আলোচিত এই ঘটনার আগে ও পরে মিন্নির সঙ্গে নয়ন বন্ডের কথোপকথনসহ মেসেজ আদান-প্রদানের তথ্য উদ্ধার করে পুলিশ। বরগুনা জেলা পুলিশের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সদস্যের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যে বলা হয়, মিন্নি একটি সিম ব্যবহার করতেন যেটি নয়ন বন্ডের দেওয়া। সিমটি নয়ন বন্ডের মায়ের নামে রেজিস্ট্রেশন করা।
পুলিশের দাবি, রিফাত শরীফের সঙ্গে বিয়ের পরও নয়নের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে ওই সিমটি ব্যবহার করতেন মিন্নি। হত্যাকাণ্ডের দিন সকাল ৯টা ৮ মিনিটে ওই নম্বর দিয়েই নয়ন বন্ডকে কল করে ৬ সেকেন্ড কথা বলেন মিন্নি। এসময় তাদের ৪০ সেকেন্ড কথা হয়। হামলার পর বেলা ১১টা ৩১ মিনিটে নয়ন বন্ড মিন্নিকে একটি এসএমএস পাঠিয়েছিলেন। পরে রিফাত শরীফ মারা যাওয়ার পর বিকেল ৪টার কিছু সময় আগে নয়ন বন্ড মিন্নির কাছে আরেকটি এসএমএস পাঠিয়েছিলেন। পাঠানো ওই এসএমএসটিতে লেখা ছিল, ‘আমারে আমার বাপেই জন্ম দেছে।’
মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদে অংশ নেওয়া ওই পুলিশ সদস্যের বরাতে গণমাধ্যমে বলা হয়েছিল, রিমান্ডে মিন্নির কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিন্নি বলেছেন, রিফাত শরীফকে মারার পরিকল্পনার সময় মিন্নি নয়ন বন্ডকে বলেছিলেন, ‘তুমি যদি রিফাত শরীফকে মারতে পার, তাহলে বুঝব তোমারে তোমার বাপেই জন্ম দিছে।’
গত বছরের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে রিফাত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরের দিন ১২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৫-৬ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহত রিফাতের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ। এরপর ওই বছরের ১ সেপ্টেম্বর প্রাপ্তবয়স্ক ও অপ্রাপ্তবয়স্ক; দু’ভাগে বিভক্ত করে ২৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ। এতে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জন এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।
গত ১ জানুয়ারি রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত। এরপর ৮ জানুয়ারি থেকে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করেন আদালত। মোট ৭৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে এ মামলায়।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর এ মামলার দুই পক্ষের যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আসাদুজ্জামান রায়ের জন্য আজকের দিন নির্ধারণ করেন।