ভালোবাসা—একটি শব্দ, যা শুনলেই হৃদয়ে এক নরম অনুভূতি জাগে। ভালোবাসা মানেই স্নেহ, মমতা, দায়িত্ববোধ, আত্মত্যাগ এবং সম্মান। তবে ভালোবাসার নামে যদি অনৈতিকতা, লজ্জাহীনতা এবং সীমালঙ্ঘন হয়, তবে সেটি আর ভালোবাসা থাকে না; বরং হয়ে যায় এক ধ্বংসাত্মক আবেগ, যা সমাজ ও নৈতিকতার জন্য হুমকি।
আমি ভালোবাসাকে স্বাগত জানাই, যদি তা হয় পবিত্র, বৈধ এবং আল্লাহর বিধানের মধ্যে সীমাবদ্ধ। কিন্তু আমি ঘৃণা করি সেই ভালোবাসাকে, যা অশ্লীলতা, অবৈধ সম্পর্ক এবং ইসলামের নির্দেশিত পথের বিপরীতে চলে। ভালোবাসার জন্য নির্দিষ্ট কোনো দিনের প্রয়োজন নেই, কারণ পবিত্র ভালোবাসা সারাজীবনের জন্য।
ভালোবাসার প্রকৃত সংজ্ঞা: ইসলাম কী বলে?
ইসলাম ভালোবাসাকে কখনোই নিষিদ্ধ করেনি, বরং ভালোবাসাকে শৃঙ্খলাবদ্ধ, মর্যাদাপূর্ণ এবং কল্যাণকর করে দিয়েছে।
“নিশ্চয়ই যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছে, দয়াময় আল্লাহ তাদের জন্য (মানুষের অন্তরে) ভালোবাসা সৃষ্টি করবেন।”
(সূরা মারইয়াম: ৯৬)
“তোমরা একে অপরকে ভালোবাসা ছাড়া জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।” (মুসলিম শরীফ)
“তাদের মধ্যকার সম্পর্ক করলাম ভালোবাসা ও দয়ার।” (সূরা রুম: ২১)
এ থেকে বোঝা যায়, ভালোবাসা হারাম নয়, বরং একে সঠিক পথে পরিচালিত করা জরুরি।
পবিত্র ভালোবাসা বনাম অপবিত্র ভালোবাসা
ভালোবাসা দিবসের প্রয়োজন নেই, যদি ভালোবাসা হয় সত্য
ভালোবাসার জন্য কি ১৪ ফেব্রুয়ারি দরকার? ভালোবাসা কি শুধু এক দিনের বিষয়? প্রকৃত ভালোবাসা তো প্রতিদিনের, সারাজীবনের।
ভালোবাসা প্রকাশের সঠিক উপায়
ভালোবাসা প্রকাশ করতে চাইলে সেটি হতে হবে নৈতিকতার মধ্যে, সম্মানজনকভাবে।
ভালোবাসা মহান, যদি তা হয় পবিত্র ও বৈধ। তবে ভালোবাসার নামে যদি হয় অশ্লীলতা, নৈতিকতার অবক্ষয় ও গুনাহের পথ, তাহলে সেটি ভালোবাসা নয়, ধ্বংসের কারণ।
ভালোবাসা মানে শুধু আবেগ নয়, বরং দায়িত্ব, আত্মত্যাগ ও কল্যাণ। ভালোবাসাকে কলুষিত না করে একে পবিত্র ও আল্লাহর বিধানের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা আমাদের দায়িত্ব।
তাই আসুন, ভালোবাসাকে সত্য, শুদ্ধ ও কল্যাণকর রাখি। ভালোবাসা হোক আল্লাহর জন্য, ভালোবাসা হোক সারাজীবনের!
লেখক: তৌফিক সুলতান, সহঃ প্রধান শিক্ষক – ভাওয়াল ইসলামিক ক্যাডেট একাডেমি,কাপাসিয়া, গাজীপুর।
গবেষক – ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, ঢাকা
এবং মহা পরিচালক – ওয়েল্ফশন মানবকল্যাণ সংঘ