মাড়ি থেকে রক্ত ঝরে ?
দাঁতের মাড়ি থেকে রক্ত ঝরে এমন সমস্যা অনেকেরই আছে। বিশেষ করে দাঁত ব্রাশ করার সময় খোঁচা লেগে বা শক্ত কোনো ফল অথবা অন্য কিছু খাওয়ার সময় চাপ লেগে মাড়ি থেকে রক্ত পড়ে। এই বিষয়টিকে আমরা অনেকেই তেমন গুরুত্ব দিতে চাই না। কিন্তু দন্ত চিকিৎসকদের মতে, মাড়ি থেকে রক্ত পড়ার বিষয়টি কখনওই অবহেলা করা উচিত নয়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জিনিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কয়েকটি ঘরোয়া টোটকা কাজে লাগিয়ে সহজেই এই সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে যা করতে হবে-
* মাড়ি থেকে রক্ত পড়া বন্ধের জন্য উষ্ণ পানির সঙ্গে সামান্য লবন মিশিয়ে এই মিশ্রণ দিয়ে দিনে অন্তত ৩-৪ বার কুলকুচি করুন। এই ঘরোয়া পদ্ধতিতে খুব সহজে সাময়িকভাবে দাঁতের ব্যথা এবং মাড়ির রক্তক্ষরণের সমস্যায় উপকার মিলতে পারে।
* লেবুর রসের সঙ্গে সামান্য লবন মিশিয়ে নিন। এবার এই মিশ্রণ আঙুলের মাথায় লাগিয়ে তা দিয়ে দাঁত ও মাড়িতে মিনিট তিনেক মালিশ করুন। এর পর সামান্য উষ্ণ জলে কুলকুচি করে মুখ ধুয়ে ফেলুন। নিমেষেই দাঁতের ব্যথা কমে যাবে বা মাড়ির রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়ে যাবে।
* লবঙ্গের তেল মাড়ির ব্যথা কমানোর পাশাপাশি মাড়ি থেকে রক্ত পড়া বন্ধ করতে সাহায্য করে। এ ছাড়াও একটি বা দুটি লবঙ্গ মুখে রাখলেও ভাল ফল পাওয়া যায়। লবঙ্গের তেল মাড়ির রক্তক্ষরণ বন্ধ করার সঙ্গে সঙ্গে মুখের দুর্গন্ধ কাটাতেও সাহায্য করে।
* মাড়ির রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে গ্রিন টি অত্যন্ত কার্যকর। গ্রিন টি ভেজানো পানি দিয়ে কিছুক্ষণ কুলকুচি করুন। এটি মাড়িকে জীবাণুমুক্ত করতে সাহায্য করে। তা ছাড়া এর সাহায্যে মাড়ির রক্তক্ষরণও দ্রুত বন্ধ হয়ে যায়।
* সামান্য উষ্ণ পানিতে বেকিং সোডা মিশিয়ে পেস্টের মতো তৈরি করে নিন। এবার এই পেস্ট দিয়ে দাঁত মাজুন। বেকিং সোডা মুখের ভেতরের অ্যাসিড নিষ্ক্রিয় করে দাঁতের ক্ষয় রোধ করে। একই সঙ্গে মাড়ির একাধিক সমস্যাও নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
* মধুর অ্যান্টিসেপ্টিক ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান দাঁতের মাড়ি থেকে রক্ত পড়ার সমস্যা সমাধান করতে সক্ষম। দাঁত মাজার পর আঙুলের ডগায় একটু মধু নিয়ে তা দিয়ে মাড়িতে হালকা মালিশ করতে পারলে উপকার পাওয়া যায়। তবে খেয়াল রাখবেন, মধু যেন দাঁতে না লাগে। এতে দাঁতে ক্যাভিটি বা ব্যাকটেরিয়াজনিত পচন হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
* মাড়ির রক্তক্ষরণ বেশি হলে এক টুকরো তুলা বা গজ বরফ ঠাণ্ডা পানিতে ভিজিয়ে মাড়ির ক্ষত জায়গায় চেপে ধরলে প্রাথমিকভাবে মাড়ি থেকে রক্তপড়া বন্ধ হবে।
তবে মাড়ি থেকে বারবার অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ এবং সেই সঙ্গে অন্যান্য সমস্যা দেখা দিলে (যেমন, অস্বাভাবিক হারে ওজন হ্রাস, জ্বর বা শরীরের অন্যান্য জায়গা থেকেও রক্তক্ষরণ হলে) অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।