বিলাসী জীবন তবু ঋণ শোধ করেন না তাঁরা

থাকেন শতকোটি টাকার আলিশান বাড়িতে, চড়েন কোটি টাকার বিলাসবহুল গাড়িতে। নিজ ও পরিবারের নামে করেছেন স্কুল-কলেজ, মাদরাসা-মসজিদ। নামে-বেনামে কিনেছেন জমি, নতুন নতুন শিল্প-কারখানা গড়ছেন। সমাজে প্রভাব-প্রতিপত্তিও বিপুল। নিয়মিত যান বিদেশে। আবার বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গড়েছেন সেকেন্ড হোম। পাচার করছেন অর্থ। সবই ঠিক চলছে। শুধু ব্যাংক ঋণের টাকা ফেরত দেওয়াতে যত অনীহা। গতকাল শনিবার জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল যে ৩০০ ঋণ খেলাপির তালিকা প্রকাশ করেছেন তাঁদের অনেকের জীবনযাত্রার চিত্র এটি। আবার ঋণের টাকা মেরে সপরিবারে বিদেশে পালিয়েছেন এমন উদাহরণও আছে। এঁদের কাছে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পাওনা বর্তমানে প্রায় ৫১ হাজার কোটি টাকা, যা প্রায় দুটি পদ্মা সেতু নির্মাণ ব্যয়ের সমান।

অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংক খাতের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, দেশে বর্তমানে ঋণ নিয়ে ফেরত না দেওয়ার সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় এই প্রবণতা আরো বেড়েছে। বিশেষ করে বড় ও প্রভাবশালী ঋণগ্রহীতাদের মধ্যে এটা দেখা যাচ্ছে; যাঁরা ব্যাংকের অসাধু কর্মকর্তা ও পরিচালকদের সঙ্গে যোগসাজশ, অনিয়ম, জাল-জালিয়াতি ও রাজনৈতিক প্রভাবসহ বিভিন্ন কৌশলে ঋণের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা বের করে নিয়েছেন। কিন্তু ঋণের টাকা ফেরত দিচ্ছেন না।

জানতে চাইলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘তালিকা দিলেই তো হবে না, এদের কাছ থেকে ঋণ আদায়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে সেটাই দেখার বিষয়। যে তালিকা করা হয়েছে সেটার যথার্থতা কতটুকু? বড় ঋণখেলাপি যারা ঋণ পুনঃ তফসিল ও পুনর্গঠন সুবিধা নিয়েছে বা যেসব ঋণ অবলোপন হয়েছে তাদের এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি বলে আমার ধারণা। তাই এদেরও তালিকায় আনতে হবে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ  বলেন, ‘বড় কিছু গ্রাহকের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে দেশের ব্যাংক ও আর্থিক খাত। এঁরা বিভিন্ন উপায়ে ঋণের নামে প্রচুর টাকা বের করে নিয়েছেন এবং নানা কাজে লাগিয়েছেন। কিন্তু ফেরত দিচ্ছেন না। ঋণ ফেরত দেওয়ার আন্তরিকতাও তাঁদের মধ্যে দেখা যায় না। এসব ঋণের বিপরীতে যে জামানত নেওয়া হয় তাও পর্যাপ্ত নয়। ফলে মামলা করেও ঋণ আদায় করা সম্ভব হয় না।’

সাউথইস্ট ব্যাংকের এমডি এম কামাল হোসেন বলেন, ‘রাজনৈতিক চাপেও অনেক ঋণ গেছে।’ তাঁর মতে, ‘ঋণখেলাপিরা যে টাকায় জমি, বাড়ি, গাড়ি ও ফ্ল্যাট কিনেছেন সেটা তো সাধারণ মানুষের আমানতের টাকা। এটা খেয়ানত করার অধিকার কারো নেই।’

