মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আবহাওয়া (ওয়েদার) আর জলবায়ুর (ক্লাইমেট) ফারাক বুঝিয়ে দিয়ে রাতারাতি নেট জগতের তারকা বনে গেছেন ভারতের আসামের আঠারো বছরের এক তরুণী।
ট্রাম্পকে ট্যাগ করা আস্থা শর্মার ছোট্ট একটা টুইট নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের এই মাধ্যমে, হাজার হাজার লোক সেটি রি-টুইট বা লাইক করেছেন, বয়ে যাচ্ছে হাজারো মন্তব্যের বন্যাও।
ঘটনার সূত্রপাত গত বুধবার, ২১ নভেম্বর – যেদিন ওয়াশিংটন ডিসি-র তাপমাত্রা নেমে হয়েছিল হিমাঙ্কেরও ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস নিচে। পরদিনই হোয়াইট হাউস থেকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প টুইট করেন, নিষ্ঠুর আর দীর্ঘায়িত শৈত্যপ্রবাহ আগের সব রেকর্ড ভেঙে দিতে পারে। গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের কী হল?
জলবায়ু পরিবর্তনের বিপদ নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যে আদৌ উদ্বিগ্ন নন – এবং তিনি যে বিশ্ব উষ্ণায়নের তত্ত্বে মোটেও বিশ্বাস করেন না, সে কথা আগেও বহুবার বুঝিয়ে দিয়েছেন। আর সেদিনের টুইটেও ছিল তার সেই ভাবনারই প্রতিফলন।
ট্রাম্পের সেই মন্তব্য নিয়ে প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ব্যঙ্গ-বিদ্রূপের ঝড় বয়ে যেতে থাকে। হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারেননি সুদূর আসামের সদ্য হাইস্কুল পাস করা ছাত্রী আস্থা শর্মাও।
নিজের টুইটার হ্যান্ডল থেকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ট্যাগ করে আস্থা লেখেন, আপনার চেয়ে আমি চুয়ান্ন বছরের ছোট। খুব গড়পড়তা নম্বর পেয়ে সবেমাত্র স্কুল পাস করে বেরিয়েছি, কিন্তু আমিও আপনাকে বুঝিয়ে দিতে পারি ওয়েদার কিন্তু ক্লাইমেট নয়!
‘আপনি যদি জিনিসটা ভালো করে বুঝতে চান, তাহলে আমার এনসাইক্লোপিডিয়াটাও আপনাকে ধার দিতে পারি, যেটা ক্লাস টু থেকে আমার সঙ্গে আছে। ওখানে ছবি-টবি দিয়ে সবটা ভাল করে বুঝিয়ে বলা আছে। আস্থার ওই টুইট সঙ্গে সঙ্গে ‘ভাইরাল’ হয়ে যায়। বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে তাকে প্রশংসা করে টুইট করতে থাকেন অসংখ্য লোকজন।
বেলজিয়ামের একটি প্রথম সারির নিউজ পোর্টাল আস্থার টুইট নিয়ে একটি স্টোরিও করে ফেলে। মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ওই তরুণী কেমন ‘মুখের মতো জবাব’ দিয়েছেন, তারই বর্ণনা দেওয়া হয় সেখানে। সব চেয়ে বেশি মন্তব্য আসতে থাকে মি ট্রাম্পের নিজের দেশ আমেরিকা থেকেই।
ডন জোনস নামে একজন আমেরিকান লেখেন, এতক্ষণে নিশ্চয় ওয়াশিংটন ডিসি-র তাপমাত্রা কয়েক ডিগ্রি বেড়ে গেছে! কারণ ট্রাম্পকে তো টুইটের আগুনে ঝলসে ফেলেছেন আস্থা শর্মা!
বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন আবহাওয়া (ওয়েদার) হল একটা তাৎক্ষণিক বা সাময়িক প্রক্রিয়া- কিন্তু কম করে অন্তত পঁয়ত্রিশ বছরের আবহাওয়ার রেকর্ড আর গড় নিয়েই কেবল একটা জায়গার জলবায়ু (ক্লাইমেট) নিয়ে মন্তব্য করা চলে।
ভূগোলের এই অতি সাধারণ জ্ঞানটা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ওপর প্রয়োগ করেই রাতারাতি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বিখ্যাত হয়ে উঠেছেন আসামের এক অতি সাধারণ তরুণী। সূত্র: বিবিসি বাংলা