নবীজি বলেছেন, হালাল রুজি অন্বেষণ করাও ফরজ ইবাদত

আমিন মুনশি : হালাল বস্তু উপার্জন করা মুসলমানদের জন্য একান্ত অপরিহার্য। খাদ্য গ্রহণের সঙ্গে ইবাদত কবুল হওয়ার বিষয়ে সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। যেমনটি নামাজ আদায়ের পূর্বে জায়গা, শরীর ও গায়ের পোশাক-পরিচ্ছেদ পবিত্র করে নিতে হয়। তা না হলে নামাজ সহিহ-শুদ্ধ হয় না। ঠিক একইভাবে হালাল-খাদ্য গ্রহণ না করলে ইবাদত কবুল হয় না। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘অন্যান্য ফরজের মতো হালালরুজি অন্বেষণ করাও একটি ফরজ ইবাদত।’ (সুনানে কবির: ৬/১১৬৯৫)

খাদ্য গ্রহণ দ্বারা শুধু ক্ষুধা নিবারণ হয় না। মুমিন ব্যক্তির খাদ্য গ্রহণও একটি ইবাদত। এরূপ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অনেক নেক আমল রয়েছে, যা পালন করলে আমলনামায় নেকি যোগ হয়। এ প্রসঙ্গে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মানুষ! জমিনে যা রয়েছে তা থেকে হালাল পবিত্র বস্তু আহার কর এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চয় সে তোমাদের জন্য প্রকাশ্যে শত্রু।’ (সূরা আল বাকারা: ১৬৮)

তাছাড়া হালালখাবার মানুষের শরীর ও মন সুস্থ রাখে। হালাল খেলে শরীরে অসুখ-বিসুখ হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। হালালখাদ্য অন্তরে প্রশান্তি আনে। ইবাদত করার জন্য মনের মধ্যে প্রফুল্লতা আসে। হালালবস্তু খেয়ে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বললে আল্লাহ খুশি হয়ে রিজিক বাড়িয়ে দেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ! আহার করো, আমি তোমাদের যে হালাল রিজিক দিয়েছি তা থেকে এবং আল্লাহর শোকর করো, যদি তোমরা তারই ইবাদত করো।’ (সূরা বাকারা: ১৭২) অবশ্য হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন- ‘মানবজাতির কাছে এমন এক সময় আসবে, যখন মানুষ রুজি-রোজগারের ব্যাপারে হালাল-হারামের কোনো বিচার-বিবেচনা করবে না।’ (সহিহ বোখারি: ৭০১৯)

হালালরিজিকের প্রতি যাদের আগ্রহ নেই তাদের ব্যাপারে হজরত জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে গোশত হারাম খাদ্য দ্বারা গঠিত তা জান্নাতে প্রবেশ করবে না। হারাম খাদ্য দ্বারা গঠিত দেহের জন্যে জাহান্নামের আগুনই উত্তম।’ (শরহে মিশকাতুল: ৫/২৭৭২)