আমার বয়স ২২। বয়ফ্রেন্ড আমারই কলেজে আমার ক্লাসমেট। আমাদের প্রেম প্রায় দু’বছরের। এই সবে এক-দু’মাস হল আমরা নিয়মিত ভাবে ইন্টারকোর্স করতে শুরু করেছি। সমস্যাটা দেখা দিয়েছে তারপর থেকেই। আমার বয়ফ্রেন্ড… ওই ব্যাপারটা হওয়ার সময় প্রায় প্রতিবারই খুব ভায়োলেন্ট হয়ে ওঠে। প্রথম-প্রথম আমিও ওকে প্রশ্রয় দিতাম। কিন্তু আস্তে-আস্তে ভায়োলেন্সটা লাগামছাড়া হয়ে উঠছে। আমি পছন্দ করছি না বললেও, ও ভাবে আমি হয়তো ইচ্ছে করে ওকে আরও উসকে দেওয়ার জন্যই কাকুতি-মিনতি করছি। বারবার ওকে বারণ করি, ও-ও কথা দেয় নেক্সট টাইম নিয়ন্ত্রণে রাখবে নিজেকে। কিন্তু তারপরও বারবার একই ঘটনা হয়ে আসছে। এর মধ্যে একদিন এত জোরে আমার গলা টিপে ধরেছিল যে, দম বন্ধ এসেছিল আমার! এছাড়া চিরকালই ওর গায়ে এবং মুখে খুব গন্ধ হয়! ওকে বারবার বলে-বলে সেটা তবু একটু নিয়ন্ত্রণে এসেছে, কিন্তু এই অন্য সমস্যাটা কমবে কি কোনওদিন?
নাম ও ঠিকানা প্রকাশে অনিচ্ছুক
মন্তব্য : প্রথমেই বলি, ভায়োলেন্সের ঘটনাটা সামান্য নয়। আবার এমন ভয়ঙ্কর কিছুও নয়, যার জন্য এখনই তোমাকে তোমার বয়ফ্রেন্ডকে হারিয়ে ফেলার ভয় পেতে হবে। বিভিন্ন সময়ে বিশ্ব জুড়ে বহু মানুষের উপর সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গিয়েছে, ইন্টারকোর্সের সময় সাধারণত মেয়েরা চায়, তার পুরুষ পার্টনার তার উপর জোর খাটাক। একইভাবে পুরুষরাও উপভোগ করে, তার পার্টনারকে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে শারীরিক কষ্ট দিতে। ‘BDSM’, যার পুরো কথাটা হল Bondage, Dominance and Submission, Sadism and masochism-এর কথা শুনেছ নিশ্চয়ই? এই নিয়ে বিস্তারিত না বলে শুধু এইটুকু বলি, এই যে ইন্টারকোর্সের সময় একে অন্যকে কষ্ট দেওয়ার এই প্রাচীন প্রথা, এর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে একটা অন্য শব্দ। তা হল, নিয়ন্ত্রণ। তার অভাবে পুরো ব্যাপারটাই ঘেঁটে ঘ হওয়ার আশঙ্কা প্রবল! ঠিক যেটুকু তুমি নিতে পারছ, সেটাই আগেভাগে, ঠান্ডা মাথায় বুঝিয়ে বলো পার্টনারকে। তাতেও সে না মানলে “এই তোর ভালবাসা?” বলে সেন্টু দাও। এত করেও যদি সে না বোঝে, তা হলে কিন্তু বস, ব্রেকআপের হুমকি দেওয়া ছাড়া গতি নেই। পার্টনারের সঙ্গে ছাড়াছাড়ি চাও না জানি, কিন্তু ‘ছেড়ে দেব’ বলে ভয় দেখাতে ক্ষতি কী? আর রহি বাত দুর্গন্ধের, সেক্ষেত্রে বয়ফ্রেন্ডকে বলো নিয়মিত ডিওডোর্যান্ট, মাউথ ফ্রেশনার, মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করার অভ্যেস করতে। অন্তত তোমার সঙ্গে দেখা করার আগে তো করতে হবেই হবে! তাতেও যদি সমস্যাটা থেকেই যায়, সেক্ষেত্রে অবশ্য একবার ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে নিলেই ভাল। বয়ফ্রেন্ডের স্বাস্থ্যের জন্য তো বটেই, তোমাদের সম্পর্কের সুস্থতার জন্যও।
আমি পদার্থবিদ্যা নিয়ে স্নাতকোত্তর স্তরে লেখাপড়া করছি। লেডিস হস্টেলে থেকে পড়াশোনা করতে হয়। সম্প্রতি না চাইতেও হস্টেলেরই এক দিদির সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠতা বেড়ে গিয়েছে। শুরুটা হয়েছিল একসঙ্গে পর্নমুভি দেখতে গিয়ে। মজার ছলে সেটা দেখতে গিয়েই ও আমাকে প্রথমবার অন্যভাবে স্পর্শ করেছিল! একদিনে যেটুকু বুঝছি, ও পুরোপুরি লেসবিয়ান। সম্ভবত সেই কারণেই আজও ওর কোনও বয়ফ্রেন্ড নেই। কিন্তু আমি দু’বছর ধরে প্রেম করছি। বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে আমি ক্লোজ় হয়েছি এবং যথেষ্ট এনজয়ও করেছি প্রতিবার। ওই দিদির সঙ্গে আমার এই ঘনিষ্ঠতার কথা আমি বয়ফ্রেন্ডকে বলে উঠতে পারিনি এখনও। আমি কি তবে বাইসেক্সুয়াল? দু’জনকেই কি ঠকাচ্ছি আমি?
