মাছের বিকল্প আছে কি? পড়ে দেখুন।

মাছের বিকল্প আছে কি? পড়ে দেখুন।

শরীরের প্রস্টেট নামে একটি অঙ্গটি আছে, যা ৫০ বছর বয়স পর্যন্ত আমাদের শরীরের নানা কাজে সাহায্য করে। কিন্তু যখন শরীরের বয়স বাড়তে শুরু করে, প্রস্টেট কাজ করা বন্ধ করে দেয়। তার সাথে সাথে ফুলতে শুরু করে জায়গাটি। কোনো কোনো সময়  প্রস্টেটে ক্যান্সার সেলে জন্ম নেওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

 

মাছের মধ্যে আছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড

দ্যা আমেরিকান জার্নাল অব ক্লিনিকাল নিউট্রিশনে প্রকাশিত হয়ছে যে,  নিয়মিত মাছ খেলে শরীর বিশেষ কিছু উপাদানের মাত্রা বেড়ে যেতে শুরু করে, যা প্রস্টেটকে এত মাত্রায় সুরক্ষা প্রদান করে যে সেখানে ক্যান্সার সেল জন্ম নেওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৬৩ শতাংশ কমে যায়। নিয়মিত মাছ খেলে যে শুধুমাত্র প্রস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে, এমন নয়। সেই সঙ্গে মেলে আরও অনেক উপকারিতাও।  মাছের মধ্যে থাকা ওমেগা থ্রি ফ্য়াটি অ্যাসিড এবং প্রোটিন, মাথা থেকে পা পর্যন্ত শরীরের প্রতিটি কণাকে চাঙ্গা করে তুলতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে একাধিক মরণ বেধীকে দূরে রাখতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়। যেমন…

 

১. দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটায়:

আমরা সবাই জানি যে, মাছ খেলে চোখের ক্ষমতা বাড়ে? কথাটি সঠিক। মাছের মধ্যে উপস্থিত ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড দেহের ভেতরে প্রবেশ করার পর এমন কাজ করে যে, ধীরে ধীরে চোখের ক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। তাই বেশি করে রুই-কাতল, ভেটকির মতো মাছও কিনতে পারেন। কারণ মধ্যে প্রচুর পরিমাণে তেল থাকে।

২. ত্বক এবং চুলের সৌন্দর্য বাড়ে:

মাছের মধ্যে উপস্থিত ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড আমাদের শরীরের ভেতর যাওয়া মাত্র ত্বক এবং চুলের গোড়ায় পুষ্টির যোগান এতটাই বাড়িয়ে দেয় যে, তার প্রভাবে স্কিন টোনের যেমন উন্নতি ঘটতে শুরু করে, সেই সঙ্গে চুলের সৌন্দর্যও বৃদ্ধি পায়। আবার ওমাগ থ্রি ফ্য়াটি অ্যাসিড সোরিয়াসিসের মতো ত্বকের রোগের চিকিৎসাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই যারা এমন রোগ ভুগছেন, তারা রোজের ডায়েট থেকে মাছকে বাদ দেওয়ার কথা কখনও ভাববেন না ।

 

৩. হার্টকে চাঙ্গা রাখে:

যুক্তরাষ্ট্রের হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের  একটি রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে যে, যারা নিয়মিত মাছ খেয়ে থাকেন, তাদের হার্ট ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ৫০ শতাংশ কমে যায়। কারণ মাছের শরীরে থাকা ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড রক্তে উপস্থিত থ্রি ফ্যাটির মাত্রাকে কমাতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হার্টের কোনও ধরনের ক্ষতি সম্ভাবনা একেবারেই থাকে না।

 

৪. স্পার্ম কাউন্ট অনেক বাড়িয়ে দেয়:

সম্প্রতি ১৮৮ জন পুরুষের উপর একটি গবেষণা চালানো হয়েছিল। তাতে দেখা গেছে যারা নিয়মিত মাছে খান, তাদের স্পার্ম কাউন্ট এতটাই ভাল হয়ে যায় যে বাচ্চা নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যাই হয় না।  বর্তমানে আমাদের উত্তাল জীবনযাত্রার কারণে অনেকেরই স্পার্ম কাউন্ট কমতে শুরু করে, যে কারণে বাবা হাওয়ার ক্ষেত্রে নানা সমস্যার সম্মুখিন হতে হয়।  তাই এমন দিকগুলো বিবেচনা করে নিয়মিত মাছ খেতে পারেন।

 

৫. মানসিক অবসাদ কমায়:

বর্তমান সময়ে নানা কারণে মানসিক অবসাদে আক্রান্তের সংখ্যাটা যেন ক্রমাগত বাড়ছে, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই কম বয়সি। এমন পরিস্থিতিতে মাছ খাওয়া প্রয়োজন আরও বেড়েছে। কারণ স্ট্রেস এবং মানসিক অবসাদ কমাতে মাছের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে এক্ষেত্রেও ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

স্বাস্থ্য