মাছের চিপস বানিয়ে মাসে লাখ টাকা কামাচ্ছেন নাজমিন আক্তার

করোনার শুরুর দিকে অনলাইনে ব্যবসা শুরু করেন অনেকেই। লাভও করেন। সে ভাবনায় থেকে ২০২০ সালে উদ্যোক্তা নাজমিন আক্তার অনলাইনে মেয়েদের রূপচর্চার ব্যবসায় শুরু করেন। অনলাইনে ব্যবসার জন্য ‘পার্লকি কন্যা’ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম চালু করেন। সে সময় রূপচর্চার সামগ্রী বিক্রি করে দুই মাসে ১০ হাজার টাকা মুনাফা করেন।

একসময় শখের বশে ব্যবসা করার পরিকল্পনা করেন। সে সময় বাবার কাছ থেকে দুটো কবুতরও কিনে ছিলেন। তবে এই শখের কবুতর বাসায় থাকার কারণে তার মা খুব সময় তাদের রাখড়য় ব্যয় করেন। তাই এই ফল দিয়ে আসাও নাজমিন পাল্টে ফেলায় তিনি। যারপরই ব্যবসাটা সময়িক দুরাগাহে চলে ফেরি দেয়। তাই কাঁচামালের অভাবে এই পণ্য তৈরি বন্ধ হয়ে যায়।

পরপরে দুটো ব্যবসা বন্ধ করে দিয়ে হয় নাজমিন আক্তারের। এরপর কবুতররাজার থাকেন বড় বোনকে গিয়ে হাতে ধরেন। এরপরই ব্যবসার ধারণা দেন। একপর্যায়ে একটিতে মাছ দিয়ে শুক্কির প্রায় ও একটি আড়াই শ গ্রিক দিয়ে কাঁচামাল কেন দেন। এরপরই ব্যবসার ধারণা দেয়। এরপরই মাছের শুক্কি বিক্রির ব্যাপারে আগ্রহ দেখেন নাজমিন। একপর্যায়ে তিনি মাছের শুক্কি বিক্রির ব্যাপারে আগ্রহ দেখান। কিন্তু কাঁচামালের সমস্যা রয়ে যায়। তখন নাজমিন ইন্টারনেটে ও ইউটিউবে নতুন ব্যবসার ধারণা খুঁজতে থাকেন। সেখানে থেকেই মাছের চিপস আবিষ্কারের ধারণা পান তিনি। চিপসগুলো অত্যন্ত সুস্বাদু ও পুষ্টিকরও বটে। একপর্যায়ে ব্যবসা শুরু করেন।

২০২৪ সালে মাছের চিপস তৈরির পরিকল্পনা করেন নাজমিন আক্তার। প্রায় ছয় মাস ধরে নিজের বাসায় মাছ দিয়ে চিপস তৈরির চেষ্টা করেন। স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে পরামর্শও নেন তিনি। এরপর তিনি টুনা, পাঙ্গাশ, পোয়া মাছের চিপস তৈরি করেন। এক কেজি চিপস বিক্রি করেন দুই থেকে আড়াই হাজার টাকায়। চিপসের গ্রাহকের নাম পরিবর্তন করে রাখা।

মাছ শুকিয়ে উৎপাদিত নাজমিন আক্তার। ছবি: নাজমিন সৌজন্যে

এই চিপস দিয়ে বাংলাদেশের চিপস খাওয়ার ধারণা পাল্টে। একদিকে পুষ্টির চাহিদাও পূরণ হয়। অন্যদিকে এই চিপস অনেকে বিদেশেই রপ্তানি করার কথা বলে। তবে আমি আগে দেশের চাহিদা মেটাতে চাই। পরে রপ্তানি নিয়ে ভাবব।

নাজমিন আক্তার, উদ্যোক্তা, পার্লকি কন্যা

‘ফিশো চিপস’

নাজমিন আক্তার বলেন, এই চিপস দিয়ে বাংলাদেশের চিপস খাওয়ার ধারণা পাল্টে। একদিকে পুষ্টির চাহিদাও পূরণ হয়। আমাকে এই চিপস অনেকে বিদেশে রপ্তানি করার কথা বলে। তবে আমি আগে দেশের চাহিদা মেটাতে চাই। পরে রপ্তানি নিয়ে ভাবব। আমি এখন মাছের চিপস আরও পরিপাটিভাবে উৎপাদন দেখতে চাই।

প্রতি মাসে ৩০০ কেজি মাছের চিপস বিক্রি করেন। সব খরচ বাদ দিয়ে মাসে লাখ টাকার বেশি মুনাফা থাকে নাজমিন আক্তার। তার প্রতিষ্ঠান কাজ করছে সাতটি পরিবার। সবাই একত্রে ৩৫ জন নারী-পুরুষ। তিনি মাছ দিয়ে চিপস তৈরি করে স্বাবলম্বী। মৎস্য মন্ত্রক তাকে উদ্যোক্তা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। মৎস্য সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর পুরস্কার পান তিনি। ২০২৪ সালের ইয়েলে গণমাধ্যম পুরস্কারের মাধ্যমে সেরা উদ্যোক্তা হিসেবে ‘নির্ভয়া’ সম্মাননা দেওয়া হয়েছে। তিনি দেশ-বিদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার নিজস্ব অভিজ্ঞতা দিয়ে নিজেকে আরও উন্নত করতে চান।

Agricultural tipsকৃষিচিপস