Site icon Mati News

আঙুর ফলের রাজ্য

যত দূর চোখের দৃষ্টি যায় শুধু আঙুর ফলের বাগান! পাহাড়-সমতল যেদিকেই তাকান নানা বর্ণের নানা স্বাদের আঙুর ফল দেখতে পাবেন। এ যেন এক আঙুর ফলের রাজ্য। ব্যক্তিগত থেকে শুরু করে বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান জাপানের ইয়ামানাসি জেলায় এ ফলের চাষ করে আসছে। জাপান সরকারের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, দেশের ৫০ ভাগ আঙুর ফল এই ইয়ামাসিতে উৎপাদন হয়। সারা বছর আঙুর ফল পাওয়া গেলেও জুলাই থেকে নভেম্বর মাস হলো এ ফলের মূল মৌসুম। এ সময়টাতে বাগান মালিকেরা আঙুর ফল তুলতে খুব ব্যস্ত সময় পার করে থাকেন। প্রতিদিন এ জেলার হাজার হাজার টন আঙুর চলে যাচ্ছে আন্তর্জাতিকমানের বাণিজ্যিক জুস ফ্যাক্টরি ও বিভিন্ন নামীদামি ওয়াইন ফ্যাক্টরিতে। এ ছাড়া সারা দেশের সাধারণ বাজার বা সুপারশপে যাচ্ছে।নানা বর্ণের আর নানা স্বাদের আঙুর ফলনানা স্বাদের আঙুর ফল খেতে প্রতিদিন অসংখ্য পর্যটক আসেন এই ইয়ামানাসি জেলায়। এ জন্য ইয়ামানাসি জেলা পর্যটন কর্তৃপক্ষ নানা সেবামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করে। এখানে যে শুধু আঙুর ফলের বাগান তা নয়। এ জেলায় আরও দুটি ফলের ব্যাপক চাষ হয়। একটি হচ্ছে মুমু বা পিচ ফল। অন্যটি হচ্ছে নাশি বা নাশপাতি ফল। ফলের জন্য বিখ্যাত এ জেলাটি একবার ঘুরে না দেখলে বিশ্বাসই করতে পারবেন না, কী পরিমাণ ফল উৎপাদন হচ্ছে এখানে।

নানা বর্ণের আর নানা স্বাদের আঙুর ফলতবে একটা বিষয় আমার কাছে খুব খারাপ লেগেছে, সেটি হলো অপচয়। আঙুর, পিচ বা নাশপাতি যে ফলই হোক না কেন, অনেক বাগান রয়েছে এসব ফল কখনই সংগ্রহ করা হয় না। হয়তো বাগান রেখে তারা দেশ বা বিদেশে নিজের কাজে ব্যস্ত তাই সংগ্রহ করে না। ফলগুলো পেকে পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আবার অনেক বাগানের ফলন একটু কম হয়েছে তাই পুরো বাগানের ফল আর সংগ্রহ করেনি। এ ছাড়া যেসব বাগান থেকে ফল সংগ্রহ করা হয়েছে সেগুলোতেও কিছু ফল রেখে দেওয়া হয়েছে যা আর কখনই সংগ্রহ করা হবে না। এভাবে নষ্ট হচ্ছে অসংখ্য ফল-ফলাদি। এ ছাড়া ফল যদি কখনো পেকে মাটিতে পড়ে সেই ফল জাপানিরা কখনই সংগ্রহ করে না।

নানা বর্ণের আর নানা স্বাদের আঙুর ফলযা হোক, আপনি বেড়াতে চাইলে আসতে পারেন। সত্যি দেখার মতো একটা জেলা জাপানের ইয়ামানাসি। চারদিকে সাজানো-গোছানো পাহাড় আর পর্বতমালা। সবকিছুই যেন নিজের মতো করে প্রযুক্তি দিয়ে সাজিয়ে নিয়েছে জাপান। টোকিও থেকে বাসে বা ট্রেনে প্রায় ১৩০ কিলোমিটার পথ। কখনো পাহাড় কখনো পর্বতের নিচ দিয়ে আবার কখনো পাহাড়ের ভাজে ভাজে বিশাল বিশাল রাস্তা। জাপানে গ্রাম আর শহর সব একই রকম। একই সুযোগ-সুবিধা। হোটেল-মোটেলের কোনো অভাব নেই। গাড়ির দেশে রাস্তারও কোনো অভাব নেই। এত সাজানো গোছানো যে দেখলে অবাক হওয়া ছাড়া উপায় নেই। কত শত বছরে এসব তৈরি করেছে, কে জানে! আসলে জাপানে যা দেখি তাতেই অবাক হই। এর পেছনে অবশ্য রয়েছে তাদের সততা-আন্তরিকতা আর কঠোর পরিশ্রম।

Exit mobile version