শরতে ঘুরে বেড়ানোর জায়গা | কাশফুল কোথায় দেখবেন

এইসময় আকাশে শিমুল তুলোর মতো ভেসে চলে সাদা মেঘের ভেলা। শেফালি ফুলের মিষ্টি গন্ধ সজীব গাছপালার উপর দিয়ে বয়ে যায়। শরতের আগমনে প্রকৃতি নির্মল ও স্নিগ্ধ থাকে। শরৎকালের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ফুল হল কাশফুল। আর শরতে ঘুরে বেড়ানোর জায়গা নিয়ে হাজির হলাম আবারও।

নদীর তীরে সাদা কাশফুল, ভোরের হালকা শিশির ভেজা শিউলি ফুল। সব মিলিয়েই শরৎ যেন শুভ্র তার ঋতু। শরতের রাতের চাঁদের আলোয় শুভ্রতার যেন আকাশ থেকে কল্প কথার পরীরা ডানা মেলে পৃথিবীতে প্রত্যায়মান হয়। তাই কবির ভাষায় শরতের সৌন্দর্য প্রকাশ পায়,

অনেক তো শরতের সৌন্দর্য নিয়ে আমরা জানলাম। এবার এই সৌন্দর্য উপভোগে কোথায় ভ্রমণ করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করব।

শরতে ঘুরে বেড়ানো জায়গা | দিয়াবাড়ি

রাজধানীর উত্তরায় দিয়াবাড়ি জায়গাটা কাশবনের বাস হিসেবে ভালোই জনপ্রিয়। কাছাকাছি হওয়াতে শরৎকালীন  এই সময়ে ভালোই লোকজনের সমাগম হবে। কাশফুলের মাঝে ছবি তোলার হিড়িক পড়বে, বিশেষ করে মেয়েদের। এসব বাড়াবাড়িতে বিরক্ত হয়ে হয়তো কোনো বেরসিক মানুষ আর ওইমুখো হবে না দিনকয়েক।

দূরে কোথাও যেতে মানা হলে আপনার কাশবন দর্শন দিয়াবাড়ি জায়গাটা খারাপ নয়,তবে যতোই কাছাকাছি হওয়াতে যান না কেন ফিরতে হবে সন্ধ্যার আগে।

 

শরতে ঘুরে বেড়ানোর জায়গা | মায়াদ্বীপ

এই শরতে স্বল্প খরচে ঘুরে আসুন নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনার গাঁ উপজেলার বারদী ইউনিয়নের নুনেরটেক গ্রামের মায়াদ্বীপ থেকে। মেঘনা নদীর বুক চিরে জেগে ওঠা অপূর্ব এক দ্বীপ, যার নাম মায়াদ্বীপ।

ঈশা খাঁ যেখানে এক সময় বাংলার রাজধানী স্থাপন করেছিলেন, সেখান থেকে নদীপথে মাত্র চার কিলোমিটার দূরে মায়াদ্বীপ। শরতে ঘুরে বেড়ানোর জায়গা হিসেবে এককথায় চমৎকার।

স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে এটি নুনেরটেক নামেও পরিচিত। মেঘনার বুকে কাশফুলের মায়া ছড়িয়ে থাকে শরৎকালে। এই দ্বীপে কাশফুলের সৌন্দর্য ব্যতীত এই দ্বীপের জীবনযাত্রার সাথে পরিচিত হতে পারবেন। ঢাকার গুলিস্তান থেকে বাসে চড়ে বৈদ্যের বাজার থেকে মেঘনার ঘাট থেকে ইঞ্জিন নৌকা ভাড়া করে মায়াদ্বীপ যাওয়া যায়।

 

শরতে ঘুরে বেড়ানোর জায়গা | মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ

নদীর তীরে বালুময় প্রান্তরে শরতে কাশফুলের মেলা বসে। আর বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধেও বসে শরতের আড্ডা। এ ছাড়া বসিলা সড়ক ধরে এগিয়ে ওয়ালপুরের বিভিন্ন ফাঁকা জমিতে কাশফুলের সমারোহ দেখা যায়।

শরতে ঘুরে বেড়ানোর জায়গা | কুয়াকাটা

ঘুরে বেড়ানোর জন্য সাগরকন্যা কুয়াকাটা বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের একটি সমুদ্রসৈকত এবং পর্যটন কেন্দ্র। এই শরতে ঘুড়ে বেড়ানোর জায়গা হিসেবে কুয়াকাটা দর্শন খুব একটা মন্দ নয়‌। সমুদ্রবিলাসী, সমুদ্রসৈকত ও দূরযাত্রার ট্রাভেলার তাদের জন্য এটি সুন্দর বাছাইকৃত জায়গা হবে।

কারণ, কুয়াকাটা দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র সমুদ্রসৈকত যেখান থেকে সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয় দুটোই দেখা যায়। আর শরতে আকাশ পরিষ্কার থাকায় কুয়াকাটাও হতে পারে ভ্রমণপিপাসুর অন্যতম গন্তব্য।

এখানে আরও দেখতে পাবেন কুয়াকাটা বৌদ্ধ মন্দির, ঐতিহ্যবাহী শতবর্ষী নৌকা, কুয়াকাটার কুয়া, জাতীয় উদ্যান, কাউয়ার চর, গঙ্গামতী চর, ঝাউবন, লালকাঁকড়ার চর, রুপালি দ্বীপ, বৌদ্ধ বিহার, মিষ্টি পানির কূপ, রাখাইন পল্লী, লেবুর চর ইত্যাদি।

 

শরতে ঘুরে বেড়ানোর জায়গা | কেরানীগঞ্জ

কেরানীগঞ্জের হযরতপুরের কালিগঙ্গা নদীর তীরে ও শরত মৌসুমে কাশফুলের সমোরহ ফুটে ওঠে।বছিলা সেতু পার হয়ে আরও কিছুটা এগোলে হযরতপুর। খেয়া নৌকায় নদী পার হলে দেখা মিলবে কাশবনের। যারা কাশফুলপ্রেমী,আর কেরানীগঞ্জ বসবাস করেন তাদের জন্য শরতে ঘুরে বেড়ানোর জায়গা হিসেবে বেশ উত্তম । তো আর দেরি না করে ঘুরে আসুন।

 

শরতে ঘুরে বেড়ানোর জায়গা গুলো নিয়ে লিখেছেন ইসরাত জাহান স্বর্ণা

 

আরও পড়ুন: সিলেটে ঘুরতে যাওয়ার জায়গা : দারুণ সুন্দর পাঁচটি স্থান

আরও পড়ুন: কাশফুল দেখতে যে পাঁচ জেলায় ঘুরতে যেতে পারেন

travelTravel bangladeshকাশফুলঘোরাঘুরিশরতশরতে ঘুরে বেড়ানোর জায়গাশরৎ