Cover Story বাবা বিক্রি করল সন্তান মা পাগলপ্রায় By abc on Apr 02, 2019 বিক্রি হওয়া শিশুর (বাঁয়ে) সঙ্গে তার বড় ভাইগত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার ঘটনা। বিলকিস বেগম (৩৫) তাঁর পাঁচ মাসের সন্তান ‘ইয়াছিন’কে কোলে নিয়ে বসেছিলেন ঘরে। এমন সময় একটি মাইক্রোবাস আসে তাঁদের বাড়ির সামনে।বলা নেই কওয়া নেই, মাইক্রো থেকে টপাটপ কয়েকজন লোক নেমে এসে বিলকিসের কোল থেকে জোরপূর্বক ছিনিয়ে নিয়ে যায় তাঁর বুকের ধন ইয়াসিনকে।ঘটনাটি ঘটে কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার জাফরগঞ্জ ইউনিয়নের বারুর গ্রামের পূর্বপাড়া মুন্সী বাড়িতে।উপজেলার বারুর গ্রামের মনু মিয়ার ছেলে দরিদ্র মো. সেলিম মিয়া (৪৫) অভাবের তাড়নায় তাঁর ইয়াছিন নামে এক ছেলে সন্তানকে স্থানীয় এক দালালের মাধ্যমে দুই লাখ ৫৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল সোমবার সকালে সরেজমিনে ওই বাড়িতে গিয়ে ঘটনার সত্যতা জানা যায়। এ ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রীর কথা বলার সময় পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পাওয়া যায়।সন্তানহারা বিলকিস ঘটনা বর্ণনা দিতে গিয়ে বুকফাটা কান্নারুদ্ধ কণ্ঠে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমি অনেক কাঁকুতি-মিনতি করেও সন্তানকে আগলে রাখতে পারিনি।’সন্তান কেড়ে নিতে আসা লোকগুলোর সঙ্গে তাঁর স্বামী সেলিম মিয়াও (৪৫) ছিলেন। বাচ্চাকে হাত ছাড়া করতে না চাইলে সেলিম তাঁকে বেধড়ক মারপিট করে বাচ্চা কেড়ে নিয়ে ওই লোকগুলোর হাতে তুলে দেন। বিলকিসের চোখের সামনে দিয়ে তারা বাচ্চা নিয়ে চলে যায় মাইক্রোতে করে।বিলকিস বলেন, ‘আমার স্বামী চরবাকর গ্রামের বলিমন্দের বাড়ির নূরুল ইসলামের মাধ্যমে দুই লাখ ৫৫ হাজার টাকায় আমার সন্তানকে বিক্রি করে দিয়েছে। সন্তানকে কোথায় বিক্রি করেছে জানি না। আমার স্বামী জুয়াড়ি, জুয়া খেলে এখন প্রায় সর্বস্বান্ত। এখন টাকার জন্য আমার সন্তান বিক্রি করেছে।’বিলকিস বলেন, ‘যেকোনো কিছুর বিনিময়ে হলেও আমি আমার সন্তানকে ফিরে চাই।’ তবে বিলকিসের স্বামী সেলিম মিয়া (৪৫) বলছেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, ‘অভাবের সংসার, স্ত্রী, পাঁচ ছেলে ও এক কন্যা নিয়ে সংসারের ভরণপোষণে খুবই কষ্ট হচ্ছে। চরবাকর গ্রামের ব্যবসায়ী নূরুল ইসলাম আমার সন্তানকে কুমিল্লায় এক নিঃসন্তান পরিবারের কাছে দত্তক হিসেবে দিয়েছেন। তবে আমি কোনো টাকা-পয়সা নিয়ে সন্তানকে বিক্রি করিনি, দত্তক হিসেবে দিয়েছি।’সেলিম আরো বলেন, ‘আমার সন্তান ভালো থাকবে, লেখাপড়া শিখবে, মানুষের মতো মানুষ হবে। এ জন্যই দত্তক দিয়েছি।’তবে সেলিমের কথা অসংলগ্ন। ছেলেকে কোথায় কার কাছে দিয়েছেন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘নূরুল ইসলাম আমার সন্তানকে কোথায়, কার কাছে দিয়েছে তার ঠিকানা আমার জানা নেই।’তাঁর এমন কথার সূত্রে তাঁর বিষয়ে খোঁজখবরে জানা যায়, স্থানীয়ভাবে জুয়াড়ি হিসেবে তাঁর বদনাম আছে। এদিকে ‘বাচ্চা বিক্রয়ে মধ্যস্থতাকারী’ দালাল হিসেবে অভিযুক্ত চরবাকর গ্রামের ব্যবসায়ী নূরুল ইসলাম বাচ্চাটিকে কোথায় কার কাছে দিয়েছেন জানতে চাইলে জানান, বাচ্চাটি বিক্রয় করা হয়নি, অভাবের কারণে পরিবারের সম্মতি নিয়েই কুমিল্লার এক নিঃসন্তান শিক্ষক পরিবারের কাছে দত্তক দিয়েছি।’নূরুল ইসলামের দাবি, ওই পরিবারের পরিচয় তিনি জানেন না, এমনকি তাদের কারো নামধামও জানা নেই। তবে একটি সেল ফোন নম্বর দিয়ে বলেন, পরিচয় বলতে এটাই আছে।পরে ওই সেল ফোনে যোগাযোগ করে জানা যায়, ভিন্ন কথা। পরিচয় জানতে চাইলে ফোনের অন্যপ্রান্তের ব্যক্তি প্রথমে বলেন, ‘আমি এ বিষয় কিছুই জানি না। আমি কোনো বাচ্চা নেইনি, যারা নিয়েছে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।’