বৃষ্টি কিভাবে হয় জানো?

চতুর্থ শ্রেণির বিজ্ঞান বইতে মেঘ বৃষ্টি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। মেঘ ও বৃষ্টি কী করে হয়, বৃষ্টির ফোঁটা কিভাবে তৈরি হয়, এসব নিয়ে লিখেছেন ধ্রুব নীল।

বৃষ্টি কিভাবে হয় তা তো জানোই। ভূমিতে থাকা পানি বাষ্প হয়ে উড়ে উড়ে আকাশে গিয়ে জমাট বাঁধে, এরপর ঝরঝরিয়ে নামে বৃষ্টি হয়ে। কিন্তু এমনটা কেন ঘটে? মানে বাষ্পটা তো বেলুনের মতো উড়তে উড়তে একেবারে হারিয়ে যেতে পারতো, তাই না? এটা বুঝতে একটা ছোট্ট পরীক্ষা চালাতে পারো। প্লাস্টিকের পাত্র বা কচু পাতা হলে ভালো হয়। তাতে খুব কাছাকাছি দূরত্বে দুই ফোঁটা পানি রাখো সাবধানে। একটা ফোঁটা ছোট, আরেকটা একটু বড়। এরপর পাত্রটাকে এমনভাবে একটুখানি কাত করো, যাতে ফোঁটা দুটো একটা আরেকটাকে স্পর্শ করে। দেখবে বড় ফোঁটাটা বাগে পেলেই ছোট ফোঁটাটাকে কপাত করে গিলে ফেলছে। গেলার পর বড় ফোঁটার আকার বেড়ে যায় আরেকটুখানি।

কচু পাতার ওপর অনেকগুলো ছোট ছোট পানির ফোঁটা পড়ার পরও দেখবে একই ঘটনা ঘটছে। ছোট ছোট ফোঁটাগুলো মিলে বড় ফোঁটা বানায়। বৃষ্টির ক্ষেত্রেও তাই। বাষ্পের কণাগুলো অনেক ছোট। খালিচোখে ধোঁয়ার মতো দেখায়। আসলে ওই ধোঁয়াটা হলো ০.০০০১ থেকে ০.০০৫ সেন্টিমিটার ব্যাসের সাইজের পানির ফোঁটা।

এরা এত ছোট যে খুব সহজেই বাতাসে ভেসে থাকতে পারে। এমনকি গ্যাস-বেলুনের মতো উড়েও যেতে পারে।

উপরে উঠতে উঠতে একটা ফোঁটা আরেকটার সঙ্গে বাড়ি খায়। বাড়ি খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বড় ফোঁটা ছোট ফোঁটাগুলোকে গিলে খায়। এভাবে গিলতে গিলতে একটা ফোঁটা হয়ে যায় অনেক বড়। এত বড় যে সে আর বাতাসে ভেসে থাকতে পারে না। নিচে পড়তে থাকে।

ঠিক ধরেছো, ওটাই বৃষ্টি! কিন্তু কতটা বড় হলে ওই ফোঁটা বৃষ্টি হয়ে ঝরে? বিজ্ঞানীরা নানান মাপজোক করেছেন। গড়ে যেটা পেয়েছেন, তা হলো একটি ফোঁটা সাধারণত ০.৫ মিলিমিটার ব্যাসের হলেই সেটা ঝরে পড়ে। অনেকসময় ঝরার আগেই পানির ফোঁটা আরো বড়, প্রায় ৪ মিলিমিটার ব্যাসের হয়ে যায়। তখন পড়তে পড়তেই ওটা আবার দুই-তিনটি ফোঁটায় ভাগ হয়ে যায়।

কোন বৃষ্টিতে কেমন ফোঁটা?
বৃষ্টির ফোঁটার আকার নির্ভর করে বৃষ্টির ধরনের ওপর। গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির নামটাই বলে দেয় ফোঁটার আকার কত হবে। ইঞ্চির হিসাবে এ বৃষ্টির ফোঁটার আকার ০.০২ ইঞ্চি, মানে এক ইঞ্চির ৫০ ভাগের এক ভাগ। এ ফোঁটা পড়ে ঘণ্টায় সাড়ে চার মাইলের কিছু বেশি গতিতে। মাঝারি বৃষ্টির ক্ষেত্রে বেশিরভাগ ফোঁটার আকার হয় এক ইঞ্চির আট থেকে দশ ভাগের কাছাকাছি। আর এর গতি থাকে একটু বেশি- ঘণ্টায় ৯ থেকে ১৬ মাইল।
অন্যদিকে টিনের চালে ঝমঝমিয়ে যে ভারি বৃষ্টিটা হয়, সেটার ফোঁটাগুলোও ভীষণ পেটমোটা। ৪ থেকে ৫ মিলিমিটারও হয় একেকটা ফোঁটা। এ কারণেই বুঝি মুষলধারে বৃষ্টিতে একদম নেতিয়ে যায় কাকেরা। এ সময় বৃষ্টি পড়ার গতিও থাকে অনেক। ঘণ্টায় প্রায় ২০ মাইলের মতো! এ সময় শিলাবৃষ্টিও হয়। তখন কিন্তু সাবধান! কারণ শিলগুলো গড়ে এক ইঞ্চি আকারের হয়ে থাকে। ভারি হওয়ার কারণে পড়েও বেশ দ্রুত। ঘণ্টায় ৩০-৪০ মাইল!

নিয়মিত পড়াশোনার বিভিন্ন আলোচনা পেতে যোগ দিন এই গ্রুপে

চতুর্থ শ্রেণির বহুনির্বাচনী : বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়

পঞ্চম শ্রেণির গণিতের টিউটোরিয়াল ভিডিও