর্তীতে তার অনুশীলন করেন নি।[৭] কিশোর বয়সে তিনি মন্টগোমেরি কাউন্টি, মেরিল্যান্ডে বসবাস করেন এবং উচ্চ বিদ্যালয়ে ল্যাক্রসি বাজাতেন।[৪] কয়েক বছর পর ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস অ্যাট এল পাসো থেকে ইতিহাস বিষয়ে বিএ ডিগ্রী নেন তিনি।[৮] ফেব্রুয়ারি ২০১১ সালে তার ১৮ বছর বয়সের স্বল্প সময় পরই খলিফা একজন মার্কিন ব্যক্তিকে বিয়ে করেন।

কর্মজীবন

পর্নোগ্রাফি পেশা

খলিফা পর্ণোগ্রাফি চলচ্চিত্র শিল্পে প্রবেশ করেন অক্টোবর, ২০১৪ সালে।[৯] একটি স্থানীয় ফাস্ট ফুড রেঁস্তোরায় কাজ করার সময় একজন ভোক্তার সান্নিধ্যে তাকে জিজ্ঞেস করা হয় যে, তিনি পর্নোচলচ্চিত্রে কাজ করতে আগ্রহী কি না।[১০][১১] ২০১৫ সালের হিসেবে ১.৫ মিলিয়নেরও অধিক দর্শকসংখ্যার পাশাপাশি, ২২ বছর বয়সী খলিফা প্রাপ্তবয়স্ক ভিডিও শেয়ারিং পর্নহাবের সর্বাধিক অনুসন্ধানকৃত মডেল হিসেবে উন্নীত হন।[৯] সে বছর ২৮ ডিসেম্বরে পর্নহাব তাদের ওয়েবসাইটে নাম্বার ১ স্থানে খলিফার নাম প্রকাশ করে বহুদর্শী লিসা অ্যানের পরিবর্তে।[১২] সম্প্রতি তার এ খ্যাতি মধ্য প্রাচ্যের জনমনে কঠিন সমালোচনার অবতারণা করে, যেখানে লজ্জাকর হিসেবে তার পেশাজীবন কলঙ্কময় বলে মনে করা হয় এবং যে কারণে নিজ দেশেও খলিফার সম্মানহানি ঘটে।[১৩]

 

পর্নহাবে শীর্ষস্থান অধিকারের পরপর তিনি অনলাইন মৃত্যু হুমকি পান, যার মধ্যে ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড দ্য লেভান্টের একটি হস্তনির্মিত ছবিতে তাকে শিরচ্ছেদের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে এমন দেখানো হয় এবং একটি সতর্কবার্তায় তাকে নরকে যেতে হবে বলেও দাবী জানাো হয়, যার জবাব তিনি বলেন, “আমি সম্প্রতি একটু চিন্তিত”। লেবানিজ সংবাদপত্র খলিফার সমালোচনামূলক নিবন্ধ লিখেছে, যা তিনি সে অঞ্চলের অন্যান্য ঘটনাগুলির কারণে তুচ্ছ বলে মনে করেন।

দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে, খলিফা বলেন বিতর্কিত দৃশ্যটি ছিল বিদ্রুপাত্মক এবং এটি সেভাবেই গ্রহণ করা উচিত, এবং হলিউড চলচ্চিত্রে যে কোনো পর্নগ্রাফির তুলনায় অনেক বেশি নেতিবাচক ভাবে ইসলামকে চিত্রিত করা হয়ে থাকে বলে দাবি করেন। যারা সর্বজনীনভাবে তার প্রাপ্তবয়স্ক কর্মী হয়ে উঠার সিদ্ধান্তে সমর্থন জানানোর জন্য মুখ খোলেন তাদের মধ্যে ছিলের ব্রিটিশ-লেবানিজ লেখক নাসরি আতাল্লাহ, যারা বিবৃত দেন, “এই নৈতিক আবেগ… দুটি কারণের জন্য ভুল। প্রথম এবং সর্বাধিক, একজন নারী হিসেবে, তিনি তার শরীরের সঙ্গে যে কোনো কিছুর করার অধিকার রাখেন।” খলিফা তার বিতর্ক সম্পর্ক তিনি মন্তব্য করেছিলেন। তাছাড়াও তিনি বলেন, তার পেশা নির্বাচনের কারণে তার বাবা তার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দেন।

পর্ণহাব থেকে প্রাপ্ত উপাত্ত অনুযায়ী, ৩-৪ জানুয়ারি, ২০১৫ সালে, মিয়া খলিফার অনুসন্ধানকারী পাঁচ দফা উন্নীত হয়। যার এক চতুর্থাংশ অনুসন্ধানকারী ছিলেন লেবানন থেকে, মূল অনুসন্ধানকারী ছিল মধ্যপ্রাচ্যের সিরয় এবং জর্দনের কাছাকাছি অঞ্চল থেকে।হিজাব সম্পর্কিত বিতর্কের কারণে, জুলাই ২০১৬ সালে, তিনি ব্রিটিশ পুরুষ ম্যগাজিন লোডেড কর্তৃক তাদের “দ্য ওয়ার্ল্ড’স টেন মোস্ট নটোরিয়াস পর্ন স্টার্স” তালিকায় পঞ্চম স্থানে অবস্থান নেন।

জুলাই ২০১৬ সালে দ্য ওয়াশিংটন পোস্টে এক সাক্ষাৎকারে, খলিফা জানায় যে তিনি কেবল তিন মাসের জন্য পর্নোগ্রাফিতে অভিনয় করেছিলেন এবং এক বছরের আগেই পর্নশিল্প ছেড়ে দিয়েছিলেন, “আরো স্বাভাবিক কাজে” যুক্ত হতে। তিনি বলেন, “আমি এটা আমার বিদ্রোহী পর্যায় ছিল বলে মনে করি। এটা সত্যিই আমার জন্য ছিল না। আমি ধীরে ধীরে নিজেকে এর থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে চেষ্টা করি”। মে ২০১৬ সালের অনুযায়ী, খলিফা এখনো একজন ওয়েবক্যাম মডেল হিসেবে কাজ করছেন।

মিয়া খিলিফা