Kidz Stories for Kids ছোটদের সায়েন্স ফিকশন গল্প : ছায়া By abc on Jun 29, 2019Sep 19, 2022 সায়েন্স ফিকশন গল্প ছায়ালোকটা ছুটে এসে দাঁড়ালো ধানক্ষেতের আলের ওপর। এরপর চিৎকার করে বলতে লাগলো, ‘খায়া ফেলতাসে! সব খায়া ফেলতাসে!’ মুনসি নামের টিঙটিঙে লোকটার কথা শুনে সবাই এগিয়ে এল। ঘটনা কী? ঘটনা হলো ইছাপুরা গ্রামের জঙ্গলে কদিন আগে এক অদ্ভুত প্রাণী এসেছে। কেউ বলে হাতির বাচ্চার মতো, কেউ বলে ভালুকের মতো। লম্বা একটা জিভ আছে। সুরুৎ সুরুৎ করে টানে।সুরুৎ করে প্রাণীটা কী খেয়ে ফেলেছে? কলের পানি? ভাতের মাড়? করলা, আলু, চালকুমড়ো নাকি কই মাছের ঝোল? ঢেঁকি শাক বা শিমের বিচির তরকারি নয়তো? ‘ছায়া খায়া ফালাইসে! আমগো সক্কলের ছায়া! গাছের ছায়া! বাড়ির ছায়া! ছাতার ছায়া!’ তাই তো! কারো ছায়া নেই! ছায়া গেল কই! হাত পা নেড়ে কিছুক্ষণ পরীক্ষা করলো ধানক্ষেতে থাকা লোকগুলো। তারপর যখন বুঝতে পারলো যে সত্যিই তাদের ছায়া গায়েব হয়ে গেছে, তারা আবার ক্ষেতের কাজে মন দিল। এক দৌড়ে গেল গ্রামের ক্ষমতাবান লোকটার বাড়িতে গেল মুনসি। সভা হচ্ছিল উঠোনে। চিৎকার করে জানিয়ে দিল জঙ্গলের অদ্ভুত প্রাণীটা সবার ছায়া খেয়ে ফেলেছে। ‘তুমি কেমনে জানো যে ওই প্রাণিটাই ছায়া খাইসে?’ ‘আমি নিজের চোখে দেখসি। সুরুউউত করে টান দিসে, আর সব ছায়া গিয়া ঢুকছে ওর পেটে।’ সভায় উপস্থিত সবাই খেয়াল করলো তাদের কারো ছায়া নেই। কেউ একজন বলল, ‘তাই তো কই এত গরম লাগে ক্যান।’ ক্ষমতাবান লোকটাও খেয়াল করলো তার ছায়া নেই। তার খুব রাগ হলো। গ্রামের গরিব লোকগুলোর ছায়া নেই, তারও নেই। ব্যাপারটা তার ভাল লাগলো না। তার সঙ্গে সারাদিন ঘুর ঘুর করে যে লোকটা তাকে ডাক দিল- ‘রুস্তম!’ ‘জ্বি হুজুর।’ ‘গরম লাগতাসে, ছাতা ধর।’ ‘হুজুর ছাতা ধইরা কী লাভ, ছায়া তো নাই।’ রাশভারি লোকটা খুব খেপে গেল এবং ঘরের ভেতর চলে গেল। বাকিরাও উঠোন ছেড়ে উঠে গেল। ছায়া নিয়ে তাদের কাউকে চিন্তিত দেখা গেল না। তবে একটা অদ্ভুত ব্যাপার হলো বাড়ির ভেতর কিন্তু ছায়া আছে। মানুষগুলো তাই বাইরে বেশিক্ষণ না থেকে দ্রুত বাড়িতে ফিরে গেল। এভাবে কেটে গেল কয়েকটা দিন। গ্রামের লোকজন সময় পেলেই ছায়া খোঁজে। কিন্তু পায় না। ক্ষমতাবান লোকটার মতো যারা এতদিন ছাতা হাতে ঘুরে বেড়াতো তারা আর ঘর থেকে বের হয় না। কারণ ছায়া ছাড়া বের হতে তাদের লজ্জা করে, গরমও লাগে বেশি। অদ্ভুত ছায়াখেকো প্রাণিটাকে মাঝে মাঝে দেখা যায়। কেউ কেউ দেখেছেও এর মধ্যে। তাদের মতে গোলগাল নাদুস নুদুস একচোখা শিংওয়ালা প্রাণীটা বাচ্চাদের মতো। চোখ বড় বড় তাকিয়ে থাকে আর মাঝে মাঝে ফুঁপিয়ে ওঠে। মনে হয় তার অনেক খিদে। আরো দুতিন গ্রামের ছায়া পেলে পেট ভরতো। একদিন জঙ্গলে হাঁটছিল কিশোর রতন। বনে ছায়া নেই। গরমে ঘেমে একাকার। হঠাৎ দেখে একটা গাছের ডালে ঝুলছে অদ্ভুত প্রাণীটা। রতনকে দেখে ভয় পেয়েছে। ‘ওই, তুই আমার ছায়া খাইছস ক্যান! ছায়া ফিরাইয়া দে! আমার গরম লাগে।’ ‘আমি ছায়া ফেরত দিতে পারবো না।’ বাহ এ দেখি কথাও বলে! তাও আবার শুদ্ধ বাংলায়! এ কয়দিনে তাহলে প্রাণীটা ভাষাও শিখেছে। ‘ক্যান দিবি না! একশবার দিবি!’ ‘আমার অনেক দুঃখ। ছায়া খেলে দুঃখ কমে।’ ‘অ্যাঁ, তুই আইসক্রিম খাবি? আইসক্রিম খাইলে আমার দুঃখ কমে। তোর বাড়ি কই, মা-বাপ কই?’ ‘আমার বাড়ি অনেক দূর। অন্য গ্রহে। বাবা আছে ওখানে। মা নেই।’ ‘ওহহ! আচ্ছা বেলা অনেক হলো। বাড়ি গেলাম।’ রতন বাড়ি গেল। মা রান্না করে রেখেছে। মাকে গিয়ে বলল অদ্ভুত প্রাণীটার কথা। সব শুনে মা বললেন, ‘আহারে..’। এরপর একান ওকান হয়ে সবার কানে গেল। গ্রামবাসী ঠিক করলো অদ্ভুত প্রাণীটাকে ধরবে। সকালে রতনের দেখানো পথে গ্রামবাসী জঙ্গলে গিয়ে ঘিরে ফেলল প্রাণীটাকে। কারো হাতে লাঠি। কারো হাতে জাল। মুনসি চেঁচিয়ে বলল, ‘তুই ছায়া ফেরত দে। নইলে মাইর দিমু।’ ‘আমি ছায়া ফেরত দিতে পারি না। আমার অনেক দুঃখ।’ ‘তোর দুঃখ তাতে আমগো কী! ছায়া ফেরত দে! গরম লাগতাসে!’ ধমক শুনে প্রাণীটা ভয় পেলেও কিছু বলল না। মনে হয় সে ছায়া ফেরত দিতে পারবে না। যেটা খেয়ে ফেলেছে সেটা ফেরত দেবে কী করে! লাঠি হাতে এগিয়ে আসছে দুজন। একটু পরই মার পড়বে। এমন সময় দৌড়ে আসলো রতনের মা। এগিয়ে গেল প্রাণীটার দিকে। তাকে কোলে নিয়ে গাছ থেকে নামালো। রতনের মায়ের দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে প্রাণীটা। কড়া রোদের কথা ভুলে গিয়ে গ্রামের লোকজনও হা করে তাকিয়ে দেখছে। যারা লাঠি হাতে এগিয়ে গিয়েছিল, তারা দুপা পেছাল। রতনের মা প্রাণীটার মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন, ‘তোর খিদা লাগছে? ছায়া খাবি?’ প্রাণীটা দ্রুত উপর-নিচ মাথা নাড়লো। রতনের মা তার পরনের অনেক পুরনো শাড়িটার আঁচল তুলে দিলেন অদ্ভুত প্রাণীটার মাথায়। কী আজব! প্রাণীটার মাথায় ছায়া পড়লো! রতনের মা তার আঁচল ধরে রেখেছেন। একটু পরই চোখ বুঁজে ঘুমিয়ে পড়লো প্রাণীটা। তৃপ্তির ছাপ তার মুখে। এমন ছায়া সে জীবনেও খায়নি। এদিকে গ্রামবাসী তখনও টের পায়নি যে তাদের ছায়া আবার ফিরে এসেছে। Post Views: 8,136 Related posts: গল্প : বোয়াল মাছ এবং গাছ বন্ধুর গল্প জাদুর কাগজের গল্প : ছোটদের গল্প The Woodcutter and the Magical Tree : Story for Kids শিশুদের গল্প : মেঘে ঢাকা চাঁদ Jack and Sara’s science project ছোটদের সায়েন্স ফিকশন গল্প : বোতল মামা সিরিজ : আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স Sci-fi story written by AI : Creator and Destroyer Picnic Story of Nuha and Faiza Matilda and the Alien : An Ai generated Roald Dahl style story New Rhyme for kids : World Awakens Rhyme for kids about a Funny Cow গাছটি ডাইনোসর যুগ থেকে আছে Bubble Fun Kids story How to make Bubble Jack made an aeroplane | Story for Kids 10 puzzles with answers for kids ইতিহাসের ৫টি ভুতুড়ে জাহাজ সায়েন্স ফিকশন গল্প : একরোখা রতন ছড়া : মেঘের কিনারে : কামাল হোসাইন 10 fun facts about comic books Nuha’s Abstract Paintings kidskidzstories for kids