কথোপকথনের একপর্যায়ে তাঁর নাম শামিম আহমেদ, পেশায় শিক্ষক বলে জানান। এ সময় তিনি আরো জানান যে তাঁর নিজের কোনো সন্তান নেই। একটি সন্তানের খোঁজে আছেন অনেক দিন।তিনি বলেন, ‘নূরুল ইসলাম ওই শিশুটির সন্ধান দেন এবং বাচ্চাটিকে নিতে হলে দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে বলে জানান। এত টাকা দিয়ে বাচ্চা কেনার সামর্থ্য আমার ছিল না। পরে আরো একটি ধনাঢ্য নিঃসন্তান পরিবার একটি বাচ্চা অনেক দিন ধরেই খুঁজছে বলে জানা যায়। ওই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করি। ওরা গত ১৬ মার্চ বারুর গ্রামে এসে বাচ্চা দেখে পছন্দ করে এবং কথাবার্তা শেষে গত ২৯ মার্চ ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পের মাধ্যমে কিছু শর্তসাপেক্ষে (শর্তগুলোর মধ্যে এ বাচ্চা আর কখনো দাবি করতে পারবে না, তার খোঁজখবরও নিতে পারবে না উল্লেখ করা ছিল)। এরপর তিনজন সাক্ষীর স্বাক্ষর নিয়ে দুই লাখ ৫৫ হাজার টাকা পরিশোধ করে বাচ্চা নিয়ে যায়।তবে শামিম আহমেদ নামধারী ওই ব্যক্তি আরো দাবি করেন, তিনি ওই পরিবারের পরিচয় দিতে অপারগ।পরে কথাবার্তার একপর্যায়ে বাচ্চা গ্রহীতার নাম মঞ্জু, চট্টগ্রামে অডিটর হিসেবে কর্মরত আছেন বলে জানান। তিনি আরো বলেন, বাচ্চাটি ভালো থাকবে, ওই পরিবার বিশাল সম্পদের মালিক। ভবিষ্যতে সব কিছুরই মালিক হবে ওই শিশুটি।তাঁরা আরো জানান, বারুর এবং পোনরা গ্রামে বড় বড় জুয়ার আসর বসে। সেলিমও পাক্কা জুয়াড়ি। আয়ের বেশির ভাগ টাকাই জুয়া খেলে শেষ করে দেন। এখন জুয়ায় হেরে অনেক টাকা ঋণী হয়ে গেছেন। আজ কয়েক দিন হয় বাচ্চা বিক্রির টাকা দিয়ে একটি মুদি দোকানি হিসেবে ব্যবসা চালু করেছেন। স্থানীয় লোকজন বলে, দত্তকের নামে বাচ্চা বিক্রয় করার বিষয়টি সন্দেহজনক। কারণ শুনেছি বাচ্চার অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিক্রি হয়। দত্তক নিলে প্রমাণ থাকে।এ ব্যাপারে দেবীদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রবীন্দ্র চাকমার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি, তবে এখন যেহেতু বিষয়টি শুনেছি সে ক্ষেত্রে তদন্তসাপেক্ষে বাচ্চা উদ্ধারসহ আইনগত ব্যবস্থা নেব।কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট সৈয়দ নূরুর রহমান এ প্রসঙ্গে কালের কণ্ঠকে বলেন, বাংলাদেশের মুসলিম আইনে দত্তক নেওয়ার কোনো বিধান নেই। যেহেতু বাচ্চা নিয়ে ব্যবসা করা হয় তাই আইন এর অনুমোদন দেয় না। Post Views: 1,242 Related posts: আপেলের খোসায় কী উপাকার জানা আছো তো? দীপিকা এশিয়ার সবচেয়ে আবেদনময়ী জেনে নিন আজওয়া খেজুরের ৫৩টি গুণ , শেয়ার করুন এখনই বছরে মারা যাবে ৭ লক্ষ মানুষ শুধু ব্রয়লার মুরগী খাওয়ার কারণে গ্রিনল্যান্ডের বরফ গলতে শুরু করেছে , ঝুঁকিতে বাংলাদেশ ঐশী কি মিস ওয়ার্ল্ড হতে পারবেন? চুরি রুখতে চোর নিয়োগের বিজ্ঞাপন, আয় ঘণ্টায় ৫০০০ টাকা! আবেদনময়ী অভিনেত্রী খুনের দায়ে গ্রেফতার Three Travel destinations : Dubai to Ras Al Khaimah যাদের বিয়ে করা বৈধ, যাদের সঙ্গে বিয়ে অবৈধ যে কারণে টাখনুর নিচে কাপড় পরা নিষিদ্ধ মিল্ক ভিটা, আড়ং, প্রাণসহ ১১ ব্র্যান্ডের দুধে মাত্রাতিরিক্ত সিসা লেখালেখিতে ফ্রিল্যান্সিং: কোন ধরনের লেখা লিখবেন? বাজাও মনের দুয়ার খুলে রবি ঠাকুরের যত মজার ঘটনা Health benefits of Psyllium husk you should know Microgreen will meet the demand for green, there is also a handful of income Beauty trend 2021 : will remain same as 2020 Is it good to drink hot milk for sleep? মরিচের পাতা কোঁকড়ানো রোগ ও তার প্রতিকার