বর্তমান সরকারের অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর খেলাপি ঋণ নতুন করে আর বাড়বে না বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন আ হ ম মুস্তফা কামাল। কিন্তু খেলাপি ঋণ হ্রাসে আদায়ের পদক্ষেপ জোরদারের পরিবর্তে ঋণখেলাপিদের আরো সুবিধা ও ছাড়ের পথ তৈরি করে দিয়েছেন তিনি। সম্প্রতি ঋণ শ্রেণীকরণ ও পুনঃ তফসিল উভয় নীতিমালাতেই ঋণখেলাপিদের বড় ধরনের ছাড় দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বিশেষ পুনঃ তফসিল নীতিমালার আওতায় মাত্র ২ শতাংশ ডাউনপেমেন্ট ও ৯ শতাংশ সরল সুদ নির্ধারণসহ ১০ বছর মেয়াদে ঋণ নিয়মিত করার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। যদিও ঋণ পুনঃ তফসিলের বিশেষ নীতিমালার ওপর আগামী ২৪ জুন পর্যন্ত স্থগিতাদেশ দিয়েছেন আদালত। এই স্থগিতাদেশ উঠে গেলে সার্কুলারের সুবিধাভোগী হবেন এসব খেলাপিরাই। এতে কাগজে-কলমে খেলাপি ঋণ কমলেও ব্যাংকিং খাত ঝুঁকিতে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন বিশিষ্টজনরা।

গতকাল সংসদে উপস্থাপিত তথ্যানুযায়ী, ২০১৮ সালের ডিসেম্বর শেষে দেশে কার্যরত সকল তফসিলি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণখেলাপি প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা এক লাখ ৭০ হাজার ৩৯০টি। এসব প্রতিষ্ঠানে খেলাপি হওয়া অর্থের পরিমাণ এক লাখ দুই হাজার ৩১৫ কোটি টাকা। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের মার্চ শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক লাখ ১০ হাজার ৮৭৩ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ১১.৮৭ শতাংশ। এর বাইরে গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত অবলোপনের মাধ্যমে ব্যাংকের হিসাবের খাতা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে নিট ৪০ হাজার ১০১ কোটি টাকা। এ ঋণ যোগ করলে দেশের ব্যাংকিং খাতের খেলাপি ঋণের প্রকৃত পরিমাণ দাঁড়ায় এক লাখ ৫০ হাজার ৯৭৪ কোটি টাকা।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) সাবেক মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধুরী  বলেন, ‘তালিকা দিলেই হবে না, কারা ইচ্ছাকৃত খেলাপি আর কারা অনিচ্ছাকৃত খেলাপি সেটা চিহ্নিত করতে হবে। বিশ্বের অনেক দেশেই এগুলো চিহ্নিত করে তালিকা প্রকাশ করা হয়। কাজেই যারা ইচ্ছা করে ঋণের টাকা ফেরত দিচ্ছে না তাদের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থান নেওয়া উচিত। খেলাপিদের কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া ঠিক হবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

