ক্যান্সার স্ক্রিনিং অত্যন্ত জরুরি
ডা. মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন, সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, ক্যান্সার ইপিডেমিওলজি বিভাগ, জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল
একজন সুস্থ ব্যক্তির মধ্যে ক্যান্সারের লক্ষণ হয়তো এখনো প্রকাশ পায়নি, কিন্তু তার আদৌ ক্যান্সার রয়েছে কি না বা হতে পারে কি না—এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা যেতে পারে। একেই বলে ক্যান্সার নির্ণয়ের পরীক্ষা বা ক্যান্সার স্ক্রিনিং। এটি খুব জরুরি এ জন্য যে আগে থেকেই স্ক্রিনিং করা হলে এবং প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার ধরা পড়লে চিকিৎসা অনেকটা সহজ হয়ে যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, উন্নয়নশীল দেশে স্তন ক্যান্সার, জরায়ুমুখের ক্যান্সার, মুখগহ্বরের ক্যান্সারের আশঙ্কা বেশি থাকে। তাই এগুলোর ক্ষেত্রে স্ক্রিনিং করা উচিত।
নির্ণয়পদ্ধতি
নিজে নিজে সতর্ক হয়ে, রক্ত পরীক্ষা, বায়োপসি, এফএনএসি, টিউমার মার্কার প্রভৃতির সাহায্যে ক্যান্সার নির্ণয় করা যায়। কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা যেমন—
মুখগহ্বরের ক্যান্সার স্ক্রিনিং : সাধারণত তিনটি বিষয় জানা থাকলেই মুখগহ্বরের ক্যান্সার নির্ণয় করা যায়। এক, মুখগহ্বরের ঝিল্লিতে লাল লাল ছোপ পড়েছে কি না। দুই, সাদা খসখসে আস্তরের মতো পড়েছে কি না এবং তিন, ঝিল্লির নিচের দিকে ঘা হয়েছে কি না।
জরায়ুমুখের ক্যান্সার স্ক্রিনিং : এ ক্ষেত্রে পেপটেস্ট পরীক্ষা করা হয়। রোগীকে শুইয়ে স্পেকুলাম দিয়ে জরায়ুর মুখটি একটু দেখা হয়। একটি স্পেচুলা (আইসক্রিমের চামচের মতো এক ধরনের জিনিস) দিয়ে জরায়ুতে ঘুরিয়ে কিছু রস নিয়ে আসা হয়। এই রস মাইক্রোস্কোপের মধ্যে পরীক্ষা করে দেখা হয়, ক্যান্সারকোষ আছে কি না। এটি আদর্শ পদ্ধতি হলেও কিছুটা ব্যয়বহুল।
আরেকটি পদ্ধতি বেশ প্রচলিত, যার নাম ভায়া (ভিজ্যুয়াল ইন্সপেকশন বাই এসিডিক এসিড)। সপস্টিক (কাঠির মাথায় তুলা লাগানো এক ধরনের পরীক্ষণযন্ত্র) দিয়ে পরীক্ষাটি করা হয়। এসিডিক এসিডে সপস্টিক ভেজানো হয়। জরায়ুর মুখ খুলে সপস্টিক স্পর্শ করা হয়। যদি রঙের পরিবর্তন হয়, তাহলে ভায়া পজিটিভ এবং পরিবর্তন না হলে ভায়া নেগেটিভ। ভায়া পজিটিভ মানেই ক্যান্সার রয়েছে, তা-ও নিশ্চিত করে বলা যায় না। ভায়া নেগেটিভ মানেই ক্যান্সারের আশঙ্কা থেকে মুক্ত, সেটিও নয়।
