নায়িকা যখন ডিজাইনার

নায়িকা যখন ডিজাইনার

মিষ্টি জান্নাত

আমার শোরুমের বেশির ভাগ পোশাকই মুম্বাই ও কলকাতা থেকে আনা। নিজে গিয়ে ডিজাইন বলে দিই। ওরা আমার ডিজাইন অনুযায়ী তৈরি করে দেয়। আমার পরনের এই ড্রেসটি ছিল একেবারে সাধারণ। ফোর পিসের এই ড্রেসের কাপড় জর্জেটের। ভাবলাম গলায় ও সামনের পাশে বুটিক করলে দারুণ লাগবে। দর্জিকে সেভাবেই বুঝিয়ে বললাম। ১০টি ডিজাইনের ২০টি ড্রেস, প্রতিটি দুই কালারের। ডিজাইন এক হলেও বুটিকের সুতার কালার অন্য রকম। যেমন—সাদা জর্জেটের সঙ্গে বুটিক করেছি মেরুন সুতা দিয়ে। নীলের ওপর গোল্ডেন সুতা দিয়ে। ড্রেসগুলো শোরুমে তোলার তিন-চার দিনের মধ্যেই বিক্রি হয়ে গিয়েছিল।

বিক্রির সময় ক্রেতাকে বলেই দিয়েছিলাম, একেকটার দুটি করে পিস আছে, যেন কেউ মন খারাপ না করে। অনেকে আমাকে বলেছিল, দুটি হলে সমস্যা নেই, যেন ১০টা না হয়।

প্রতিটি ড্রেসের পেছনে খরচ হয়েছিল ৯ হাজার টাকা। যাতায়াত ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচের কারণে বিক্রি করেছি ১২ হাজার টাকায়।

[মিষ্টির শোরুমের নাম ‘জান্নাত এক্সপ্রেস’]

 

নীল রঙেরটা আমার

 

মিষ্টি জান্নাত, অমৃতা খান ও মারজান জেনিফা—উঠতি তিন নায়িকারই আছে পোশাকের শোরুম। নিজেরাও জড়িত ডিজাইনের সঙ্গে। কেমন পোশাক ডিজাইন করেন তাঁরা? নিজেদের ডিজাইন করা প্রিয় একটি পোশাক নিয়ে বলেছেন তাঁরা।

বিক্রি করেছি ১২ হাজার টাকায়

 

অমৃতা খান  ডিজাইনার

আফ্রিকার কয়েকটি দেশে বেড়াতে গিয়ে সেখানকার কিছু পোশাকের শোরুমে ঢু মেরেছিলাম। ওদের গাউন আমার নজর কেড়েছিল বেশি। কয়েকটি গাউন কিনে এনেছিলাম দেশে। আমার পরনের গাউনটা আফ্রিকান গাউনেরই একটি সংস্করণ। সাধারণত গাউন খুব গর্জিয়াস, নজরকাড়া, ঝলমলে হয়। আমি একটু ব্যতিক্রম করে ডিজাইন করতে চেয়েছি। গলায় আলাদা করে কাপড় জুড়ে দিয়েছি। আর সেখানে হাতের তৈরি নকশা করেছি। লিনেন ঘরানার কাপড় নিয়েছি, যেন মোটা কিংবা স্লিম যে কেউই অনায়াসে মানিয়ে নিতে পারে। হাতে কোনো কাজ রাখিনি। একেবারে সাদামাটা রাখতে চেয়েছি। বুকের কাজগুলো একটু যত্ন নিয়ে করা হয়েছে। হঠাৎ করে কেউ দেখলে মনে করবে মেশিনে করা কাজ।

মেয়েরা সব সময় চায়, সে যে ড্রেসটি পরেছে, অন্য কেউ যেন সেটা না পায়। এ কথা মাথায় রেখেই মাত্র পাঁচটি ড্রেস তৈরি করেছিলাম। নীল রঙেরটা নিজেই পরছি। কালো, গোলাপি, মেরুন আর কমলা কালারের বাকি চারটি বিক্রি হয়ে গেছে গত মাসেই।

মেয়েরা কম দামে সেরা জিনিসটা কিনতে পছন্দ করে। ব্যবসায়ী ও ডিজাইনার হিসেবে আমি সেটা শুরু থেকেই মাথায় রেখেছি। প্রতিটি ড্রেসের পেছনে খরচ হয়েছিল পাঁচ হাজার টাকা, বিক্রি করেছি সাত হাজার টাকায়।

[অমৃতার শোরুমের নাম ‘অমৃতা ফ্যাশন জোন’]

 

 

 

কেউ ঠকবে না

মারজান জেনিফা ডিজাইনার

বরাবরই সালোয়ার-কামিজ আমার পছন্দের। আমার ডিজাইন করা বেশির ভাগ ড্রেসই সালোয়ার-কামিজ। পরনের ড্রেসটা আমার সবচেয়ে প্রিয়। সাদার মধ্যে কারচুপি কাজ। শাইনি স্টোনও বসিয়েছি, যেন পার্টিতেও পরা যায়। মেয়েরা গর্জিয়াস ড্রেস বেশি পছন্দ করে, একই সঙ্গে চায় ড্রেসটা যেন আরামদায়ক হয়। সেটা মাথায় রেখেই ড্রেসটি করেছি। সঙ্গে কেউ চাইলে ব্যাগও নিতে পারে। কারণ ড্রেসের সঙ্গে ম্যাচ করে ভ্যানিটি ব্যাগেরও ডিজাইন করেছি। ব্যাগেও স্টোন ব্যবহার করেছি। আপাতত ১০টির মতো ড্রেস আছে। সাদা ছাড়াও আছে কালো, বেগুনি, গোলাপি ও হলুদ। অনলাইনে কিছু ড্রেসের ছবি দিয়েছি, দারুণ সাড়া পাচ্ছি। আশা করছি, দু-এক সপ্তাহের মধ্যে সব বিক্রি হয়ে যাবে।

আমি একজন অভিনেত্রী। ক্যামেরার সামনে কোন পোশাক পরলে ভালো লাগে তা বেশ জানি। এখনকার কোনো অনুষ্ঠান মানেই ছবি তোলার হিড়িক। সে কথা মাথায় রেখেই ড্রেসটি করা। প্রতিটিতে খরচ পড়েছে সাত হাজার টাকা, বিক্রি করছি ৯ হাজারে। আমার বিশ্বাস, এই দামে কিনে কেউ ঠকবে না।

[মারজানের শোরুমের নাম ‘দ্য ফ্যাশন লাউঞ্জ বাই মারজান জেনিফা’]

https://www.youtube.com/watch?v=AoO_iZhlnGs&fbclid=IwAR3YHQ3alDWe7F8HJuHn_RQG0g5HYZ6qBWBydooV2_lgdFpB8WJ1sAFD14s

ডিজাইনার