কয়েক ডজন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার ঋণখেলাপি চট্টগ্রামের এস এ গ্রুপের কর্ণধার মো. শাহাবুদ্দিন আলম। তিনি ঋণের টাকা ফেরত না দিয়ে নামে-বেনামে বিভিন্ন জায়গায় অঢেল সম্পদ গড়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তার পরও বিভিন্ন সময় প্রভাব খাটিয়ে একের পর এক সুবিধা নিয়েছেন। একই ঋণ পুনঃ তফসিল করিয়েছেন বারবার। সব শেষ নিয়েছেন পুনর্গঠন সুবিধাও। কিন্তু ঋণের টাকা আর ফেরত দেননি। অর্থমন্ত্রীর সংসদে উপস্থাপিত শীর্ষ ঋণখেলাপির তালিকায় তাঁর মালিকানাধীন সামান্নাজ সুপার অয়েল এখন ১ নম্বরে। সামান্নাজ সুপার অয়েলের কাছে এক ডজনেরও বেশি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ রয়েছে এক হাজার ৪৯ কোটি টাকা। এস এ গ্রুপের আরেক প্রতিষ্ঠান এস এ অয়েল রিফাইনারি রয়েছে শীর্ষ তালিকার ৮ নম্বরে। এ প্রতিষ্ঠানটির কাছে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ৭০৭ কোটি টাকা। ১২৭ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ নিয়ে তালিকার ১২৩ নম্বরে আছে তাঁদের আরেক প্রতিষ্ঠান সামান্নাজ কনডেন্স মিল্ক। সূত্র বলছে, এই গ্রাহক খেলাপি হলেও হাইকোর্টে রিট করে দীর্ঘদিন মার্কেন্টাইল ব্যাংকে পরিচালক পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। গত বছরের ১৭ অক্টোবর তাঁকে প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এ্যাননটেক্স গ্রুপের কর্ণধার ইউনুস বাদলের বিস্ময়কর ‘উত্থানের’ গল্প সাম্প্রতিক সময়ে বেশ আলোচিত। জুভেনিল সোয়েটার নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ব্যবসায় নেমে তিনি এখন ২২টি প্রতিষ্ঠানের মালিক। একের পর এক প্রতিষ্ঠান খুলে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংক থেকে ছয় বছরে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা বের করে নিয়েছেন তিনি। ওই টাকায় বিভিন্ন স্থানে জমি কিনেছেন। স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেছেন। ঢাকার উত্তরা ও টঙ্গীতে করেছেন বাড়ি, মোহাম্মদপুরে কিনেছেন ফ্ল্যাট। নামি-দামি মডেলের গাড়িতে যাতায়াত করেন তিনি। এ গ্রুপের বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের নাম উঠে এসেছে শীর্ষ খেলাপির তালিকায়। এর মধ্যে গ্যালাক্সি সোয়েটার অ্যান্ড ইয়ার্নের নাম উঠে এসেছে তালিকার ২ নম্বরে। প্রতিষ্ঠানটির কাছে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকের পাওনা এক হাজার ১২০ কোটি টাকা; যার ৯৮৪ কোটি টাকাই এখন খেলাপি। পাশাপাশি ইউনুস বাদলের স্বার্থসংশ্লিষ্ট সুপ্রভ কম্পোজিট নিট, সুপ্রভ স্পিনিং মিলস, সিমরান কম্পোজিট, সুপ্রভ রুটার স্পিনিং মিলস, জ্যাকার্ড নিট টেক্স, এমএইচ গোল্ডেন জুট মিলস ও সুপ্রভ মেলান্জ স্পিনিং রয়েছে তালিকার ৯, ১১, ১৩, ২১, ২৫, ৫৪ ও ৮০ নম্বরে।

ভুয়া রপ্তানি কাগজে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংক থেকে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া পুরান ঢাকার সহোদর এম এ কাদের ও এম আজিজও আলোচিত ঋণখেলাপি। তাঁদের বিরুদ্ধে ঋণের অর্থ পাচার ছাড়াও গুলশান ও বনানীতে বিলাসবহুল বাড়ি, জমি ও সিনেমা তৈরির অভিযোগ রয়েছে। তাঁদের মালিকানাধীন পাঁচ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রিমেক্স ফুটওয়্যার, রূপালী কম্পোজিট লেদার, ক্রিসেন্ট লেদার প্রডাক্টস ও ক্রিসেন্ট ট্যানারিজের নাম রয়েছে তালিকার ৩, ৬, ৭ ও ৮৩ নম্বরে। এর মধ্যে রিমেক্স ফুটওয়্যার ৯৭৬ কোটি, রূপালী কম্পোজিট ৭৯৮ কোটি, ক্রিসেন্ট লেদার ৭৭৬ কোটি ও ক্রিসেন্ট ট্যানারিজের খেলাপি ১৬৩ কোটি টাকা। প্রায় এক হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে করা মামলায় গত ৩০ জানুয়ারি ক্রিসেন্ট লেদারের চেয়ারম্যান এম এ কাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ঋণখেলাপি হিসেবে বহুল আলোচিত চট্টগ্রামের আরেক ব্যবসায়ী হারুনুর রশিদ। তিনি খেলাপি হলেও বিলাসী জীবনযাপন করেন; চড়েন দামি গাড়িতে। রাজধানীর ধানমণ্ডি ও চট্টগ্রামে তাঁর বিলাসবহুল বাড়ি রয়েছে। এ ছাড়া নামে-বেনামে বিভিন্ন জায়গায় অনেক জমি থাকারও অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। তাঁর মালিকানাধীন পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের তিনটি রুবিয়া ভেজিটেবল অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ ৫০১ কোটি, এইচ স্টিল রি-রোলিং মিলস ২০৯ কোটি ও চট্টগ্রাম ইস্পাত ১১৭ কোটি টাকার ঋণ নিয়ে শীর্ষ তালিকার ১৮, ৫১ ও ১৪০ নম্বরে রয়েছে।