স্তন ক্যান্সার স্ক্রিনিং : নারীরা নিজেই নিজের স্তন ক্যান্সার পরীক্ষা করতে পারেন অথবা স্বাস্থ্যকর্মী বা চিকিৎসককে দিয়েও করানো যায়। এই পরীক্ষাটি গোসলের সময়, আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে, বিছানায় শুয়ে বা বিভিন্ন সময়ে নিজেই করা যায়।
এ জন্য প্রথমে খেয়াল করতে হবে, স্তনের চারদিকে, বগলের ভেতরে বা আশপাশের কোনো স্থান ফুলে উঠেছে কি না কিংবা আলতো করে ছুঁয়ে দেখলে কোনো শক্ত চাকার মতো অনুভব হয় কি না, কোনো স্থানের বর্ণ পরিবর্তন হয়েছে কি না অথবা কোনো অংশ উষ্ণ লাগে কি না।
দুটি স্তনের মধ্যে আকারে কোনো পরিবর্তন লক্ষ করা যায় কি না। স্তনের কোনো অংশের ত্বক ভেতরের দিকে কুঁচকে আছে কি না কিংবা ঢুকে গিয়েছে কি না। স্তনের বোঁটার কোনো অংশে চুলকানি আছে অথবা র্যাশ উঠেছে কি না। বোঁটার কোনো অংশ ভেতরের দিকে ঢুকে গিয়েছে কি না। বোঁটা থেকে কোনো ধরনের তরল নির্গত হয় কি না। স্তনের কোনো অংশে ব্যথা অনুভূত হয় কি না, যেটি একই জায়গায় থাকে, কোথাও ছড়িয়ে যায় না।
প্রতি মাসে নিজ স্তনের এই পরীক্ষাগুলো করানোকে একটি অভ্যাস বানিয়ে ফেললে ভালো। এতে অস্বাভাবিক কিছু টের পাওয়া গেলে এরপর চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে মেমোগ্রাম বা আলট্রাসনোগ্রাম করানো যায়। তাতে ক্যান্সার হয়েছে ধারণা করলে এফএনএসি (ফাইন নিডল এসপিরেশন সাইটোলজি) করা যেতে পারে।
মনে রাখা উচিত, শুরুর পর্যায়ে স্ক্রিনিং করে যদি ক্যান্সারের বিষয়টি ধরা পড়ে, তাহলে এই রোগে মৃত্যু এড়ানো সম্ভব হয়।
একজন সুস্থ ব্যক্তির মধ্যে ক্যান্সারের লক্ষণ হয়তো এখনো প্রকাশ পায়নি, কিন্তু তার আদৌ ক্যান্সার রয়েছে কি না বা হতে পারে কি না—এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা যেতে পারে। একেই বলে ক্যান্সার নির্ণয়ের পরীক্ষা বা ক্যান্সার স্ক্রিনিং। এটি খুব জরুরি এ জন্য যে আগে থেকেই স্ক্রিনিং করা হলে এবং প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার ধরা পড়লে চিকিৎসা অনেকটা সহজ হয়ে যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, উন্নয়নশীল দেশে স্তন ক্যান্সার, জরায়ুমুখের ক্যান্সার, মুখগহ্বরের ক্যান্সারের আশঙ্কা বেশি থাকে। তাই এগুলোর ক্ষেত্রে স্ক্রিনিং করা উচিত।
নির্ণয়পদ্ধতি
নিজে নিজে সতর্ক হয়ে, রক্ত পরীক্ষা, বায়োপসি, এফএনএসি, টিউমার মার্কার প্রভৃতির সাহায্যে ক্যান্সার নির্ণয় করা যায়। কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা যেমন—
মুখগহ্বরের ক্যান্সার স্ক্রিনিং : সাধারণত তিনটি বিষয় জানা থাকলেই মুখগহ্বরের ক্যান্সার নির্ণয় করা যায়। এক, মুখগহ্বরের ঝিল্লিতে লাল লাল ছোপ পড়েছে কি না। দুই, সাদা খসখসে আস্তরের মতো পড়েছে কি না এবং তিন, ঝিল্লির নিচের দিকে ঘা হয়েছে কি না।
