শ্বাস–প্রশ্বাসে সাঁ সাঁ শব্দ

ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ বা সিওপিডি একটি দীর্ঘমেয়াদি রোগ, যাতে ফুসফুসের নিশ্বাস ছাড়ার ক্ষমতা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। এতে কাশি লেগেই থাকে, দম সহজেই ফুরিয়ে যায়, শ্বাস–প্রশ্বাসে সাঁ সাঁ শব্দ হয়। হাঁপানির সঙ্গে এই রোগের পার্থক্য হলো যে এটা বয়স বাড়ার পর দেখা দেয়। সাধারণত ধূমপায়ী ও পুরুষদেরই রোগটি বেশি হতে দেখা যায়। হাঁপানি যেমন কোনো অ্যালার্জি বস্তু, ধুলাবালুতে বাড়ে, অন্য সময় ভালো থাকে; এই রোগটি তেমন নয়। এই রোগের উপসর্গগুলো ক্রমেই বাড়তে থাকে। দেশের চল্লিশোর্ধ্ব মানুষের ২১ শতাংশই সিওপিডি রোগে ভুগছেন। বর্তমানে এ রোগীর সংখ্যা প্রায় ৬০ লাখ। এ রোগের প্রধান কারণ ধূমপান। তবে পরিবেশের নানা দূষণ ও ধোঁয়াও দায়ী।

শ্বাস নেওয়ার পর বাতাস ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শ্বাসনালি পথে পর্যন্ত ফুসফুসের ক্ষুদ্রতম থলি বা অ্যালভিওলিতে পৌঁছায়। ধূমপান ও অন্যান্য দূষণের ফলে এই ক্ষুদ্র শ্বাসনালিগুলোতে প্রদাহ হয়। এগুলোর দেয়ালের স্থিতিস্থাপকতা কমে গিয়ে পুরু হয়ে যায়। ফলে বাতাস বা অক্সিজেন ঠিকভাবে পৌঁছাতে পারে না। ধীরে ধীরে উপসর্গ দেখা দেয় ও ক্রমেই বাড়তে থাকে। প্রথম দিকে সহনীয় হলেও পরে সামান্য কাজকর্মেও রোগী হাঁপিয়ে উঠতে থাকে। বছরে কয়েকবার সংক্রমণ হওয়া বা কফ বেড়ে যাওয়া অস্বাভাবিক নয়। এতে ফুসফুসের যে স্থায়ী ক্ষতি হয় তা আর সারানো যায় না, কেবল উপসর্গ উপশমের জন্য চিকিৎসা দেওয়া হয়। তাই প্রতিরোধই উত্তম পন্থা।

: ক্রনিক ব্রংকাইটিস বা সিওপিডি রোধের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হলো ধূমপান ছেড়ে দেওয়া। ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার কোনো সময় নেই, যেকোনো মুহূর্তেই এই সিদ্ধান্ত নিলে উপকার অবশ্যম্ভাবী।

: গবেষণায় দেখা গেছে, দৈনিক খাবারের মোট  পাঁচ ভাগ ফলমূল ও সবুজ শাকসবজি থাকলে প্রদাহ কমে ও সিওপিডি রোধ করা যায়।

: কয়লা, জীবাশ্ম, কাঠ ইত্যাদি পোড়ানোর ধোঁয়া সরাসরি বেশি গ্রহণ করা খারাপ। লাকড়ির চুলায় রান্না করা এড়িয়ে চলাই ভালো। যাঁরা কারখানায় কাজ করেন, তাঁদের জন্য বিশেষ প্রতিরোধক ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।