নাম ও ঠিকানা প্রকাশে অনিচ্ছুক
মন্তব্য : সিগমুন্ড ফ্রয়েড নামে এক বিখ্যাত ডাক্তারবাবু সেই কবেই বলে গিয়েছেন, প্রত্যেক মানুষ নাকি জন্মের সময় বাইসেক্সুয়াল হয়েই জন্মায়। ফ্রয়েড এর নাম দিয়েছিলেন ইন্নেট (Innate) বাইসেক্সুয়ালিটি। পরবর্তীকালে বেড়ে ওঠার পথে বিভিন্ন ইন্টারনাল ও এক্সটারনাল ফ্যাক্টরের প্রভাবে আমরা মোনোসেক্সুয়াল হয়ে উঠি। বিশ্বখ্যাত এই নিউরোলজিস্টের এই মতামত মেনে নিয়ে বলা যায়, অল্পবিস্তর আমরা সকলেই বাইসেক্সুয়াল। সাধারণত পুরুষ বা নারী, দু’টি সত্তার যে কোনও একটি প্রকট হয়ে ওঠে আমাদের শরীরে, অন্যটি থেকে যায় সুপ্ত অবস্থায়। এ তো গেল ডাক্তারি পরিভাষায় ব্যাপারটার ব্যাখ্যা। এবার আলো ফেলা যাক উক্ত সমস্যাটিতে। এমন ঘটনা হস্টেলে থাকা ছেলেদের মধ্যেও দেখা যায় অনেকসময়ই। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যেটা হয়, এই বয়সে শরীর নিয়ে স্বাভাবিক একটা কৌতূহল থেকে আকর্ষণ তৈরি হয় সমলিঙ্গের প্রতিও। যারা একান্তই সমকামী, তাদের কথা আলাদা। কিন্তু যারা তেমনটা নও, ইতিমধ্যেই বিপরীত লিঙ্গের একজন মানুষের সঙ্গে জড়িয়ে আছ, তারাও কেউ এমন সাময়িক সমকামী সম্পর্কে জড়িয়ে পড়লে, সাফ কথা বস, বেরিয়ে এসো! এই ধরনের গোপন সম্পর্ককে দু’নৌকোয় পা দিয়ে চলা বলা যায় না ঠিকই, কিন্তু সামান্য সময়ের শারীরিক সুখের জন্য অহেতুক অনেকখানি মানসিক অশান্তি যে বহন করতে হয়, সেকথা কিন্তু অস্বীকার করার উপায় নেই। সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড অসুখ ছড়ানোর জন্যও যে এই ধরনের সম্পর্ক উত্তম অনুঘটকের কাজ করে, সেকথাও সত্যি। অহেতুক মানসিক অশান্তি এড়াতে চাইলে, ভালয়-ভালয়, এই গোপন সম্পর্ক ডালপালা ছড়িয়ে তোমার আশপাশে জাঁকিয়ে বসার আগেই বেরিয়ে এসো। উলটোদিকের মানুষটিকে বোঝাও, এতে তোমার মন সায় দিচ্ছে না। যা হয়েছে, ভুলই হয়ে গিয়েছে। কিন্তু আর নয়।