জরায়ুমুখের ক্যান্সার স্ক্রিনিং : এ ক্ষেত্রে পেপটেস্ট পরীক্ষা করা হয়। রোগীকে শুইয়ে স্পেকুলাম দিয়ে জরায়ুর মুখটি একটু দেখা হয়। একটি স্পেচুলা (আইসক্রিমের চামচের মতো এক ধরনের জিনিস) দিয়ে জরায়ুতে ঘুরিয়ে কিছু রস নিয়ে আসা হয়। এই রস মাইক্রোস্কোপের মধ্যে পরীক্ষা করে দেখা হয়, ক্যান্সারকোষ আছে কি না। এটি আদর্শ পদ্ধতি হলেও কিছুটা ব্যয়বহুল।
আরেকটি পদ্ধতি বেশ প্রচলিত, যার নাম ভায়া (ভিজ্যুয়াল ইন্সপেকশন বাই এসিডিক এসিড)। সপস্টিক (কাঠির মাথায় তুলা লাগানো এক ধরনের পরীক্ষণযন্ত্র) দিয়ে পরীক্ষাটি করা হয়। এসিডিক এসিডে সপস্টিক ভেজানো হয়। জরায়ুর মুখ খুলে সপস্টিক স্পর্শ করা হয়। যদি রঙের পরিবর্তন হয়, তাহলে ভায়া পজিটিভ এবং পরিবর্তন না হলে ভায়া নেগেটিভ। ভায়া পজিটিভ মানেই ক্যান্সার রয়েছে, তা-ও নিশ্চিত করে বলা যায় না। ভায়া নেগেটিভ মানেই ক্যান্সারের আশঙ্কা থেকে মুক্ত, সেটিও নয়।
স্তন ক্যান্সার স্ক্রিনিং : নারীরা নিজেই নিজের স্তন ক্যান্সার পরীক্ষা করতে পারেন অথবা স্বাস্থ্যকর্মী বা চিকিৎসককে দিয়েও করানো যায়। এই পরীক্ষাটি গোসলের সময়, আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে, বিছানায় শুয়ে বা বিভিন্ন সময়ে নিজেই করা যায়।
এ জন্য প্রথমে খেয়াল করতে হবে, স্তনের চারদিকে, বগলের ভেতরে বা আশপাশের কোনো স্থান ফুলে উঠেছে কি না কিংবা আলতো করে ছুঁয়ে দেখলে কোনো শক্ত চাকার মতো অনুভব হয় কি না, কোনো স্থানের বর্ণ পরিবর্তন হয়েছে কি না অথবা কোনো অংশ উষ্ণ লাগে কি না।
দুটি স্তনের মধ্যে আকারে কোনো পরিবর্তন লক্ষ করা যায় কি না। স্তনের কোনো অংশের ত্বক ভেতরের দিকে কুঁচকে আছে কি না কিংবা ঢুকে গিয়েছে কি না। স্তনের বোঁটার কোনো অংশে চুলকানি আছে অথবা র্যাশ উঠেছে কি না। বোঁটার কোনো অংশ ভেতরের দিকে ঢুকে গিয়েছে কি না। বোঁটা থেকে কোনো ধরনের তরল নির্গত হয় কি না। স্তনের কোনো অংশে ব্যথা অনুভূত হয় কি না, যেটি একই জায়গায় থাকে, কোথাও ছড়িয়ে যায় না।
প্রতি মাসে নিজ স্তনের এই পরীক্ষাগুলো করানোকে একটি অভ্যাস বানিয়ে ফেললে ভালো। এতে অস্বাভাবিক কিছু টের পাওয়া গেলে এরপর চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে মেমোগ্রাম বা আলট্রাসনোগ্রাম করানো যায়। তাতে ক্যান্সার হয়েছে ধারণা করলে এফএনএসি (ফাইন নিডল এসপিরেশন সাইটোলজি) করা যেতে পারে।
মনে রাখা উচিত, শুরুর পর্যায়ে স্ক্রিনিং করে যদি ক্যান্সারের বিষয়টি ধরা পড়ে, তাহলে এই রোগে মৃত্যু এড়ানো সম্ভব হয়।