আমের নামগুলো এমন অদ্ভুত হল কেন, জানেন?

গ্রীষ্মের দুঃসহ গরম, দরদর ঘাম, অস্বাভাবিক লু— সব কিছুর পরেও এ ঋতুর জন্য আমজনতার অপেক্ষার অন্যতম কারণ আম। ফজলি থেকে ল্যাংড়া, গোলাপখাস থেকে হিমসাগর— বাংলার এই বিপুল আমসাম্রাজ্য বহু শতক ধরে বয়ে আনছে এর আভিজাত্য। যেমন গন্ধ, তেমনই তার স্বাদ। কিন্তু জানেন কি, প্রত্যেক আমের নামকরণের নেপথ্যে ঠিক কী ইতিহাস লুকিয়ে আছে?

 

ফজলি: ১৮০০ সালে মালদহ জেলার কালেক্টর রাজভেনশ এই আমের নামকরণ করেন ‘ফজলি’। কথিত, ফজলি বিবি নামক এক প্রৌঢ়া বাস করতেন স্বাধীন সুলতানদের ধ্বংসপ্রাপ্ত গৌড়ের একটি প্রাচীন কুঠিতে। তাঁর বাড়ির উঠোনেই ছিল একটি আমগাছ। ফজলি এই গাছটির খুব যত্ন নিতেন। এলাকার ফকির বা সন্ন্যাসীরা সেই আমের ভাগ পেতেন। কালেক্টর রাজভেনশ একবার ফজলি বিবির কুঠিরের কাছে শিবির স্থাপন করেন। তাঁর আগমনের খবর পেয়ে ফজলি বিবি সেই আম নিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন। রাজভেনশ সেই আম খেয়ে খুবই তৃপ্ত হন। জানতে চান, সেই নামের নাম। কিন্তু ইংরেজি না বুঝে শুধু ‘নেম’ শুনেই নিজের নাম বলে দেন ফজলি বিবি। সেই থেকেই এই আমের নাম হয় ‘ফজলি’।

লক্ষ্মণভোগ ও গোপালভোগ: ইংরেজবাজারের চণ্ডীপুরের বাসিন্দা লক্ষ্মণ একটি আম গাছ রোপণ করেন। স্বাদে-গন্ধে সেই আম ছিল তুলনারহিত। লক্ষ্মণ চাষির নাম থেকেই লক্ষ্মণভোগ আমের উৎপত্তি। ইংরেজবাজারে নরহাট্টার গোপাল চাষির নামে আবার নাম হয় গোপালভোগের।
গুটি ও আশ্বিনা: চেহারায় ছো়ট এক প্রকারের আম খেয়ে সেই আঁটি নিজের বাগানে পুঁতেছিলেন মালদহের এক দরিদ্র কৃষক। সেই আঁটি থেকেই জন্ম নিয়েছিল আরেক আমগাছ। কাঁচা অবস্থায় টক। কিন্তু পাকলে খুব মিষ্টি। আঁটি বা গুটি থেকে গাছটি জন্মায় বলে আমের নামও হয়ে যায় ‘গুটি’। এ দিকে আশ্বিন মাসে পাকে যে আম তাকে ‘আশ্বিনা’ বলে চেনে বাংলা।