ওড়িশার সঙ্গীতশিল্পী সোনা মহাপাত্র এবং যশরাজের নাতনি শ্বেতা পণ্ডিতের পর সঙ্গীত পরিচালক অনু মালিকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থা #মিটু অভিযোগ আনলেন আরও দুই মহিলা। এ বার তাঁর বিরুদ্ধে উঠল আরও ন্যক্কারজনক যৌন হেনস্থার অভিযোগ।
প্রথম ঘটনাটি নয়ের দশকের। মেহবুব স্টুডিয়োতে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহিলা ‘মিডডে’ পত্রিকায় অনু মালিকের বিরুদ্ধে এনেছেন ভয়াবহ অভিযোগ। তাঁর দাবি, স্টুডিয়োর মধ্যে তাঁকে একা পেয়ে চেপে ধরেছিলেন অনু মালিক। কিছু ক্ষণ পর অবশ্য তিনি নিজেই ক্ষমা চেয়ে নেন ওই মহিলার কাছে। যদিও ঘটনার এখানেই শেষ নয়। অভিযোগ, একটি সংস্থার জন্য চাঁদা আনতে গেলে ফের তাঁকে হেনস্থা করেন অনু মালিক। ওই মহিলা লিখেছেন, ‘‘আমি অনু মালিকের বাড়িতে গিয়ে কুৎসিত পরিস্থিতির মুখোমুখি হই। একটি সোফাতে আমার খুব কাছে এসে বসেছিলেন তিনি। ওঁর পরিবারের কেউ বাড়িতে নেই, এটা জানার পরেই বুঝতে পারি আমি ফাঁদে পড়ে গিয়েছি। উনি আমাকে জোর করে চেপে ধরে আমার স্কার্ট টেনে নামিয়ে দিয়েছিলেন। তার পর নিজের প্যান্টের চেন খুলে আমাকে চেপে ধরেছিলেন অনু মালিক। সৌভাগ্যবশত, সেই সময়ই দরজায় বেল বেজে ওঠে। আমি বেঁচে যাই।’’
যদিও এই ঘটনার কথা কাউকে জানানো যাবে না, তাঁকে এই হুমকি দেন অনু মালিক। এর পর তাঁকে নিজের গাড়িতে করে বাড়িতে ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাবও দেন। মহিলার অভিযোগ, ‘‘রাত সাড়ে আটটা নাগাদ একটা ফাঁকা মাঠের মধ্যে গাড়ি দাঁড় করান অনু মালিক। এর পর ফের তিনি আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন। হঠাৎ করেই নিজের প্যান্টের চেন খুলে আমার চুল ধরে নিজের কোলে টেনে নেন। বেশ কিছু ক্ষণ ধস্তাধস্তির পর স্থানীয় এক নিরাপত্তারক্ষী গাড়ির দিকে এগিয়ে আসেন। আমি তখন কোনও রকমে দরজা খুলে দৌড়ে পালাই।’’
আরও পড়ুন: ‘গান গাওয়ার পরেই অনু বললেন, আমাকে কিস কর’
অন্য এক মহিলাও যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছেন অনু মালিকের বিরুদ্ধে। তাঁর অভিযোগ, অনু মালিক তাঁকে একটি শিফন শাড়ি পড়ে স্টুডিয়োতে আসতে বলেছিলেন। স্টুডিয়োতে আসার পর অনু তাঁকে বলেন, ‘‘আপনার কোনও বয়ফ্রেন্ড নেই, আপনি খুব একা?’’ এর পরেই স্টুডিয়োর ফ্লোরে তাঁকে ঠেসে ধরেন অনু মালিক। ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন ওই মহিলা, কারণ পুরো স্টুডিয়োই ছিল সাউন্ডপ্রুফ। চিৎকার করলেও বাইরে থেকে কেউ শুনে যে বাঁচাতে এগিয়ে আসবেন সেই উপায় ছিল না। মহিলার লাগাতার আপত্তির পর অবশ্য নিজেকে সামলে নেন অনু মালিক। গম্ভীর গলায় বলেন, ‘‘আমি আমার স্ত্রী ও পরিবারের সঙ্গে খুব খুশি।’’
আরও পড়ুন: ‘যত বার ওঁর অফিসে গিয়েছি, তত বারই চুমু খাওয়ার চেষ্টা করেছেন বিপুল’
শুধু এই দুই মহিলাই নন, এর আগেও #মিটু আন্দোলনে একের পর এক যৌন হেনস্থার অভিযোগ আছড়ে পড়েছে অনু মালিকের বিরুদ্ধে। সোনা মহাপাত্রের অভিযোগ ছিল, ‘‘অনু মালিক আসলে একজন ধারাবাহিক শিকারি।’’ পণ্ডিত যশরাজের নাতনি শ্বেতার অভিযোগ, তাঁর যখন ১৫ বছর বয়স, তখন মুম্বইয়ের একটি স্টুডিয়োতে অনু মালিক তাঁকে যৌন হেনস্থা করেছিলেন। অনু শিশুদের উপর যৌন অত্যাচারে আসক্ত, এ কথা জানিয়ে টুইটারে নিজের #মিটু শেয়ার করেছেন সঙ্গীত শিল্পী শ্বেতা। সাবধান করেছিলেন তরুণ গায়িকাদেরও।