সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার রাজীবপুর ইউনিয়নের মাইজহাটি গ্রামে। আজ মঙ্গলবার ধর্ষকের বোন ও দুই ভগ্নিপতি আটক করে থানায় এনে তাদের ফোনে কৌশলে অভিযুক্ত ধর্ষককে আটক করা হয়। এ ঘটনায় চারজনকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা হয়েছে।
নির্যাতনের শিকার ছাত্রী জানান, তিনি নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার লেঙ্গুরা ইউনিয়নের একটি গ্রামের বাসিন্দা। রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার একটি কওমী মাদরাসায় পড়ালেখা করেন। চার বছর আগে মোবাইল ফোনে পরিচয় ঘটে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার রাজীবপুর ইউনিয়নের মাইজহাটি গ্রামের মো. মারফত আলীর ছেলে মো. শামীম মিয়ার সাথে। শামীম একটি কওমী মাদরাসা থেকে দাওরায়ে হাদিস বিষয়ে পরীক্ষা দিয়েছেন। সম্পর্ক গভীর হলে তারা দুজন বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ান।
জানা গেছে, দুই সপ্তাহ আগে শামীম তাকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে গাজীপুরের একটি হোটেলে নিয়ে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ করেন এবং ধর্ষণের দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করে রাখেন। এক পর্যায়ে তাকে বিয়ের কথা বললে এ নিয়ে বেশী বাড়াবাড়ি করলে মোবাইলে ধারন করা দৃশ্য ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মোবাইল বন্ধ করে লাপাত্তা হয়ে যান। এ অবস্থায় কোনো উপায় না পেয়ে মেয়েটি সোমবার রাতে প্রতারক প্রেমিকের গ্রামের বাড়ি গিয়ে হাজির হয়। সেখানে রাত বাড়লেও কেউ তার খোঁজখবর নেয়নি। এক পর্যায়ে তাকে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যেতে বিভিন্ন ধরনের কৌশল অবলম্বন করে ব্যর্থ হয়। পরে প্রেমিকের বোন ও দুই ভগ্নিপতি মিলে তার বোরকা খুলে কাছে থাকা নগদ টাকা ও স্বর্ণলঙ্কার রেখে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। পরে তিনি রাতেই থানায় গিয়ে লিখিতভাবে জানান।
এ ঘটনায় পুলিশ মাইজহাটি গ্রামে গিয়ে মারধরের ঘটনার সত্যতা পেয়ে শামীমের বোন মনোয়রা, ভগ্নিপতি আবদুল কদ্দুছ ও রমজান আলীকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে বোনের মোবাইল ফোনে কৌশল খাটিয়ে শামীমকেও থানায় আটক করে।
থানায় থাকা ছাত্রীটি জানান, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার সর্বস্ব কেড়ে নেওয়ার পর শামীম তাকে বিয়ে করতে অস্বীকার করছে। এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে ঈশ্বরগঞ্জ থানায় শামীমের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন। তাকে মারধর করার জন্য অন্য তিনজনকে ওই মামলায় অভিযেুক্ত করেছেন।
অভিযুক্ত শামীম ওই ছাত্রীর সাথে সম্পর্কের কথা স্বীকার করলেও ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে মামলা না করলে তিনি তাকে (ছাত্রী) বিয়ে করতে রাজী আছেন বলে জানান।