শান্তিপূর্ণ সমাজ ও দেশ গঠনে ভালো মানুষের প্রয়োজন। সুন্দর চরিত্রের অধিকারী ভালো মানুষেরা সমাজ থেকে অশান্তি দূর করতে পারেন। পৃথিবীতে তারা গড়ে তুলতে পারেন সৌহার্দ্যরে পরিবেশ। যে কারণে রাসুল সা. মানুষের সুন্দর চরিত্রের প্রতি তার পছন্দের কথা উম্মতকে জানিয়েছেন।
রাসুল সা. বলেছেন, ‘কেয়ামতের দিন তোমাদের মধ্যে সেই হবে আমার অতি প্রিয় ও সর্বাপেক্ষা নিকটে উপবেশনকারী, তোমাদের মধ্যে যে সুন্দরতম চরিত্রের অধিকারী। আর সেই হবে আমার কাছে অপ্রিয় ও সবচেয়ে দূরে অবস্থানকারী, যে বেশি বেশি ও বড় বড় কথার মাধ্যমে অহঙ্কার করে।’ (মিশকাত শরিফ)
উপরোক্ত হাদিসে প্রমাণিত হয় অহংকারী ও বাক্যবাগিশরা আমাদের সমাজের মানুষের কাছে প্রিয় নয়, তেমনি আল্লাহর রাসূলের কাছেও অপ্রিয়। নিজেকে রাসুল সা.-এর প্রিয় উম্মত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে অহঙ্কার ও বড় বড় কথা বলার কুঅভ্যাস ছাড়তে হবে। শুধু অহঙ্কারী হওয়া থেকে দূরে থাকা নয়, অপচয় এবং ভোগ-বিলাসিতা থেকেও দূরে থাকতে হবে। ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল সা. বলেছেন- ‘যে ব্যক্তি সোনা অথবা রুপার পাত্রে বা সোনা-রুপা মিশ্রিত পাত্রে পান করে, সে নিজের পেটে জাহান্নামের আগুন ঢালে।’ (দারু কুতনি থেকে মিশকাতে)
এই হাদিসে স্পষ্ট করা হয়েছে, সহজ-সরল জীবনযাপনই মুমিনদের কাম্য হওয়া উচিত। অপচয় ও ভোগ-বিলাসের মাধ্যমে জাহান্নামকে আমন্ত্রণ করা কারোরই উচিত নয়। পবিত্র কোরআনের সূরা আশ শামসের ৯ ও ১০ আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘সেই সফলকাম হবে যে নিজেকে পবিত্র করবে এবং সেই ব্যর্থ হবে, যে নিজেকে কলুষাচ্ছন্ন করবে।’ উপরোক্ত দুটি আয়াতে স্পষ্ট করা হয়েছে আল্লাহর কৃপা লাভ করতে হলে নিজেকে পবিত্র করতে হবে, সব ধরনের কলুষতা মুক্ত হতে হবে। নিজের আত্মাকে অন্ধকার থেকে বের করে আনতে হবে। আল্লাহর কাছে নিঃশর্তভাবে আত্মসমর্পণ করতে হবে। আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে নিজেকে সংশোধন করতে হবে।
আমরা যদি পারিবারিক জীবনে, সামাজিক জীবনে, রাষ্ট্রীয় জীবনে শান্তি চাই তবে আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে নিজেদের শুদ্ধ করতে হবে। নিজেদের বিবেক ও বুদ্ধিকে কাজে লাগিয়ে কোনটি ভালো আর কোনটি মন্দ উপলব্ধি করতে হবে। আল্লাহ আমাদের সত্য, সুন্দর ও কল্যাণের পথের অনুগামী হওয়ার, তাঁর প্রতি অনুগতশীল হওয়ার তাওফিক দান করুন।