চোখ খুলে কাঁদলেন সুবীর নন্দী
উন্নত চিকিৎসার জন্য তিন দিন আগে সিঙ্গাপুর নেওয়া হয় একুশে পদকপ্রাপ্ত বরেণ্য সংগীতশিল্পী সুবীর নন্দীকে। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের এমআইসিইউতে চিকিৎসাধীন সুবীর নন্দী আজ শুক্রবার চোখ খুলেছেন। একমাত্র মেয়েকে দেখে চোখে পানি চলে আসে। সিঙ্গাপুর থেকে জানালেন মেয়ে ফাল্গুনী নন্দী।
ফাগুনী নন্দী বলেন, ‘আজ সকালে চিকিৎসকেরা আমাকে বলেছেন, বাবুর (বাবা সুবীর নন্দীকে বাবু বলেই ডাকেন) জ্বর নিয়ন্ত্রণে এসেছে। আজ এমআরআই করার কথা রয়েছে। সবার কাছে বাবুর জন্য দোয়া চাই।’
বাংলাদেশে সুবীর নন্দীর চিকিৎসার বিষয়টি সমন্বয় করেছেন জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের জাতীয় সমন্বয়ক সামন্ত লাল সেন। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করছেন তিনি। আজ দুপুরে প্রথম আলোকে বললেন, ‘ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুবীরের মস্তিষ্কের কাজ করা নিয়ে ভীষণ টেনশনে ছিলাম। শুনলাম, ব্রেন আস্তে আস্তে কাজ করছে। চোখ মেলেছেন। পরিচিতজনদের চিনতে পারছেন। কান্নাকাটি করছেন। তার মানে, সুবীরের আবেগ-অনুভূতি কাজ করছে। এসব খুব ইতিবাচক খবর।’
১৮ দিন রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন থাকার সময় ৩০ এপ্রিল সিঙ্গাপুর নেওয়া হয় সুবীর নন্দীকে। তাঁর জামাতা রাজেশ শিকদার জানান, সেদিন বিকেলেই সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে বরেণ্য এই শিল্পীর চিকিৎসাসেবা দেওয়া শুরু হয়।
আগেই জানা গেছে, বরেণ্য এই সংগীতশিল্পীকে দ্রুত সিঙ্গাপুরে নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ নিয়ে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন সামন্ত লাল সেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করা শেষে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সুবীর নন্দীর ব্যাপারে আলোচনা হয়। তিনি তাঁর চিকিৎসার সব দায়িত্ব নিয়েছেন।
সুবীর নন্দী ১২ এপ্রিল পরিবারের সবাইকে নিয়ে মৌলভীবাজারে আত্মীয়ের বাড়িতে যান। সেখানে একটি অনুষ্ঠান ছিল। ঢাকায় ফিরতে ট্রেনে ওঠার জন্য বিকেলে মৌলভীবাজার থেকে শ্রীমঙ্গলে আসেন তাঁরা। ট্রেনেই অসুস্থ হয়ে পড়েন সুবীর নন্দী। সেখানে একজন চিকিৎসক থাকায় তাঁর পরামর্শে সুবীর নন্দীকে নিয়ে পরিবারের সদস্যরা ঢাকার বিমানবন্দর স্টেশনে নেমে যান। রাত ১১টার দিকে তাঁকে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়। তাঁকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়। সুবীর নন্দী দীর্ঘদিন ধরে কিডনি ও হার্টের অসুখে ভুগছেন।