দেশের একসময়ের সেরা তথ্য-প্রযুক্তি আমদানিকারক ও পরিবেশক প্রতিষ্ঠান কম্পিউটার সোর্স লি. ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য ঋণ নিয়ে তা অন্য খাতে ব্যবহার করেছে। ঋণের বড় অংশ দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় জমি কিনেছে। ঋণের একটা অংশ সিঙ্গাপুরে পাচারেরও অভিযোগ রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি শীর্ষ ঋণখেলাপির তালিকায় ১২ নম্বরে এবং ১৬টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে ৫৭৫ কোটি টাকা খেলাপি।

শীর্ষ ঋণখেলাপির তালিকার চার নম্বরে রয়েছে আসবাবপত্র খাতের অটবির সহযোগী প্রতিষ্ঠান কোয়ান্টাম পাওয়ার সিস্টেমস। এ গ্রুপের কর্ণধাররা বিলাসী জীবন যাপন করলেও ব্যাংকের টাকা ফেরত দেন না। এ প্রতিষ্ঠানের কাছে দেশের ১৫টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ রয়েছে প্রায় ৮২৮ কোটি টাকা।

ব্যাংক খাতে স্মরণকালের ভয়াবহ ঋণ কেলেঙ্কারির হোতা হলমার্ক গ্রুপ সোনালী ব্যাংকের শেরাটন হোটেল শাখা থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে। এ পর্যন্ত বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় তাদের কাছ থেকে মাত্র সাড়ে ৪০০ কোটি টাকার মতো আদায় করতে সক্ষম হয়েছে সোনালী ব্যাংক। এই গ্রুপের চারটি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স স্পিনিং মিলস, আনোয়ার স্পিনিং মিলস, হলমার্ক ফ্যাশন ও ওয়ালমার্ট ফ্যাশন শীর্ষ খেলাপির তালিকায় ১৪, ২০, ৩১ ও ৭৭ নম্বরে রয়েছে। এ ছাড়া সোনালী ব্যাংকের অন্য দুই গ্রাহক প্রতিষ্ঠান ফেয়ার ট্রেড ফ্যাব্রিকস ও টি অ্যান্ড ব্রাদার্স নিট কম্পোজিটও রয়েছে তালিকার ৩৪ ও ৫৫ নম্বরে। এই ছয় প্রতিষ্ঠানের কাছে সোনালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ প্রায় দুই হাজার ৩০৩ কোটি টাকা।

এ বিষয়ে সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, ‘হলমার্ক থেকে অর্থ আদায়ে সোনালী ব্যাংক আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এগোচ্ছে। এরই মধ্যে ১৬টি মামলার রায় ব্যাংকের অনুকূলে এসেছে।’

আরেক নামসর্বস্ব গ্রুপ বিসমিল্লাহ কয়েকটি বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে প্রায় এক হাজার ১০০ কোটি টাকা নেয়; যার সবটাই খেলাপি। এ গ্রুপের প্রতিষ্ঠান বিসমিল্লাহ টাওয়াল রয়েছে তালিকার ৪৮ নম্বরে। এ প্রতিষ্ঠানের কাছে প্রাইম ও শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ রয়েছে ২৪৪ কোটি টাকা। গ্রুপটির কর্ণধার খাজা সোলেমান আনোয়ার ঋণের টাকা ফেরত না দিয়েই সপরিবারে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন।

ব্যাংকিং খাতে আরেক আলোচিত ঘটনা বেসিক ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারি। বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চু চেয়ারম্যান থাকাকালে অনিয়মের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা ঋণ দেন। এ ব্যাংকের নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান ‘আমাদের বাড়ি’ রয়েছে তালিকার ৭৬ নম্বরে। ব্যাংকটির কাছে এ প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ১৭৩ কোটি টাকা।

সূত্র: কালের কণ্ঠ