বুলগেরিয়ায় ৫ হাজার ডলারে কেনা যায় স্বর্ণের দাঁতওয়ালী মনের মতো বউ

শফিকুল ইসলাম জীবনঃ ভাবছি একবার বুলগেরিয়ায় যাবো। ইচ্ছে আছে সেখানকার ঐতিহাসিক বউ বাজার ঘুরে দেখবো। ইচ্ছে যতই করুক, ওই বাজার থেকে বউ কেনার সাধ্য কিন্তু আপনার হবে না।কারন ভিন দেশী কারও কাছে ওই বাজারে বউ বিক্রির সুযোগ নেই।

দক্ষিন পূর্ব ইউরোপের বালকান পেনিনসুলার স্বাধীন এবং সার্বভৌম এই দেশটির পশ্চিমে আছে কৃঞ্চ সাগর, উত্তরে রোমানিয়া এবং সার্বিয়া, পশ্চিমে মাসেডোনিয়া এবং দক্ষিনে গ্রীস ও সাইপ্রাস বা তুর্কির একটি অংশ।

দেশটির দক্ষিন পূর্ব অঞ্চলের স্টারা জাগোরা নামক স্থানটিতে প্রতি বছর বসন্ত এবং গ্রীষ্মকালীন ধর্মীয় দিবসগুলোয় আয়োজন করা হয় জমজমাট হাট। সেই হাটে হাকডাক করে চলে বউ বিক্রি। অর্থডক্স খ্রিস্টান সম্প্রদায় ভুক্ত কালেদঝী গোষ্ঠির ওই হাটে দরকষাকষি করে বেচাকেনা হয় মনের মত বউ। দাম পড়ে তিন থেকে পাঁচ হাজার মার্কিন ডলার। দামটা অবশ্য নির্ভর করে চেহারা কত সুন্দর-তার ওপর।

তারা পেশায় মুলত তাম্রকার। ওই সম্প্রদায়ের মেয়েরা নিজেদের সৌন্দর্য্য বাড়াতে অনেক সময় পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত একাধিক দাঁত উত্তোলন করে সেখানে বসিয়ে নেন স্বর্ণের দাঁত। বয়স পনেরো হলেই তাদের স্কুল কলেজ যায় চুকে। পড়ালেখা বন্ধ করে ওই সময় তাদের হাটে তোলার প্রস্তুতি চলে। সেখানে দুর দুরান্ত থেকে ছুটে আসেন পাত্র এবং সঙ্গে তাদের বাবা মায়েরা। হাটে ছেলেমেয়েরা একে অপরকে ঘিরে নাচ গান করেন। জীবনে প্রথমবারের মতো বিপরীত লিঙ্গের কারও সাথে একটু খোঁশ গল্পে মেতে ওঠার সুযোগও সৃষ্টি হয় ওই হাটে। কারন বিয়ের আগে সেখানে বিপরীত লিঙ্গের কারও সাথে দেখা সাক্ষাত করা সম্পূর্ন ধর্মীয় রীতি এবং সমাজ বিরোধী। আবার সেখানে বিয়ের একমাত্র উপায়ও হচ্ছে এই বাজার। সম্প্রদায়ের বাইরে অন্য কোন ছেলের কাছে বউ বিক্রি করা হয় না।

ছেলেমেয়েরা নেচে গেয়ে কথা বলার সময় বাবা মায়েরা আড়াল থেকে লক্ষ্য করতে থাকেন, মতি গতি কোন দিকে গড়াচ্ছে। বাবা মা যদি বুঝতে পারেন কোন ছেলে তাদের মেয়েকে পছন্দ করে ফেলেছে, তখুনি তারা ছেলে বা তাদের বাবা মায়ের সঙ্গে দরকষাকষি শুরু করে দেন। আর এভাবেই কয়েক প্রজন্ম ধরে বুলগেরিয়ার ওই অঞ্চলটিতে প্রতি বছর কমপক্ষে চারবার আয়োজন করা হয় বউ বাজারের।

বুলগেরিয়ায়